কৈ ও শিং মাছের মিশ্র চাষে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আমাদের দেশে মাছ চাষ একটি লাভজনক পেশা। মাছ চাষ করে অনেকেই তাদের দারিদ্রতা দূর করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আসুন জেনে নেই কৈ ও শিং মাছের মিশ্র চাষে করণীয় সম্পর্কে-
কৈ ও শিং মাছের মিশ্র চাষে করণীয়ঃ
চাষ পদ্ধতিঃ
মাছ চাষের জন্য সবার আগে পুকুর প্রস্তুতির দরকার হয়। জানুয়ারীর মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে পুকুর প্রস্তুত করার জন্য উত্তম সময়। প্রথমে পুকুর সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাসন করে শতাংশ প্রতি ১ কেজি চুন দিয়ে ভাল করে মই দিয়ে তারপর শুকাতে দিন। যদি শুকানো না যায় তাহলে চুন দেয়ার পর শ্যালু বা গভীর নলকুপ দিয়ে পানি ভরেই পোনা মজুদ করা যাবে।
২ টি পদ্ধতিতে এই মাছ চাষ করা যায়-
১। সরাসরি বা এক ধাপ পদ্ধতি।
২। নার্সিং পদ্ধতি।
সরাসরি বা এক ধাপ পদ্ধতিঃ
এই পদ্ধতিতে পুকুরে সরাসরি পোনা মজুদ করে চাষ করা হয়। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে নার্সিং পদ্ধতির চেয়ে ৮/১০ দিন আগে বাজারজাত করা যায়। তবে কিছুটা অনুমান নির্ভর চাষ করতে হয়। তবে ৩০% মৃত্যু হার ধরে নিলে খুব একটা অসুবিধা হয় না। মৌসুমের শুরুর দিকে এই পদ্ধতিতে চাষ করা ভাল।
নার্সিং পদ্ধতিঃ
এ পদ্ধতিতে পোনাকে নার্সিং পুকুরে ১৫/২০ দিন নার্সিং করে একটু বড় হলে পরে মজুদ পুকুরে স্থানান্তর করতে হয়। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে পোনার বাচাঁর হার মোটামোটি নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে চাষকাল একধাপ পদ্ধতির চেয়ে ৮/১০ দিন বেশী লাগে। আমি সংক্ষেপে এক ধাপ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করছি।
আগেই পুকুর প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে। পুকুরে প্রথমে কৈ মাছ মজুদ করতে হবে। পুকুরে পানি দিতে হবে ২ থেকে ২.৫ ফুট। এর বেশী পানি দিলে কৈ মাছের পোনা পুকুরের কিনারা দিয়ে অধিক ঘনত্বে চলাফেরা করবে ফলে সাপ, বক,বা মাছরাঙ্গা পাখি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটা কৈ চাষের গুরুত্বপুর্ণ দিক।
মজুদ ঘনত্বঃ
মিশ্র চাষে কৈ মাছ শতাংশ প্রতি ছাড়তে হবে ১০০০ টি।৩০% মৃত্যু হার ধরলে বাঁচার হার শতাংশ প্রতি ৭০০ টি।মজুদের ২য় দিন বা তয় দিন শতাংশ প্রতি ১০০ গ্রাম চুন এবং আধা কেজি লবন দিলে মোটামোটি নিরাপদ। কৈ মাছ ছাড়ার ১০/১৫ দিন পর শিং মাছ ছাড়তে হবে শতাংশ প্রতি ৩০০ টি।শিং মাছ ছাড়ার সময় এন্টি- ফাঙ্গাল ঔষধ দিয়ে পুকুরে ছাড়তে হবে।
সতর্কতাঃ
মাছ চাষে লাভবান হওয়ার জন্য ভাল এবং স্বনামধন্য হ্যাচারী থেকে পোনা সংগ্রহ করুন। অন্যথায় বিনিয়োগ ঝুকির মধ্যে পড়বে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/৮ফেব্রু২০২০