কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অতিবর্ষণ ও আগাম বন্যায় এবছর পাটের ফলন কমেছে। তবে পাটের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকদের সে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এখন পাট কাটা শেষে পাটপচন ও পাট ধোয়া এবং পাট শুকিয়ে তা বিক্রয় করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষানীরা। কুষ্টিয়ায় চলতি মৌসুমে ৩৯ হাজার ৫১৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এরমধ্যে দৌলতপুরে চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে।
গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবছর সোনালী আঁশ খ্যাত পাট চাষের দিকে জোর দিয়েছিল কৃষকরা। তবে অতিবর্ষন ও আগাম বন্যার কারনে পাট পরিপক্ক হওয়ার আগেই তা কেটে নিতে হয়েছে। ফলে বিঘা প্রতি পাটের ফলন ১ থেকে ২ মন কম হচ্ছে। তাই লাভের অংশও কমে যাচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে এবছর পাট চাষে খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। ফলন কম হওয়ায় বিঘা প্রতি পাট হচ্ছে ৬ থেকে ৮ মন। খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি কৃষকদের লাভ হচ্ছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।
কোনক্ষেত্রে আরও কম। পাশাপাশি অতিবর্ষনে বিভিন্ন জলাশয়ে রক্তচোষা জলজপ্রাণী জোক বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকেদের পাট ধোয়া কষ্টকর হচ্ছে।
দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত এলাকার কৃষক সেন্টু, আবেদ আলী ও কাবিল হোসেন জানান, আগাম বন্যা আর অতিবর্ষনে এ বছর পাট পরিপক্ক হওয়ার আগেই কেটে তা জাগ দিতে হয়েছে। ফলে এবছর পাটের ফলন অনেক কম হয়েছে। তবে পাটের দাম ভাল পাওয়ার কারনে লোকসান গুনতে হচ্ছে না।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডলও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন এবছর আগাম বন্যা ও বর্ষার কারনে পাটের ফলন কম হচ্ছে।
দৌলতপুর কৃষি অফিসার এ কে এম কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, এবছর ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টির কারনে পাটের গ্রোথটা কম হয়েছে। ফলে পাটের ফলনও কম হচ্ছে। তবে পাটের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় সেটা পুষিয়ে নেয়ার সম্ভব হচ্ছে কৃষকদের। বিগত বছরগুলো সোনালী আঁশ পাট ছিল কৃষকদের গলার কাটা। কিন্তু গত দু’বছর ধরে কৃষকরা পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় সে কাটা এখন গলার মালায় পরিণত হয়েছে। আর এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে সে দিকটা খেয়াল রাখার দাবি কৃষকদের।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৫আগস্ট২০