হরিকেন পদ্ধতির একমাত্র তাপ পরিমাপ যন্ত্র থার্মোমিটার ছাড়া আর সবই দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। ডিম উৎপাদনের জন্য ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রা গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করা হয়। ভয়ের কারন নেই, এই তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ওঠানামা করলেও সমস্যা হয়না।
৯শ ডিমের জন্য একটি কাঠের বাক্সের পরিমাপ হল- দৈর্ঘ্য ৫ ফুট, প্রস্থ ৩ ফুট ও উচ্চতা ৩২ ইঞ্চি। উপর দিক খোলা এই বাক্সে দুইটি বাঁশের চটির তৈরি সিলিন্ডার যা দেখতে অনেকটা তেলের ড্রামের মতো। সিলিন্ডারের ব্যাস ১৮ থেকে ১৯ ইঞ্চি এবং উচ্চতা হবে অনধিক ২৭ ইঞ্চি। কাঠের বাক্সে ৫ ইঞ্চি পরিমান দেশীয় ধানের মোটা তুষ বিছিয়ে পাশাপাশি সিলিন্ডার দুইটি বসিয়ে দিতে হয়। এর ফলে সিলিন্ডারের বাহির অংশ ও বাক্সের ভিতর অংশে সৃষ্ট ফাঁকা বর্ণিত মোটা তুষ দিয়ে পূর্ণ করে দিতে হয়।
বাক্স তৈরী হয়ে গেলে উর্বর ডিম বাছাইয়ের পালা। সঠিকভাবে প্রজনন হয়েছে এ রকম মাঝারি সাইজের ডিমকে উর্বর ডিম বলে। ডিম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অধিক বড় এবং একবারেই ছোট ডিম এরিয়ে যাওয়া ভাল। ডিম গুলো স্যাভলন দিয়ে পরিস্কার করতে হয় যাতে ডিমে মল কিংবা অন্যান্য মাটি-ময়লা না থাকে। পরিস্কার করা ডিম রঙ্গিন কাপড়ের পুটলিতে ২৫ থেকে ৫০ টি ভরে মুঠি বাঁধতে হয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন ডিম গুলো যাতে পুটলির মুঠি ধরে নিচ থেকে উপরে চাপ দিলে ভিতরে রাখা ডিম গুলো সহজেই ঘুরতে পারে। এভাবে একই মাপের একটি বক্সের একটি সিলিন্ডারে প্রায় ৯শ ডিম সাজিয়ে অপর সিলিন্ডারে কেরোসিনের চালিত একটি হ্যারিকেন রাখতে হয় এবং ডিম বসানোর পরে পাটের মোটা চট দিয়ে ঢেকে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ডিম গুলো শুরু থেকে ১৬ দিন পর্যন্ত প্রতি ৫ থেকে ৬ বার উপরের ডিম নিচে আর নিচের ডিম উপরে রেখে উল্টেপাল্টে দিতে হবে আর হ্যারিকেনের সিলিন্ডার পরিবর্তন করতে হবে। থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হয়। তাপমাত্রা বেশী হলে হাতপাখা দিয়ে বাতাস দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এছাড়াও সিলিন্ডারের মুখ খোলা রেখে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
১৬ দিনের পর ডিম গুলো কাঠের ওপরে ৫ ইঞ্চি পরিমানের তুষের বিছানা বা লিটার তৈরী করে একে একে ডিম গুলো পাশাপাশি বসাতে হবে এবং মোটা পাঁটের চট দিয়ে ঢেকে দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে তাপমাত্রা যেন পূর্বের মতোই হয়। ডিমে বাচ্চা আসার কারনে ডিমে সয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়। এ সময় বিছানায় থাকা ডিম গুলো ২ঘন্টা পর পর নাড়াঁচাড়া করে দিতে হয় যাতে করে বাচ্চা খোলস ভেঙ্গে বেরুতে সহজ হয়।
প্রতি ক্ষেত্রেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যাতে নাড়াঁচাড়া করতে গিয়ে ডিম ফেঁটে বা ভেঙ্গে না যায়। এভাবে পরিচর্যা করলে ২৬ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে পূর্ণ বাচ্চা পাওয়া যায়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৭জুলাই২০