ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরনে বায়োটেকনোলজির বিকল্প নেই। ফসলের ফলন বৃদ্ধি, কাঙ্খিত জাত উদ্ভাবন, পোকামাকড় রোগবালাই প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন, লবনাক্ততা সহ্য ক্ষমতার জাত, বন্যা-খরা-শৈত্য প্রবাহ সহ্য ক্ষমতা জাত উদ্ভাবন, বড় আকৃতির ফলফুল, সবজি-মাছ-পশু পাখি উৎপাদন, অল্প সময়ে লাখ লাখ চারা উৎপাদন, চাহিদামত জাত উদ্ভাবনসহ কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বায়োটেকনোলজির ভূমিকা অপরিসীম।
বায়োটেক ফসলই একমাত্র বিশ্বকে ক্ষুধামুক্ত করতে পারে। আজ কৃষি মন্ত্রী ড.মো: আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনের অডিটোরিয়ামে 4th Innovation in plant and Food Science International Conference on biotechnology in health and Agriculture. অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন; যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের ৫০ ভাগ বায়োটেক ফসল চাষ হয়। এছাড়া–চীন, আর্জেন্টিনা, কানাডা, ব্রাজিলসহ বিশ্বে বিভিন্ন দেশ বায়োটেক শস্যের প্রতি দ্রুত আর্কষন দেখে মনে হয়, বাণিজ্যিক এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৃহৎ এবং ক্ষুদ্র উভয় প্রকার ভোক্তা, কৃষক এবং উৎপাদনক্ষমতা, পরিবেশ, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, এবং সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন; বাইওটেকনোলজীর মাধ্যমে অল্প সময়ে উন্নত জাত উদ্ভাবন করা যায়। কাঙ্খিত জাতের ফসল উদ্ভাবন করা যায়। অল্প সময়ে প্রজাতির মধ্যে বিভিন্নতা আনা যায়। বড় বড় সবজি ও ফলের জাত, রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধী জাত এবং লবনাক্ততা , খরা ও বন্যা সহনশীলতা জাত উদ্ভাবন করা যায়। যেকোন ফসল বছরের যে কোন সময়ে চাষ করা যায় এমন জাত উদ্ভাবন করা যায়। যে সব ফসল, ফল, ফুল, সবজির বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা যায় না সেসব গাছের চারা উৎপাদন করা যায়। বছরের যেকোন সময় চারা উৎপাদন করা যায়, মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদের জাত সংরক্ষন করা যায়।
নাইট্রোজেন সংবন্ধন ব্যাকটেরিয়া তৈরি করা যায়। যা বাতাস থেকে নাইট্রোজেন গ্রহন করে মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমান বাড়িয়ে মাটিকে উর্বর করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য ড.আক্তারুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ওয়াইস কবির,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইওলজিকাল সাইন্স এর ডিন প্রফেসর ড.এম ইমদাদূল হক,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য ড.এমরান কবীর চৌধুরী। কৃষক,কৃষিবিদ ও কৃষি বিজ্ঞানীদের মেধা, শ্রম ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে দেশে কৃষিজ উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে।
উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে সর্বশেষ এবং সর্বোত্তম উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। বংলাদেশে গত কয়েক দশকে আধুনিক সংকরায়ন বা hybridization পদ্ধতি ব্যবহার করে নানাধরনের উচ্চফলনশীল,রোগ প্রতিরোধী এবং অন্যান্য আকাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যের হাইব্রিড ফসলের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। বেগুন চাষাবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২৯তম দেশ হিসেবে জিএম শস্য উৎপাদনকারী দেশের খাতায় নাম লেখে।মানবদেহের উপর বিটি শস্য সমূহের ক্ষতিকারক কোন প্রভাব বৈজ্ঞানিক গবেষণায় খুঁজে পাওয়া যায়নি । বাংলাদেশে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টমেটো ও তুলার নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ চলছে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ