পটুয়াখালী জেলা তরমুজের জন্য বিখ্যাত। দেশে এখনো তরমুজের জাতের বীজ উৎপাদনের যথাযথ প্রযুক্তি না থাকায় চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, ভারত, মালয়েশিয়া থেকে বীজ আমদানি করা হয়। এ বীজ আমদানি করতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়। তবে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তরমুজের জাত বীজ উৎপাদনে সফল হয়েছে পটুয়াখালী আঞ্চলিক কৃষি উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।
আঞ্চলিক কৃষি উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, ৫০ শতাংশ জমিতে ১০০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। জেলায় ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। যা বিদেশ থেকে আমদানি করতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়। যার ফলে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বিদেশে পাঠাতে হচ্ছে।
তথ্যমতে, ২০১৮ সালে জেলায় ২১ হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়। এতে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ১০০ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদন হয়। ২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশে ২৯ হাজার ৩৩৮ একর জমিতে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬১ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদন হয়। একই সময়ে বরিশাল বিভাগে ১২ হাজার ৪৮৭ একর জমিতে ৬২ হাজার ৩৭৮ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদন হয়।
কৃষক আনিচ মৃধা, রফিক মিয়া জানান, অনেক গ্রাম বা শহরে টাকা দিলেও ভালো হাইব্রিড জাতের বীজ পাওয়া যায় না। ফলে হাইব্রিড বীজ বপন করে সঠিক ফসল পাচ্ছেন না তারা। অন্যতম কারণ ডিলারদের বীজ কারসাজি। যারা কৃষি কাজ করেন, তাদের পক্ষে ভেজাল বীজ নির্ণয় কর সম্ভব নয়।
গলাচিপার কৃষক মো. রফিক মিয়া জানান, তরমুজ মৌসুমে ৮ থেকে ১৫ টাকা দরে তারা বিক্রি করতে পারেন। মৌসুম ছাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারে। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস তরমুজের আবাদ হয় না। তবে এসময় তরমুজ আবাদ হলে বিদেশি ফল আমদানি কমবে। ফলে আমদানি ব্যয়ও কমে আসবে।
কৃষি উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘দেশে তরমুজের বীজ উৎপাদন না হওয়ায় একটি সিন্ডিকেট বেশি মুনাফা নেয়। ফলে কৃষককে বেশি দামে বীজ কিনতে হয়। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। ২০১৬ সাল থেকে আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্রে তরমুজের জাত অবমুক্ত করার কাজ করছি। ইতোমধ্যে প্রথমবারের মতো বীজ উৎপাদনে সফল হয়েছি। চারটি জাতের মধ্যে হলুদ ও লাল জাতের বীজ উদ্ভাবন করা হয়েছে।’
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ