পাবনার চলনবিলে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউৎ উৎসব

635

পাবনার চলনবিলে শুরু হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউৎ উৎসব। মঙ্গলবার চলনবিলখ্যাত পাবনার ভাঙ্গুড়া-চাটমোহর উপজেলার বিশাল অংশজুড়ে অবস্থিত রুহুল বিলে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এক সপ্তাহ ধরে চলনবিলের বিভিন্ন বিলে পর্যায়ক্রমে এ উৎসব চলবে।

বিলপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বর্ষার পানি নেমে গেলেও নিচু জলা ভূমিতে প্রচুর মাছ থেকে যায়। তাই প্রতি বছর এ দিনে বিভিন্ন স্থান থেকে শৌখিন মাছ শিকারিরা এসে মিলিত হন উৎসবে। উৎসবে শত শত মাছ শিকারি মিলিত হন। পাবনাসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা শিকারির হাতে প্রচুর দেশীয় মিঠাপানির মাছ ধরা পড়ে। তারা ভোরে সাংসারিক কাজ ফেলে পলো, বাদাইজাল, ঘেরজাল, ঠেলাজালসহ বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে হাজির হন।

fish-in-(1)

স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় বাউৎ উৎসব। শিকারিরা আগে থেকে যোগাযোগ করে শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে করিমন, নছিমন, ভাটভটি, বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল নিয়ে বিলের পাড়ে জড়ো হন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ শিকার করেন। এসময় দেশীয় প্রজাতির শোল, বোয়াল, গজার, রুই, কাতলা, চিতল, পুটি, খৈলসা, শিং, টেংরা ও পাবদা ধরা পড়ে। দুপুরের দিকে তাদের গন্তব্যে ফিরে যান।

সৌখিন মাছ শিকারি ময়েজ উদ্দীন (৫৫) জানান, পলো দিয়ে মাছ ধরা তার দীর্ঘদিনের শখ। তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি এ দিনে চলে আসেন। তবে আগের তুলনায় দেশীয় প্রজাতির মাছ কমে যাচ্ছে।

fish-in-(1)

নাটোর থেকে আসা আবু বক্কার বলেন, ‘মোবাইলের মাধ্যমে বাউৎদের সাথে যোগাযোগ করেই প্রতি বছর মাছ শিকার করতে আসি। মাছ পাই আর না পাই এটাই অন্যতম শখ।’

fish-in-(1)

বড়াই গ্রামের আফসার আলী মাছ না পেয়ে বলেন, ‘এখানকার লোকজন আগের রাতেই জাল দিয়ে মাছ মেরে নিয়েছে। তাই এখন আর তেমন মাছ নেই বিলে।’

fish-in-(1)

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘বিল রুহুলে প্রতি বছর বিভিন্ন স্থান থেকে শৌখিন মাছ শিকারিরা আসেন। ফলে এখানে মাছ ধরা একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে।’