ভুট্টার চাষ পদ্ধতি

643

89618343_2581212828674296_358664631465541632_o
ভুট্টা চাষ পদ্ধতি

পরিচিতি:

ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমান বেশি। এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। হলদে রংয়ের ভুট্টা দানায় প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ থাকে। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভূট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নত মানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। শুধু পশু, মুরগির খামার ও মাছের চাহিদা মিটানোর জন্যই বছরে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার টন ভুট্টা দানা প্রয়োজন। বাংলাদেশে ভুট্টার আবাদ দ্রুত বাড়ছে।

ভূট্টার জাত:

পটল উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর উপযোগী ফসল। পটলের জন্য উচ্চতর তাপমাত্রা এবং অধিক সূর্যালোক দরকার। আধিক বৃষ্টিপাত ফুলের পরাগায়নে বিঘ্ন ঘটায়। সবরকম মাটিতেই পটলের চাষ হতে পারে তবে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ, বন্যামুক্ত, পানি নিস্কাশনযুক্ত উর্বর দোঁ-আশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিই পটল চাষের পক্ষে বেশি উপযোগী।

রোপনের সময়:

বাংলাদেশে রবি মৌসুমে মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ (অক্টোবর-নভেম্বর) এবং খরিফ মৌসুমে ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মধ্য ফেব্রুয়ারী- মার্চ) পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
বীজের হার ও বপন পদ্ধতি:
শুভ্রা,বর্ণালী ও মহর জাতের ভুট্টার জন্য হেক্টরপ্রতি ২৫-৩০ কেজি এবং খৈভুট্টার জন্য ১৫-২০ কেজি হারে বীজ বুনতে হয়। হাইব্রিড জাতের জন্য হেক্টরপ্রতি ১৫ কেজি বীজ বুনতে হবে। বীজ সারিতে বুনতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৭৫ সেমি। সারিতে ২৫ সেমি দূরত্বে একটি গাছ রাখতে হবে।

সারের পরিমাণ:

সারের নাম সারের পরিমাণ/ হেক্টর
কম্পোজিট হাইব্রিড
রবি খরিফ রবি
ইউরিয়া ১৭২-৩১২ কেজি ২১৬-২৬৪ কেজি ৫০০-৫৫০ কেজি
টিএসপি ১৬৮-২১৬ কেজি ১৩২-২১৬ কেজি ২৪০-২৬০ কেজি
এমপি ৯৬-১৪৪ কেজি ৭২-১২০ কেজি ১৮০-২২০ কেজি
জিপসাম ১৪৪-১৬৮ কেজি ৯৬-১৪৪ কেজি ২৪০-২৬০ কেজি
জিংক সালফেট ১০-১৫ কেজি ৭-১২ কেজি ১০-১৫ কেজি
বোরিক এসিড ৫-৭ কেজি ৫-৭ কেজি ৫-৭ কেজি
গোবর ৪-৬ টন ৪-৬ টন ৪-৬ টন

সার প্রয়োগ পদ্ধতি:

জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে অনুমোদিত ইউরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এবং অন্যান্য সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া সমান দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।

প্রথম কিস্তি বীজ গজানোর ২৫-৩০ তিন পর এবং দ্বিতীয় কিস্তি বীজ গজানোর ৪০-৫০ দিন পর উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। চারা গজানোর ৩০ দিনের মধ্যে জমি থেকে অতিরিক্ত চারাতুলে ফেলতে হবে।চারার বয়স একমাস না হওয়া পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।

সেচ প্রয়োগ:
উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের ভুট্টার আশানুরূপ ফলন পেতে হলে রবি মৌসুমে ৩-৪ টি সেচ দিতে হবে।
প্রথম সেচঃ বীজ বপনের ১৫-২০ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)।
দ্বিতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)।
তৃতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)।
চতুর্থ সেচঃ বীজ বপনের ৮৫-৯৫২০ দিনের মধ্যে (দানা বাঁধার পূর্ব পর্যায়)।
ভুট্টার ফুল ফোটা ও দানা বাঁধার সময় কোন ক্রমেই যাতে জমিতে জলাবদ্ধতা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ভূট্টা সংগ্রহ:

দানার জন্য ভুট্টা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মোচা চকচকে খড়ের রং ধারণ করলে এবং পাতা কিছুটা হলদে হলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। এ অবস্থায় মোচা থেকে ছাড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যাবে। ভুট্টা গাছের মোচা ৭৫-৮০% পরিপক্ক হলে ভুট্টা সংগ্রহ করা যাবে। বীজ হিসেবে মোচার মাঝামাঝি অংশ থেকে বড় ও পুষ্ট দানা সংগ্র্রহ করতে হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১২মার্চ২০