অল্প জমিতে অধিক লাভ হওয়ায় আখ চাষে ঝুঁকছেন হরিণাকুন্ডের কৃষকরা

420

অল্প জমিতে অধিক লাভ

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা এবার এগিয়ে যাচ্ছে আখ চাষে। উপজেলার বাজারগুলোর রাস্তার পাশে বিক্রি হচ্ছে এ আখ। ৯০ দশকের আগে এ অঞ্চলে আখের প্রচলন শুরু হলেও কয়েক বছরে এর ব্যাপকতা বেড়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়ায়।

কৃষকরা জানান, ২০১২ সালের দিকে নাজিম উদ্দিন নামে একজন আখ কিনে খান। সেই আখের চোখ বাড়িতে নিয়ে রোপণ করেন। তা থেকে ভালো আখ হয়। পরের বছর ফরিদপুর থেকে আখের বীজ আনেন। প্রথম বছর ১০ শতক জমিতে চাষ করেন। এরপর প্রতিবছর চাষ বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার মাঠের অর্ধেক জমিতে আখ চাষ হয়। আখ চাষ করে কৃষকরাও লাভবান হন। ফলে গত ৪ বছরে উপজেলায় আখের চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলা ধান চাষের পরই পান চাষের উপজেলা হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রচুর পরিমাণে পান চাষ হয়ে থাকে। ২০১২ সালের পর থেকে গেন্ডারি আখের চাষ শুরু হয়। এ বছর প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এর পাশাপাশি চিনিকলে সরবরাহের জন্য আরো ১৫ হেক্টর জমিতে অন্য জাতের আখের চাষ করা হয়েছে।

সরজমিনে হরিণাকুন্ড উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ গেন্ডারি আখ দন্ডায়মান। বাঁশ দিয়ে টাল করে সোজা রাখা হয়েছে। একপ্রান্ত থেকে কাটা হচ্ছে, আরেক প্রান্তে আবার বড় হচ্ছে। এই কাটা আখ বাজারে বিক্রি করছেন।

পারবতীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল বারী মন্ডল জানান, তিনি গত দুই বছর গেন্ডারি আখের চাষ করছেন। তিনি জানান, ১৮ শতক জমিতে গেন্ডারি আখের চাষ করে এক মৌসুমে তিনি এক লাখ টাকা লাভ করেছেন। এ বছরও তিনি সমপরিমাণ জমিতে চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ১২ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। আশা করছেন, এবারও লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে।

ওই গ্রামের কৃষক কলম আলী জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। ২৪ শতক জমি বর্গা নিয়ে এবার চাষ করেছেন। নিজেই দোকানে রেখে এই আখ বিক্রি করেন। প্রতিটি আখ ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হয়। আর যারা পাইকারি বিক্রি করেন তারা ৩০ থেকে ৪০ টাকা পান।

একই গ্রামের ইতাহার আলী জানান, বাজারে ধানের মূল্য কমে গেছে। অন্য ফসল উৎপাদন করেও কৃষক খরচ উঠাতে পারছে না। সেখানে এক বিঘা জমিতে এক লাখ টাকা খরচ করলে ৪ লাখ টাকার গেন্ডারি আখ পাওয়া যায়। অল্প জমিতে অধিক লাভ হওয়ায় এলাকার কৃষকরা বর্তমানে এই চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।