যেভাবে টবে শিম চাষ করবেন

3131

44083897_239571706711200_5478625368988450816_n
শিম চাষ আপনি ইচ্ছা করলে আপনার বাড়ির ঘরের বারান্দা, ছাদে, চিলেকৌঠায় অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় বা উঠোনের কোনে এই সুস্বাদু শীতকালীন সবজি শিমের চাষ করতে পারেন খুব সহজে ।

শিম চাষে টব বা মাটি তৈরি পদ্ধতি:

আমাদের দেশে এঁটেল মাটি ছাড়া প্রায় সবধরণের মাটিতে শিমের চাষ করা যায়। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে শিমের চাষ ভাল হয়। দো-আঁশ মাটি বেশি উপযুক্ত ।

শিম চাষের টব বা পাত্রের আকৃতি বাছাই:

টবে শিম চাষ করার ক্ষেত্রে আপনি মাঝারি অথবা বড় সাইজের মাটির টব ব্যবহার করতে পারেন এছাড়াও আপনি ইচ্ছা করলে হাফ সাইজের অথবা কাটা ড্রাম ব্যবহার করতে পারেন।

শিমের জাত:

আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি জাতের শিম চাষ করা হয়ে থাকে। তাঁর মধ্যে বারি-১, বারি-২, বারি-৫, বারি-৬, চ্যাপ্টা শিম, ধলা শিম, পুঁটি বা পুটলে শিম, হাতিকান, ঘৃত কাঞ্চন, ইপসা, সীতাকুন্ডু ইত্যাদি অন্যতম।

শিমের চারা রোপনের সঠিক সময়:

বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় যেকোন সময়ে শিমের চাষ করা যায়। তবে শ্রাবণ মাসের শেষের দিক থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত শিম লাগানোর উপযুক্ত সময়। আর যদি আগাম চাষ করতে চান তাহলে আষাঢ় থেকে পুরো ভাদ্র মাস পর্যন্ত শিম গাছ লাগানো যায়।

শিমের বীজ বপন ও পানি সেচ:

শিমের চারা লাগানোর ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে চারা তৈরি করে নিতে হবে অথবা বীজ বুনতে হবে । প্রতিটি পাত্রে ৫-৬ টি করে বীজ বুনে দিতে হবে। এরপর যখন বীজ থেকে চারা উৎপাদিত হবে তখন প্রতিটি টবে সবল সুস্থ্য চারা রেখে দুর্বল চারা উপড়ে ফেলতে হবে। চারা গজানোর পর প্রথম দিকে নিয়মিত পানি দিতে হবে। এবং পরবর্তীতে অতিরিক্ত গরম পড়লে বেশী পানি দিতে হবে।

শিমের চাষাবাদ পদ্ধতি:

গাছের চারা একটু বড় হলে একটা ছোট লাঠি অথবা বাঁশ দিয়ে গাছকে বেঁধে দিতে হবে। এরপর যত্নসহকারে মাচা তৈরি করে দিতে হবে। গাছে নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। এবং শিম গাছের গোড়ায় সবসময় মাটি দিতে হবে। শিম গাছ ছেটে দিলো গাছ ঝোপালো হয় ফুল ফল বেশি হয়।

সারের পরিমাণ ও সার প্রয়োগ:

শিম গাছে জৈব সার দিতে হবে বেশি করে যেমন , ময়লা আবর্জনা, হাস মুরগীর বিষ্ঠা, কাঠ কয়লা ছাই ইত্যাদি। এছাড়াও অজৈব সার হিসেবে ইউরিয়া, টিএসপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক অক্সাইড ইত্যাদি দিতে পারেন ।

শিম গাছে পোকামাকড় দমন ও বালাইনাশক:

কীটনাশক কিভাবে প্রয়োগ করবেন
শিম গাছে অতিরিক্ত গরমে থ্রিপস পোকার আক্রমণ ঘটে থাকে। এছাড়াও জাব পোকার আক্রমণও হতে পারে। এসব পোকার আক্রমণ হতে শিম গাছকে রক্ষা করতে হলে নিয়মিত ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক দিতে

শিমের যত্ন ও পরিচর্যা:

শিম গাছের নিয়মিত যত্ন করতে হবে। গাছের গোড়ায় যদি আগাছা জন্মে তাহলে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। মাঝে মাঝে অতিরিক্ত আগা ও লতাপাতা ছাটাই করে দিতে হবে। টবে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। গাছের গোড়াই অনেক বেশী পরিমাণে মাটি দিতে হবে। গাছ লতিয়ে গেলে বেধে দিতে হবে। গাছে ফুল আসলে পুরুষ ফুলের পরাগধানী হতে পরাগরেণু সংগ্রহ করে স্ত্রী ফুলের গর্ভমুন্ডে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরাগায়ন (কৃত্রিম পরাগায়ন )ঘটিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া সম্ভব।

ফার্মসএন্ডফার্মার/৮ফেব্রু২০২০