লিচুর ফল ফেটে যাওয়া রোগটি দেখা দিলে লিচু চাষিরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। বিভিন্ন কারণে লিচুর ফল ফেটে যাওয়া রোগটি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে চাষকৃত লিচুর জাতগুলোর মধ্যে বোম্বাই লিচুতে ফল ফেটে যাওয়া রোগের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
রোগের বিস্তার:
সাধারণত আগাম জাতের লিচুতে ফল ফেটে যাওয়া সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। দীর্ঘ খরার পর হঠাৎ বৃষ্টি, শুষ্ক ও গরম আবহাওয়ার ফলে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। বেলে দোঁআশ বা পলি মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা অনেক কম বিধায় এই ধরণের মাটিতে লিচু বাগান হলে ফল ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও লিচু বাগানের মাটিতে বোরণ ও ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে এই রোগের দ্রুত বিস্তার হয়ে থাকে।
রোগের লক্ষণ:
অনেক দিন ধরে খরা চলতে থাকলে ফলের বাহিরের খোসা শক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে হঠাৎ করে বৃষ্টি হলে ফলের বৃদ্ধি শুরু হয় অর্থাৎ লিচুর পাল্প দ্রুত বাড়তে থাকে। বাহিরের খোসা শক্ত থাকায় ফলের ভিতরের অংশের সাথে তা সুষমভাবে দ্রুত বাড়তে না পারার কারণে লিচুর খোসা ফেটে যায়। ফল ফেটে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি খুব তাড়াতাড়ি হয়ে থাকে এবং ফেটে যাওয়া জায়গাতে দ্রুত রোগ-জীবানুর আক্রমণ হতে পারে।
ফল ফাটা রোগের প্রতিকার:
লিচু গাছে বছরে ৩ কিস্তিতে অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে, বর্ষার শেষে এবং শেষ কিস্তি গাছে ফুল আসার পর গাছের বয়স অনুসারে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার সুষম মাত্রায় দিতে হবে।
এছাড়া আরো কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন-
খরা মৌসুমে ফল ধারার পর থেকেই ১০-১৫ দিন পর পর লচু গাছে নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
সেচ প্রদানের পর প্রয়োজনে গাছের গোড়ায় কচুরিপানা বা খড় দ্বারা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রতি বছর প্রতি গাছের গোড়ায় ক্যালসিয়াম সার (ডলোচুন – ৫০ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে।
ফল বৃদ্ধির সময় জিংক সালফেট ১০ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে ২১ দিন পর পর গাছে স্প্রে করতে হবে।
গুটি বাধার পর পরই প্লানোফিক্স বা মিরাকুলান প্রতি ৪.৫ লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
বোরিক এসিড বা সলুবোর বোরণ ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর অন্তর ৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৩এপ্রিল২০