সব ধরনের নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে পোল্ট্রি, দুগ্ধ, প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্য পরিবহণকারি গাড়ি

1207

Department-of-Livestock20190424120131‘কোভিড-১৯’ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার কর্তৃক সাধারণ ছুটি ঘোষণায় পোল্ট্রি পণ্য বহনকারি গাড়ি চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিলো তা শিতিল করেছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বুধবার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত পত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রেরিত  ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়- “প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সাথে একমত পোষণ করছে এবং পোল্ট্রি, ডিম, একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা, হাঁস-মুরগি-গবাদিপশুর খাদ্য, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য, অন্যান্য প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্য এবং কৃত্রিম প্রজনন সংক্রান্ত যাবতীয় সরঞ্জামাদি পরিবহন কার্যক্রম সচল রাখার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।”

পরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এ চিঠিকে আমলে নিয়ে বৃহস্পতিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে আরও একটি চিঠি ইস্যু করা হয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রার্থিত ‘মাছ, মাছের পোনা ও মাছের খাদ্য বহনকারি গাড়ি’ও অন্তর্ভূক্ত করা হয়।    

এরআগে এ সমস্যায় শিল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল তা কার্যকরভাবে সমাধান হয়েছে বলে মনে করছে বিপিআইসিসি। গত ২৪ মার্চ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে পোল্ট্রি খামারি ও উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রাথমিকভাবে স্বস্তি নেমে আসে এবং গত ২৫ মার্চ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তা চুড়ান্ত রূপ পায়।

পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রিয় সংগঠন “বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল” (বিপিআইসিসি) -এর পক্ষ থেকে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকেই  পোল্ট্রি শিল্পে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং পোল্ট্রির ডিম, মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা, ফিড, ঔষধ ইত্যাদি বহনকারি গাড়ি সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা লক-ডাউনের বাইরে রাখতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ শুরু হয়।

চট্টগ্রামে অবস্থিত দেশের একমাত্র PRTC ল্যাব খোলা রাখার বিষয়ে বিপিআইসিসি’র সভাপতিসহ পোল্ট্রি নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে বিগত কয়েকদিনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব, যুগ্ম-সচিব, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ভেটিরিনারি মেডিসিন অনুষদের সাথে আলোচনা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন- যত দ্রুততার সাথে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

তিনি আরো বলেন- বিগত সময়ে এ ধরনের সংকটকালীন সময়ে যেভাবে গাড়ির সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে পোল্ট্রির গাড়ি চলাচল করেছে সেভাবে ব্যানার লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

মসিউর আরও বলেন-  ‘পিআরটিসি’ ল্যাব বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। ল্যাব খোলা রাখার বিষয়ে গত কয়েকদিনে যুগ্ম-সচিব, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা হয়েছে এবং আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”

বিপিআইসিসি’র সভাপতি বলেন- আমরা চরম এক সংকটের মধ্যে পড়েছি। সবাইকে সতর্কতার সাথে চলতে হবে। সবাইকে ধৈর্য্য ধারন করতে হবে। এবং পরবর্তী করণীয় বিষয়ে এখন থেকেই চিন্তাভাবনা শুরু করতে হবে। আমরা কেউই একা একা করোনা-পরবর্তী প্রভাব মোকাবেলায় সামলে উঠতে পারবো না। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। মহা এ সংকট থেকে মুক্তির জন্য তিনি মহান রাব্বুল আ’লামীনের কাছে রহমত প্রার্থনা করেন।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৬মার্চ২০