বর্তমানে পেঁপে চাষ অনেক জনপ্রিয়। অধিক লাভজনক বিধায় অনেক শিক্ষিত যুবক পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছে। নতুন খবর হোল এবার মাটি ছাড়াই উৎপাদন করা যাবে উচ্চফলনশীল পেঁপের চারা।
পেঁপের চারা উৎপাদনে এখন আর মাটি নয়। মাটি ছাড়াই চলছে পেঁপের চারা উৎপাদন। বগুড়ায় শাজাহানপুরে পেঁপের (Papaya) চারা উৎপাদনে মাটির পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে কোকো ডাষ্ট (নারিকেলের ছোবড়া’র ধুলা)। শুধু পেঁপেই নয় এই পদ্ধতিতে আরও চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার সবজির।
নেট হাউজের ভিতরে চারা উৎপাদনের ফলে মাটি ও বায়ুবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাচ্ছে এসব চারা। প্রতিটি গাছেই পেঁপে ধরবে। এসব চারা গাছ প্রতি পিছ ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চারা উৎপাদনের আধুনিক এই প্রযুক্তি সবজি চাষিদের কাছে যেন এক নতুন দিগন্ত।
বগুড়া জেলার শাজাহানপুরে হাইব্রিড পেঁপে চারা উৎপাদন শুরু করেন শাহ্ নগর গ্রামের আমজাদ হোসেন এবং মাদলা গ্রামের রেজাউল করিমসহ কয়েকজন। গত বছর ৮ থেকে ১০ হাজার চারা উৎপাদিত হয়।
এসব চারায় পেঁপে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন জোঁকা গ্রামের আবু জাফর মাস্টার, শাহ্নগর গ্রামের আব্দুস সালাম, দুরুলিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম। তারা চলতি বছরেও পেঁপে চাষ শুরু করেছেন। অপরদিকে শাজাহানপুরে উৎপাদিত হাইব্রিড পেঁপে চারা আশপাশের এলাকা ছাড়িয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে সিলেট, ফেনী, পিরোজপুর, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
চারার চাহিদা বাড়ায় চারা উৎপাদনকারী নার্সারির সংখ্যাও বেড়েছে। এ বছর শাহ্নগর গ্রামে ‘কৃষি সেবা ট্রে-নার্সারি’, ‘ফাইম নার্সারি’, ‘তোহা নার্সারি’ এবং মাদলা গ্রামে ‘নাফিসা ট্রে-নার্সারি’ তে ‘ফাস্ট লেডি’ নামের উন্নত জাতের হাইব্রিড পেঁপে চারা উৎপাদন চলছে।
নার্সারি মালিক আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে মাটি ছাড়া কোকো ডাষ্ট-এ চারা উৎপাদনের আধুনিক কলাকৌশলের ব্যবহার প্রথম শুরু হয় রংপুরে। এরপর শাজাহানপুরে শুরু হওয়ায় বগুড়া হল এ প্রযুক্তি ব্যবহারে দ্বিতীয় জেলা। নেট হাউজ থাকায় প্রখর রোদ, কীট-পতঙ্গ ও পোকা-মাকড়ের হাত থেকে চারাগাছ রক্ষা পায়।
তিনি আরও বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে একই জমিতে বার বার চারা উৎপাদন করায় জমিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। উৎপাদিত চারা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। এতে লোকসান গুণতে হয় নার্সারি মালিকদের। সবজি উৎপাদনেও ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা।
শাজাহানপুরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম জানান, চারা উৎপাদনের আধুনিক এ প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে নার্সারি মালিক ও সবজি চাষিরা দারুণ ভাবে লাভবান হবেন। অন্যদিকে মাটির উর্বরতা হ্রাস এবং রোগ বালাইয়ের কারণে সবজি উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে না।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২১জুলাই২০