সদ্যজাত সংকর বাছুরের প্রথম ১৫-২০ দিন গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই সময় তারা নানান ধরনের রোগ ব্যধির শিকার হতে পারে। তাই সংকর বাছুর ভূমিষ্ট হওয়ার পর যেগুলি লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলি হল
১। বাচ্চা প্রসবের সময় কাউকে সামনে থাকা দরকার কারণ অনেক সময় বাচ্চা মাতৃজঠরে ঠিক জায়গায় অবস্থান না করলে প্রসবের পথে আটকে যেতে পারে।
২। জন্মের সঙ্গে সঙ্গে বাছুরের নাক, মুখ পরিস্কার শুকনো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে। এতে বাছুর স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গাইগরু নিজেই জিভ দিয়ে চেটে এ কাজ সম্পন্ন করে।
জন্মাবার পর বাছুরের নাক মুখ থেকে শ্লেষ্মা পরিষ্কার করার পর দেখতে হবে বাছুরটি শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া শুরু করেছে কিনা। শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া শুরু না হলে কৃত্রিম উপায় শ্বাস চালু করা দরকার। এটা দুভাবে করা যায়। যেমন – (ক) বুকের দুপাশে বিচালি দিয়ে ভাল করে মালিশ করা দরকার, (খ) পিছে দুটি পা ধরে বাছুরটিকে শূন্যে ঝুলিয়ে মাথা বাকিয়ে জিভ টেনে বের করে দেওয়া।
১। গাইগরুটিকে জিভ দিয়ে বাছুরটিকে চাটতে দিতে হবে। তাতে বাছুরের রক্ত চলাচল বা সঞ্চালন কাজও ত্বরান্বিত হবে।
২। বাছুরটিকে শুকনো জায়গায় বিচালি বিছিয়ে শুইয়ে রাখতে হবে। কোনো মতেই স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় রাখা চলবে না। এতে বাছুরের ঠান্ডা লাগতে পারে।
৩। সবল বাছুর ১/২ – ১ ঘন্টার মধ্যে উঠে দাঁড়াবে। উঠে দাঁড়াতে না পারলে সঙ্গে সঙ্গে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৪। বাছুরের নাভীর নাড়ি ২ ইঞ্চির বেশী লম্বা থাকলে নতুন ব্লেড দিয়ে কেটে টিংচার আয়োডিন লাগিয়ে দিতে হবে। রক্তপাত রোধ করার জন্য নাড়ীর গোড়ার দিকে নাইলন সুতো দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। পর পর ৫ দিন নাড়ীতে টিংচার আয়োডিন লাগাতে হবে। এর ফলে রোগ জীবাণু নাড়ীর ভেতর দিয়ে ঢুকে বাছুরকে রোগাক্রান্ত করতে পারবে না।
জন্মানোর ১ থেকে ২ ঘন্টার মধ্যে বাছুরকে অবশ্যই গাজলা দুধ খাওয়াতে হবে। জন্মের প্রথম ২৪ ঘন্টায় বাছুরটি গাজলা দুধ না পেলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বাচ্চা কোষ্ঠবদ্ধতায় ভুগবে। গাজলা দুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর। গাজলা দুধ অবশ্যই খাওয়াতে হবে। বাছুরকে কতটা গাজলা দুধ দিতে হবে তা নির্ভর করে বাছুরের দেহের ওজনের ওপর। প্রতিদিন বাছুরের দেহোএর ও্জনের ১/১০ ভাগ পরিমাণ দুধ দিতে হবে। এই পরিমান দুধ বার বার খাওয়াতে হবে।
গাজলা দুধ খাওয়ার ২ ঘন্টা পর বাছুর মল ত্যাগ করে, যদি না করে তাহলে, ০.৫ লিটার উষ্ণ গরম জলে ১-২ চামচ সোডা মিশিয়ে মলদ্বারে ঢুকিয়ে পায়খানা করাতে হবে।
সংকর বাছুরের খাবার –
সংকর বাছুরের ৩ মাস বয়স পর্যন্ত বেশী প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। শুধু দুধ খাইয়ে বাছুরগকে বড়ো করা গেলেও তার সাথে শুকনো খাবার দিলে দৈহিক বৃদ্ধি দ্রুত হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে বাছেরকে দুধের বিকল্প খাবার হিসাবে শুকনো সুষম খাবার দিতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ