‘ওপি’ নারিকেল গাছের ফলন পেতে সময় লাগে মাত্র আড়াই থেকে তিন বছর

1156

দেশে প্রচলিত বিভিন্ন জাতের নারিকেল গাছের ফলন পেতে ৬-৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়। এসব প্রতিটি গাছ থেকে নারিকেল পাওয়া যায় ৪০-৫০টি। তবে ভিয়েতনামের ‘ওপি’ নারিকেল গাছের ফলন পেতে সময় লাগে মাত্র আড়াই থেকে তিন বছর। সর্বোচ্চ পাঁচ ফুট উচ্চতার এ জাতের গাছে প্রথম কিস্তিতে নারিকেল ধরে ২০০-২৫০টি! ফলন পাওয়া যাবে ৪০-৫০ বছর।

শুধু নারিকেলই নয়। ওপি ডাবের পানি অত্যন্ত সুস্বাদু। গাজীপুরে অপার সম্ভাবনাময় ‘ওপি নারিকেল’ চাষে চাষিদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এতে ঘুচবে বেকারত্ব। এ জাতের নারিকেল গাছের উচ্চতা কম হওয়ায় সহজেই পরিচর্যার পাশাপাশি বালাই ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো. মেহেদী মাসুদ জানান, বরিশাল হটিকালচার নার্সারিতে ৫শ নারিকেল চারা রোপণ করা হয়েছিল। সেখানে মাত্র ২২ মাসেই গাছে ফুল ধরেছে। এ প্রকল্পের মেয়াদে ভিয়েতনাম থেকে ১০ লাখ ওপি নারিকেল চারা আনার পরিকল্পনা আমাদের আছে। ইতোমধ্যে ৬ লাখ চারা আনা হয়েছে। দেশে যখন ১০ লাখ মাতৃচারা হয়ে যাবে তখন এ গাছের ফল থেকে চারা উৎপাদন করে আমরা নিজেরাই চাষিদের মাঝে সরবরাহ করতে পারব। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের চাষিদের মাঝে ওপি নারিকেল বেশ সাড়া ফেলেছে।

অনেকেই চাষ শুরু করেছে। অপেক্ষাকৃত উঁচু ধানী জমির চারপাশেও ওপি নারিকেল চাষ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের পাশাপাশি ওপি নারিকেল চাষ হচ্ছে। এ জাতের নারিকেল সারা বছর ফল দেয়। একজন চাষির ১০টি ওপি নারিকেল গাছ থাকলে নারিকেল বিক্রি করে মাসে অন্তত ৫ হাজার টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে।

ভিয়েতনাম থেকে আনা প্রতিটি ওপি নারিকেল চারার সরকারি বিক্রি মূল্য ৫শ টাকা বলেও তিনি জানান। গাজীপুরের ভবানীপুর হটিকালচার নার্সারির উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, গাজীপুর ছাড়াও জেলার পার্শ্ববর্তী ভালুকা, ত্রিশালসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিদের প্রশিক্ষণের পর ওপি নারিকেলের বাগান তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন গত দুই বছরে গাজীপুরে প্রায় আড়াই হাজার চাষিকে ওপি নারিকেল চাষের ওপর প্রশিক্ষণ, ভাতা প্রদানসহ বিনামূল্য চারা বিতরণ করা হয়েছে। অনেককেই নারিকেল বাগান সৃজন করে দেওয়া হয়েছে। এ হটিকালচার নার্সারিতে মোচন্ডা, রঙ্গ ও সাইকা ফুলের চাহিদা রয়েছে।

বারোমাসি মিষ্টি স্বাদের আম, বোম্বে ও চায়না থ্রি জাতের লিচু চারারও চাহিদা রয়েছে। নার্সারিটি থেকে প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার লিচু চারা বিক্রি হয়। প্রতিটি চারার মূল্য ৪৫ টাকা। প্রতি বছর প্রায় ৬-৭ লাখ টাকার বিভিন্ন জাতের চারা বিক্রি হচ্ছে। এ নার্সারি ছাড়াও কালিয়াকৈরের মৌচাক হটিকালচার নার্সারিতে ওপি নারিকেল চারা বিক্রি হচ্ছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১০মে২০