এবার আলুর চাষ দেখতে ইউরোপে যাবেন ৪০ সরকারি কর্মকর্তা। বাংলাদেশ আলু উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম হলেও রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এজন্য রপ্তানিযোগ্য আলুর উৎপাদন বাড়াতে বিদেশে এই চাষাবাদ পদ্ধতি দেখতে যাবেন কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কর্মকর্তারা।
এজন্য মানসম্মত আলুবীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ হিসাবে জনপ্রতি বরাদ্দ সাড়ে ৭ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব কর্মকর্তা ধাপে ধাপে যাবেন। সফরে চাষাবাদ দেখার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত জ্ঞানও অর্জন করবেন।
বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে আলু উৎপাদন হয় ১০৩ দশমিক ১৭ লাখ টন, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব। কিন্তু সুফল মিলছে না। কারণ, এগুলো শিল্পে ব্যবহার উপযোগী নয়। এ অবস্থায় সরকার উৎপাদিত আলু রপ্তানি করতে মানসম্মত বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহের চিন্তা করেছে। মানসম্মত আলু উৎপাদনের জন্য ৮ হাজার ৪০০ কৃষকের সঙ্গে চুক্তিও করা হবে। সম্পতি ৬৮৮ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নেওয়া হয়েছে একটি প্রকল্প। এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএডিসির কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসির মহাব্যবস্থাপক (বীজ) মো. নূরনবী সরদার বলেন, আমাদের দেশে উৎপাদিত আলু রপ্তানি উপযোগী নয়। এগুলো খাবারের জন্য ব্যবহার করা যেতে পাবে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে ব্যবহারের জন্য উন্নত আলু দরকার, যা আমাদের দেশে উৎপাদন হয় না। এজন্য গৃহীত প্রকল্পের মাধ্যমে সেসব উন্নতজাতের উৎপাদন বাড়ানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় চারটি ধাপে ৪০ কর্মকর্তা বিদেশ যাবেন। কোন দেশে যাবেন তা ঠিক না হলেও এক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলো বেশি উপযুক্ত দেশ বলে তিনি জানান।
প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার ৯৫০ জন চুক্তিবদ্ধ চাষি, এনজিও কর্মী, বীজ উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ী প্রশিক্ষণ পারেন। এর বাইরে ৪৫০ কারিগরি কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। এদের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে আলু উৎপাদনকারী উন্নত দেশগুলো ভ্রমণের জন্য ৪০ জনকে পাঠানো হবে। ১০ জন করে চারটি ব্যাচে তারা এই বৈদেশিক প্রশিক্ষণে যাবেন। এজন্য ডিপিপিতে ৩ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন চারটি নতুন হিমাগার স্থাপন করা হবে। এসব হিমাগার স্থাপনের জন্য নকশা প্রণয়ন, প্রাক্কলন ও তত্ত্বাবধানের জন্য স্থানীয় একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। আর হিমাগার স্থাপনে আলাদাভাবে ১২২ কোটি ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।