শুরু হল নতুন বছর ২০২০। গত এক বছরে বেড়েছে কৃষি প্রণোদনা, ডিএপি সারের দাম কমানো হয়েছে, অ্যাপভিত্তিক কৃষিসেবা চালু করেছে সরকার। বেড়েছে কৃষি প্রণোদনা। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে নয়টি ফসল উৎপাদনে সারাদেশের ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ৮০ কোটি ৭৬ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এ সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে চলতি রবি মৌসুমে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, শীতকালীন মুগ, পেঁয়াজ এবং পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও গ্রীষ্মকালীন তিল উৎপাদনে বীজ ও রাসায়নিক সার (ডিএপি ও এমওপি) দেওয়া হয়। রবি মৌসুমে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, শীতকালীন মুগ, পেঁয়াজ এবং পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও গ্রীষ্মকালীন তিল উৎপাদন বৃদ্ধিতে ৬৪টি জেলায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে প্রতি কৃষক পরিবারকে সর্বোচ্চ এক বিঘা জমির জন্য বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার প্রণোদনা দেওয়া হয়।
কৃষকের স্বার্থে ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সারের দাম প্রতি কেজিতে ৯ টাকা কমানো হয়েছে। যা গত বিজয় দিবসের দিন থেকে (১৬ ডিসেম্বর) কার্যকর হয়েছে। কৃষক পর্যায়ে ডিএপি সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে প্রতি কেজি ১৬ টাকা- যা আগে ছিল ২৫ টাকা। আর ডিলার পর্যায়ে প্রতি কেজি ২৩ টাকা থেকে কমিয়ে ১৪ টাকা করা হয়। বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে ডিএপি সারের মূল্য হ্রাস করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোন ধরনের বালাই আক্রমণ করতে পারে সে বিষয়ে ঘরে বসেই চলতি বছরে তথ্য পেয়েছে কৃষক। ফসলের উৎপাদন কখন কী পর্যায়ে রয়েছে সে নির্দেশনাও চলে যাচ্ছে কৃষকের মোবাইল ফোনে। নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক তথ্য পাওয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে ফসলের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি কমছে। এতে ফসলের উৎপাদনশীলতা ১৫ শতাংশ বেড়েছে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। সরকারি ও বেসরকারিভাবে বেশ কিছু কৃষিভিত্তিক মোবাইল অ্যাপস চালু রয়েছে। এসব অ্যাপসের মাধ্যমে দেশে চলতি বছর প্রায় ৪০ লাখের বেশি কৃষক সরাসরি সেবা নিয়েছে। এ ছাড়া পরোক্ষভাবে আরো কয়েক লাখ উপকৃত হয়েছে।
কৃষিসেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করছে কৃষি বাতায়ন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির আওতায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে গত ২৮ ফেব্র“য়ারি চালু করা হয়। কৃষি বাতায়নে নিবন্ধিত যে কোনো কৃষক ‘৩৩৩১’ নম্বরে ফোন করে তাদের সমস্যার কথা জানাতে পারছেন। ১২টি জেলার প্রায় ৯ লাখ ৭০ হাজার কৃষককে কৃষিবিষয়ক পাঁচ ধরনের তথ্য সেবা দিচ্ছে এসিআই লিমিটেডের ‘ফসলি’। এ অ্যাপসের মাধ্যমে সম্প্রসারণ কর্মীরা স্যাটেলাইট ডাটা ও আবহাওয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করে কৃষককে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে তথ্য দিচ্ছে। কৃষক বালাই ও রোগের ক্ষেত্রে করণীয় এবং শস্য উৎপাদনে আয়-ব্যয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণের তথ্য পাচ্ছেন। মাঠে থাকা ফসলের উৎপাদন কোন এলাকায় কোন পর্যায়ে রয়েছে সে তথ্য দিয়েছে। নওগাঁ, রংপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, বগুড়া, দিনাজপুর, কক্সবাজার, খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার কৃষকরা এ সুবিধা পেয়েছেন।