গুতুম মাছ এক সময় অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছটি প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত; কিন্তু শস্য ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা, বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্য নিঃসরন ইত্যাদি নানাবিধ কারণে বাসস্থান ও প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হওয়ায় এ মাছের প্রাচুর্যতা ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে।
নার্সারী পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
⦁ পোনা প্রতিপালনের জন্য ১০ শতাংশের পুকুরে ৩.৫ মিটার x ২ মিটার x১ মিটার আয়তনের একাধিক হাপা স্থাপন করা হয়।
⦁ পুকুর প্রস্তুতির জন্য পুকুর শুকিয়ে প্রতি শতকে ১ কেজি চুন দেওয়া হয়।
⦁ এরপর শতাংশে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫ গ্রাম টিএসপি সার ব্যবহার করা হয়।
রেণু সংগ্রহ ও নার্সারীতে মজুদ:
⦁ হ্যাচারীতে উৎপাদিত ৭ দিন বয়সের রেণু পোনা প্রতি হাপাতে ৬,০০০-৭,০০০ টি হারে মজুদ করা যায়।
⦁ নার্সারীতে মজুদের সময় রেণু পোনাকে পুকুরের পানির তাপমাত্রার সঙ্গে ভালভাবে খাপ খাওয়ানোর পর ছাড়তে হবে।
নার্সারীতে খাদ্য প্রয়োগ:
হ্যাচারীতে উৎপাদিত ৭ দিন বয়সের রেণু পোনা নার্সারীতে মজুদের পর প্রতি ৭,০০০ টি পোনার জন্য খাদ্য প্রয়োগের মাত্রা নিন্মরূপ:
সারণী ২: গুতুম মাছের নার্সারী পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ মাত্রা
পোনার বয়স (দিন) খাদ্যের প্রকার খাদ্য প্রয়োগের হার প্রয়োগ মাত্রা/দিন
১-৩ সেদ্ধ ডিমের কুসুম ২ টি ৩ বার
৪-৭ ময়দার দ্রবণ ৫০ গ্রাম ৩ বার
৮-১৫ নার্সারী খাদ্য (৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ) ১০০ গ্রাম ৩ বার
১৬-২৩ নার্সারী খাদ্য (৩২-৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ) ১৫০ গ্রাম ৩ বার
২৪-৩০ নার্সারী খাদ্য (৩২-৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ) ৩০০ গ্রাম ৩ বার
⦁ রেনু পোনা ছাড়ার ৩০ দিন পর পোনায় পরিণত হয়, যা চাষের পুকুরে মজুদের জন্য উপযোগী এবং বাঁচার হার শতকরা প্রায় ৬০%।
ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যাঃ
⦁ পোনা মজুদের পর থেকে প্রতি ৭ দিন পর পর হাপা পরিস্কার ও মাছের দেহের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
⦁ পানির গুণাগুণ যেমন তাপমাত্রা, পিএইচ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া ও মোট ক্ষারত্বের পরিমান নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।
পোনা উৎপাদন ও আহরণ:
⦁ উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরন করে নার্সারীতে পোনা মজুদের ৩০ দিন পর ৩-৪ সে.মি. আকারের গুতুম মাছের পোনা পাওয়া যায়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬জানু২০২০