পুকুরের মাছকে উকুনের হাত থেকে রক্ষা করার উপায়

3307

পুকুরের মাছকে উকুনের হাত থেকে রক্ষা করার উপায় না জানলে মাছ চাষে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। পুকুরে মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে অনেক সময় উকুনের আক্রমন লক্ষ্য করা যায়। মাছের পরজীবীগুলোর মধ্যে উকুন অন্যতম। সঠিক সময়ে মাছের উকুনের উপদ্রপ কমানো না গেলে মাছ চাষে অনেক সময় লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। চলুন তাহলে জেনে নেই পুকুরের মাছকে উকুনের হাত থেকে রক্ষা করার উপায় সম্পর্কে-

পুকুরের মাছকে উকুনের হাত থেকে রক্ষা করার উপায়ঃ
মাছের উকুন হওয়ার কারণঃ

১। পুকুরে জৈবিক পদার্থ বেশি থাকলে।

২। অতিরিক্ত গোবর ও লিটার ব্যবহার করলে।

৩। অন্য পুকুরের আক্রান্ত মাছ মজুদ করলে।

৪। আক্রান্ত পুকুরে ব্যবহারিত জাল ভাল পুকুরে ব্যবহার করলে।

৫। চিটাগুড় ও ঈষ্ট দিয়ে ফার্মেন্টশন করা খাবার বা সার বৃষ্ঠির দিনে অথবা শীতকালে প্রয়োগ করলে ।

উকুন থেকে মাছকে রক্ষার উপায়ঃ

যে পুকুরে অতিরিক্ত জৈব পদার্থ রয়েছে সে পুকুরটি শুকিয়ে কিছু কাঁদা উঠিয়ে নিতে হবে, শুকনো পুকুর প্রস্ততি কালে চুন ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পুকুরের মাটিকে শোধন করে নিতে হবে, পুকুরে সরাসরি গোবর বা লিটার ব্যবহার করা যাবে না।

উকুনে আক্রান্ত কোন মাছ মজুদ করা যাবেনা, অন্য পুকুরে ব্যবহারিত জ্বাল ভালভাবে শুকানো অথবা পটাশিয়াম মিশ্রিত পানিতে শোধন না করে ব্যবহার করা যাবেনা, শীতকালে মেঘলা বা বৃষ্ঠির দিনে কোন মতেই চিটাগুড় ও ঈষ্ট দ্বারা ফার্মেন্টশন করা খাবার বা সার পুকুরে প্রয়োগ করা যাবে না।

মাছের উকুনের চিকিৎসাঃ

উপরে বর্ণিত কি কারনে উকুন হয়েছে সেটা খুজে বের করতে হবে এবং সে কাজটি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রথমে শতকপ্রতি ২৫০ থেক ৩০০ গ্রাম চুন ও ২০০ গ্রাম লবন প্রয়োগ করবেন।
তারপরে শতকে ১ গ্রাম করে ভালমানের জীবাণু নাশক প্রয়োগ করবেন। পাশাপাশি প্রতি শতকে ৩ থেকে ৫ ফুট গভীরতায় ৩ মিলি করে কিলার আর্গুলাক্স, সুমিথয়ন, বা আইভারমেক্টিন গ্রুপের ঔষধ ব্যবহার করবেন। তিনদিন পরে আরেকটি ডোজ এবং সাতদিন পরে আরেকটি ডোজ দিতে ভূলবেন না।

পুকুরে কিছু শুকনো বাঁশের কঞ্চি বা গাছ পুঁতে দিবেন। উকুনের আক্রমনের ফলে যদি মাছের শরীরে বেশি ক্ষত দেখা দেয়, তাহলে সেটা শুকানোর জন্য প্রতিকেজি খাবারের সাথে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ঔষধ ৫ গ্রাম ভিটামিন সি ৩ গ্রাম মিশিয়ে ৭ দিন খাওয়াবেন। আক্রান্ত মাছের বেশির ভাগ চিকিৎসার পরেও মারা যায়, তাই এই রোগে প্রতিষেধকের চাইতে প্রতিরোধই সবথেকে ভালো উপায়।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৮এপ্রিল২০