সজিনা বা মরিঙ্গা
সজিনা গাছ খরা সহিষ্ণু ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের একটি উদ্ভিদ। ডাল ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলেও আমাদের দেশে সাধারণত ডালের মাধ্যমে বা অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয়। গ্রীষ্মকাল বিশেষত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ডাল রোপণের উপযুক্ত সময়।
সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজিনা গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।
– লেবু থেকে সাত গুন বেশি ভিটামিন সি আছে সজিনা পাতায়।
– ডিম থেকে দুই গুন বেশি প্রোটিন।
– দুধের চেয়ে চার গুন বেশি ক্যালশিয়াম আছে এতে।
– অন্ধত্ব দূরীকরনে ব্যাপক কার্যকারী, কারন এতে আছে গাজর থেকেও চার গুন বেশি ভিটামিন ”এ”।
– সজিনা পাতা এনিমিয়াকেও ধ্বংশ করে কেননা শাকের তুলনায় পচিশ গুন বেশি আয়রন রয়েছে এতে।
– কলা থেকে তিন গুন বেশি পটাশিয়াম রয়েছে সজিনা পাতায়।
– এটা আমাদের শরীরে এন্টি এজিংক হিসেবে কাজ করে, হার্ট ভালো রাখে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে।
– যৌবন ধরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে সজিনা পাতা।
– এটি রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন করে।
– কোলেস্ট্রলের লেভেল কমায়, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও কোষ্টকাঠিন্য দূর করে।
– এজমা রোগীদের জন্য এটা বিশেষ উপকারি, একটি গবেষনায় দেখা গিয়েছে তিন গ্রাম পাতা দুইবেলা করে তিন সপ্তাহ খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়াও শত বছর ধরে প্রায় তিনশরও বেশি রোগের ঔষধ হিসেবে সজিনা পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
– সজিনার বিচির মধ্যে রয়েছে এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল প্রপার্টিস।
– এটা পানি বিশুদ্ধকরনে অত্যন্ত কার্যকারি।
– সজিনা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
– গর্ভধারণের পরবর্তীতে সব মায়েদের জন্য সজিনা পাতা খুবই উপকারী।
– সজিনা পাতায় আরো রয়েছে বিরানব্বই ধরনের পুষ্টি উপাদান, ছেচল্লিশ ধরনের এন্টি অক্সিডেন্ট, আঠারো ধরনের এমিনো এসিড ও আট ধরনের এসেনশিয়াল এমিনো এসিড। তাই সজিনা পাতাকে বলা হয় নিউট্রেশন্স সুপার ফুড, ন্যাচারাল মাল্টিভিটামিন এবং মিরাক্কেল ভেজিটেবল।
আফ্রিকায় যে সমস্ত শিশুরা ম্যালনিউট্রেশনে ভোগে তাদেরকে সজিনা পাতা শুকিয়ে গুড়া করে খাওয়ানো হয়।সজিনা পাতা বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যেতে পারে, যেমন ভাজা,রান্না, বড়া,ভর্তা ও শুকিয়ে গুড়ো করে। পরিশেষে বলবো, পরিবেশ রক্ষার্থেই হোক আর
নানাবিধ উপকারের লক্ষ্যেই হোক আসুন আমরা সবাই অন্তত একটা করে সজিনা গাছ লাগাই।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬মার্চ২০