জাত: মানিক-২
জাতের বৈশিষ্ট্য: মাঝারী চিকন ধান, গোড়া কালো, ধান ঝ্রে না, ভাত খাওয়ায় ভাল।
একর প্রতি ফলন: বোরোঃ ১১০-১৩০ মন, রোপা আউশ ও রোপা আমনঃ ৭৫-৮৫ মন (জমির প্রকারভেদে)
জমি নির্বাচন: যে সব জমিতে উফশী জাতের ধান চাষ হয় সেসব জমিতে এই জাতের ধান চাষ করা যাবে।
বীজ বপণের সময়:
- বোরো মৌসুমঃ কার্তিক-অগ্রাহায়ণ-পৌষ-মাঘ (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ার্য)
- রোপা আউশ মৌসুমঃ চৈত্র-বৈশাক (মধ্য মার্চ-মধ্য মে)
- রোপা আমন মৌসুমঃ মধ্য জৈষ্ঠ্য থেকে মধ্য শ্রাবণ (জুন-জুলাই)
এলাকাভেদে বীজ বপণের সময়ে হেরফের হতে পারে, বাংলাদেশে যখন যে এলাকায় উপশী ধানের বীজ বপণ করা হয়, সেই সময় হাইব্রীড ধান মানিক-২ জাতের বীজ বপণ করা যাবে।
বীজের পরিমান: একর প্রতি ৬ কেজি, এক শতাংশ বীজ তলায় এক কেজি বীজ বপণ করতে হবে। বীজতলায় চারা খুবই পাতলা করে বপণ করতে হবে। প্রতি গোছায় মাত্র ১টি করে চারা রোপন করতে হবে।
বীজ অংকুরোদ্গমের নিয়মাবলী:
- প্রথমে প্যাকেটের বীজ খুলে ২ ঘন্টা তীব্র রৌদ্রে শুকাতে হবে। তারপর ১ ঘন্টা ঠান্ডা করতে হবে।
- বোরো মৌসুমে ১২-২৪ ঘন্টা এবং রোপা আউশ ও রোপা আমন মৌসুমে ৫-৬ ঘন্টা পানিতে বীজ ভেজাতে হবে। ভেজানোর পর ২-৩ বার পানি পরিবর্তন করতে হবে।
- পরিস্কার পানি ব্যবহার করতে হবে, নদীর পানি হলে ভালো হয়, পরিমাণ মত জাগ দিতে হবে।
রোপণ উপযোগীঃ বোরো: ২৫-৩০ দিন, রোপা আউশঃ ২০-২৫ দিন, রোপা আমনঃ ১৭-২২ দিন।
চারার বয়সঃ উপযোগী সময়ের চেয়ে চারার বয়স যত বেশি হবে ফলন তত কমে আসবে। রোপা আমন ও আউশে ২৫ দিনের অধিক বয়সের চারা রোপন করলে ফলন মারাত্নক কম হবে।
রোপণের দূরত্ব: সারি থেকে সারি ১৫-২০ সে.মি (৬-৭ ইঞ্চি), চারা থেকে চারা ১.০-১২ সে.মি (৪-৫ ইঞ্চি)
সার প্রয়োগ: জমি তৈরীর সময় একর প্রতি নিম্নবর্ণিত সার প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া-৩৬ কেজি, টিএসপি-৩৩ কেজি, এমপি (পটাস)-২৭ কেজি, জিপসাম-৪৫ কেজি, জিংক সালফেট-৬ কেজি, সোহাগা (বোরাক্স)-৩ কেজি। “জমির প্রকার ভেদে সারের মাত্রার পরিবর্তন হতে পারে”
সার উপরি প্রয়োগ: চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পর প্রথমবার এবং ৪০-৪৫ দিন পর দ্বিতীয়বার একর প্রতি প্রতিবারে ৩৬ কেজি বোরো মৌসুমে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। রোপা আমন- চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পর প্রথমবার এবং ২৫-৩০ দিন পর দ্বিতীয়বার একর প্রতি প্রতিবারে ২৪ কেজি আউশ মৌসুমে ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করতে হবে। রোপনের পর ১১০-১২৩ দিনের মধ্যে ধান কাটা যাবে।
ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ: প্রাকিতিক কারণে যদি কখনো ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ দেখা যায় তাহলে প্রতিকার হিসেবে
- প্রতি কাঠা জমিতে ১ কেজি হারে পটাশ সার ব্যবহার করতে হবে।
- ০.১% স্যাভলন স্প্রে করতে হবে।
- জমির পানি বার বার বের করে দিতে হবে।
সূত্র: সিদ্দিকীস সীডস