মোংলা ও পায়রা বন্দরে ১০ নম্বর মহা বিপদসঙ্কেত

390

বুলবুল

আজ সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাতের মধ্যে উপকূলে ‘বুলবুল’ আঘাত হানতে পারে। উপকূলে ৫-৭ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর কারণে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। উপকূলীয় অঞ্চলে ঝরছে বৃষ্টি। শুক্রবার সকাল থেকেই স্বেচ্চাসেকরা বিভিন্ন অঞ্চলে মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করছেন। ছবিটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা

‘বুলবুল’ বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে খুলনা-বরিশাল এলাকার স্থলভাগে তা আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। তবে ওই আঘাত হানার আগে কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি, এমনটাই মত তাদের।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ বাংলাদেশের উপকূলের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ায় মোংলা ও পায়রায় ১০নম্বর ও চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারি হয়েছে। ঝড়ের পথ ও গতি এ রকম থাকলে দেশের উপকূলের ১৩ জেলায় বুলবুলের আছড়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন, বুলবুলের কারণে সমুদ্রে ৫ থেকে ৭ ফুট উঁচু হয়ে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, ৫৫ হাজার ৫১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক ইতোমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলার কাজে নেমেছেন। বুলবুলের প্রভাব পড়বে খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, ভোলা ও পিরোজপুর জেলায়। সব মিলিয়ে ১৩ জেলায় সতর্কতামূলক সঙ্কেত পাঠানো হয়েছে। ওই জেলাগুলোতে ঝড়ের আগেই শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ আব্দুর রহমান বলেন, ‘এখন যা গতিপ্রকৃতি, তাতে ঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ওই সময় ঘূণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আয়েশা খাতুন জানান, ঘূণিঝড়টি সুন্দরবনের কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে আজ সকাল থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সুন্দরবনের দুবলার চরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের আয়োজন বন্ধ করে হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

সুন্দরবনের গভীরতম এলাকা দুবলার চরে গত ১০০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমায় পালিত হয়। এ বছরের তিথি অনুযায়ী আগামী ১০ ও ১২ নভেম্বর রাস উৎসব আয়োজিত হওয়ার কথা। এখানকার পুণ্যস্নান ও উৎসবে প্রায় ৩০ হাজার পুণ্যার্থী যোগ দেওয়ার কথা ছিল। একই সঙ্গে বুলবুলের আশঙ্কায় সুন্দরবনে পর্যটকদের যাওয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ