ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) তিন বছর পর তথ্য প্রকাশ করল। সংস্থাটির তথ্য মতে, ২০১৬ সালে ভারতে ১১,৩৭৯ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে। এনসিআরবি প্রদত্ত ২০১৬ সালের সর্বশেষ দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ও আত্মহত্যার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ওই বছর প্রতি মাসে ৯৯৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে, সেই হিসাবে প্রতিদিন ৩১ জন। অর্থাৎ প্রতি ৪৬ মিনিটে ভারতে একজন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।
এর আগে, প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ২০১৪ সালে দেশে কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১২,৩৬০ জন। ২০১৫ সালে যার সংখ্যা ছিল ১২,৬০২ জন। প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়স্ক পুরুষেরাই সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন। স্বাভাবিক ভাবে এই বয়সের মানুষের কাঁধেই পরিবারের দায়িত্ব থাকে। নারী চাষীর আত্মহত্যার হার ৮.৬%।
এনসিআরবি প্রদত্ত তথ্য অনুসারে চাষীদের আত্মহত্যার কারণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে চাষ করতে গিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া (৩৮.৭%) এবং তারপরেই রয়েছে চাষ সংক্রান্ত সমস্যা (১৯.৫%)। তারপরে যথাক্রমে পারিবারিক সমস্যা (১১.৭%) এবং অসুস্থতা (১০.৫) । সামগ্রিকভাবে, কৃষক আত্মহত্যা প্রায় ২১% কম হলেও, কৃষিকাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের আত্মহত্যার হার ১০% বেড়ে গেছে।
এখানে আরও বলা হয়েছে কৃষক আত্মহত্যায় শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। ২০১৩ থেকে ২০১৮ র মধ্যে ১৫,৩৫৬ জন চাষী আত্মহত্যা করেছেন মহারাষ্ট্রে। এই বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ২৮শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৩৯৬ জন চাষী আত্মহত্যা করেছেন। কৃষকদের আত্মহত্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কর্ণাটক।
২০১৬ সালে ২,০৭৯ জন চাষী এই রাজ্যে আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৫ সালে এই আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১,৫৬৯ । অথচ প্রতিবেশী রাষ্ট্র তেলেঙ্গানায় ২০১৬ সালে কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৪৫। যা ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। তেলেঙ্গানায় ২০১৪ সালে ১,৩৪৭ জন কৃষক আত্মহত্যার শিকার হয়েছিল এবং ২০১৫ সালে ১,৪০০ জন।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ ২০১৬ সালে কৃষক আত্মহত্যার কোন তথ্যই সরবরাহ করেনি এনসিআরবিকে। একই ভাবে ২০১৫ সালেও এই রাজ্য কোনও তথ্যই প্রকাশ করেনি। যদিও ২০১৪ সালে এরাজ্যে ২৩০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছিল। এখন পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে এই বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হওয়া ৩৯৬ টি আত্মঘাতী মামলার মধ্যে ভারত সরকার ১০২ জন পরিবারকে এক্সগ্রাসিয়া দিয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র : কলকাতা টইমস।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ