মানসম্মত খামার ব্যবস্থাপনার অন্যতম উদ্দেশ্য খামারে পালিত মুরগিকে সুস্থ রাখা ও মুরগিকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা। মুরগি সুস্থ থাকলে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাংখিত উৎপাদন পাওয়া খামার পরিচালোনার মূল লক্ষ্য। খামার পরিচালোনা করলে সবাইকে বিশ্বাস করতেই হবে, “Prevention is better than cure” । কিন্তু বাস্তবতা অনেকাংশেই ভিন্ন। সুষ্ঠ পরিকল্পনা ছাড়াই দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে অনেক পোলট্রি খামার এবং এখনো তা’ চলমান রয়েছে। অনেকেই বাড়ির ছাদে,ঘরের বারান্দায় কিংবা ঘরের কোন এক কোণায় স্বল্প সংখ্যক বাচ্চা তুলে নাম রাখা রেখেছে পোলট্রি খামার; যা সরকারী বিধি-বিধানের আওতায় পরে না। অনেকেই খামার ব্যবস্থাপনার বিধান না বুঝেই বাণিজ্যিক মুরগির সাথে কিছু সংখ্যক গৃহপালিত / ব্যাকইয়ার্ড পোলট্রি কিংবা খামারের মুরগি বিক্রয়ের পর শখের বশবর্তী দু-চারটে মুরগি রেখে নতুন মুরগির সাথে পালন করেন যা রোগের বাহক হিসাবে কাজ করতে পারে । কিন্তু বিধান অনুযায়ী এ ধরনের খামার ব্যবস্থাপনা
কখনোই কাম্য নয়। এভাবে মুরগি পালন খামারের জীব-নিরাপত্তার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ । এমতঃবস্থার মধ্যেও সুপরিকল্পিতভাবে কিছু সংখ্যক আধুনিক মানের পোলট্রি খামার গড়ে উঠলেও সেগুলোও থাকছে সর্বদা ঝুকির মধ্যে।
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা দূর্বল ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন পোলট্রি খামার সমূহ রোগ জীবাণু উৎপাদনের অন্যতম উৎস। অদক্ষ খামার ব্যবস্থাপনার জন্য এসব খামার থেকে রোগ জীবাণু সমূহ বিভিন্ন স্থানে দ্রুত বিস্তার লাভ করে। বেশিরভাগ খামারির ছোঁয়াচে ও সংক্রামক রোগ সমন্ধে সঠিক ধারণা না থাকায় রোগের বিস্তার আরো সহজ হয়। এছাড়াও কিছু রোগ রয়েছে যা অপুষ্টিজনিত রোগ হিসাবে বিবেচ্য।
পোলট্রি খামারে রোগ উৎপত্তির কারণ
১। দূর্বল জীব-নিরাপত্তা (Weak Bio-security) ,
২। অপর্যাপ্ত খামার ব্যবস্থাপনা সুবিধাদি (Inadequate
farm management facilities) ,
৩। একই শেডে বিভিন্ন বয়সের মুরগি একত্রে পালন (Multiage
flock rearing in a same shed) ,
৪। ধকল বা পীড়ন (stress) ,
৫। দূর্বল বায়ু প্রবাহ (Poor ventilation) ,
৬। পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থকর পরিবেশের অভাব (Lack
of sanitation and hygiene) ,
৭। দূর্বল টিকাদান কর্মসূচি ও নিম্নমানের ভ্যাকসিন (Weak
vaccination programme and low quality vaccine) ,
৮। দূষিত খাদ্য ও পানি (Contaminated feed and
water)
,
৯। সীমিত স্থানে অধিক সংখ্যক মুরগি পালন (Over
crowding)
,
১০। লিটার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ও সর্বোপরি অদক্ষ ব্যবস্থাপনা (Miss
management of litter and overall inefficient management) ।
এছাড়াও কিছু সংক্রামক জনিত কারণ বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া , ভাইরাস , ছত্রাক,মোল্ড, প্রোটোজোয়া, প্যারাসাইট ও অপুষ্টিজনিত সমস্যা মুরগির খামারে সরাসরি রোগ উৎপাদন করে। আবার বিজ্ঞানসম্মত নয় এমন আরো কিছু দূর্বল ব্যবস্থাপনা রয়েছে যা অজ্ঞতাবশতঃ ঘটে থাকে যা মুরগির খামারে রোগ উৎপাদন ও বিস্তারে ভূমিকা রাখে। যেমন – অযাচিতভাবে খামার পরিদর্শন, অনাকাংখিতভাবে খামারে দর্শনার্থীর ভীর, অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে খামার মালিকের অবহেলা ও খামখেয়ালীপনা মনোভাব ইত্যাদি ।
রোগ সংক্রমণের ধরণ
খামারে রোগ জীবাণু সংক্রমণের অনেক মাধ্যম রয়েছে। সংক্রামক রোগ জীবাণু সমূহ এক শেড থেকে অন্য শেডে , এক খামার থেকে অন্য খামারে এমনকি এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় কোন না কোন মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। অবশ্য সুদক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংক্রামক
রোগ সমূহের সংক্রমণ রোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। খামারে পালিত মুরগির রোগ সমূহ সাধারণত কিভাবে সংক্রামিত ও ট্রান্সমিশন হতে পারে তা’ নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো –
১। ডিম বাহিত ট্রান্সমিশন (Egg-
borne transmission/vertical transmission)
: –
ডিম বাহিত রোগ সমূহকে ট্রান্সওভারিয়ান রোগওবলা হয়। নিম্নে কতিপয় ট্রান্সওভারিয়ান রোগের তালিকা বর্ণিত হলো যা ভ্রুণের মাধ্যমে ট্রান্সমিশন হয় –
ক) সালমোনেলোসিস (Salmonellosis) ,
খ) মাইকোপ্লাজমোসিস (Mycoplasmosis) ,
গ) এভিায়ান লিউকোসিস (Avian Leucosis) ,
ঘ) ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস (Infectious bronchitis) ,
ঙ) এভিয়ান এনসেফালোমাইলাইটিস (Avian Encephalomyelitis) ,
চ) এভিয়ান এডিনো ভাইরাস ইনফেকশন (Avian adeno
virus infection) ,
ছ) এভিয়ান রিও ভাইরাস ইনফেকশন (Avian Reo virus infection) ,
জ) ফাউল টাইফয়েড (Fowl Typhoid) ,
ঝ) রাণীক্ষেত রোগ (Ranikhet disease) ,
এ সমস্ত রোগের বিস্তার প্রতিরোধে ব্রিডার ও হ্যাচরী মালিকদের বিশ্বস্ত ও আন্তরিকতার সহিত বিশেষ যত্নশীল হওয়া উচিৎ।
২। হ্যাচারী বাহিত
সংক্রমণ (Hatchery
borne infection) : —
মুরগি যে পথ দিয়ে মল-মূত্র ত্যাগ করে তাকে “ ক্লোয়েকা (Cloaca) “ বলে। ক্লোয়োকে সাধারণত “কমন ওপেনিং (Common opening) “ বলা হয়। এ “কমন ওপেনিং” এর মাধ্যমে মোরগ-মুরগী যৌন ক্রিয়া সম্পন্ন করে এবং এ “কমন ওপেনিং” দিয়েই মুরগী ডিম পাড়ে। মুরগির
ডিম পাড়ার সময় ডিম মুরগির বিষ্ঠার (Faeces) সংস্পের্শে এসে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এছাড়াও ডিম রাখার ট্রে ও লিটারের সংস্পর্শে এসেও ডিমের শেল জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। মুরগির অনেক রোগ জীবাণু আছে যা ন্যাজাল সিক্রেশন (Nasal Secretion) ও বিষ্ঠার মাধ্যমে মুরগির দেহ থেকে বের হয়ে তা’ ডিমে সংক্রমিত হয়। এ জাতীয় সংক্রমণকে হ্যাচারী বাহিত সংক্রমণ বলে। নিম্নে এ জাতীয় রোগ জীবাণু সমূহের নাম উল্লেখ করা হলো –
ক) স্ট্যাফাইলোকক্কোসিস (Staphylococcosis) ,
খ) স্ট্রেপটোকক্কোসিস (Streptococcosis) ,
গ) এ্যাসকারেসিয়া কোলি ইনফেকশন (E.Coli infection) ,
ঘ) প্রোটিওসিস (Proteosis) ,
ঙ) সালমোনেলোসিস (Salmonellosis) ,
চ) এসপারজিলোসিস (Aspergillosis) বা ব্রুডার নিউমোনিয়া ,
ছ) ক্যানডিডিয়াসিস (Candidiasis),
জ) ক্লস্ট্রিডিয়াল ইনফেকশন (Clostridial infection) ।
যথাযথ হ্যাচারীর অবকাঠামো নির্মাণ , ব্রিডার ফ্লোক ব্যবস্থাপনা , হ্যাচারী ব্যবস্থাপনা, হ্যাচিং এর জন্য উপযুক্ত ডিম বাছাই ও সঠিকভাবে ডিমের গ্রেডিং করার মাধ্যমে এজাতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব ।
৩। হ্যাচারী থেকে মুরগির খামারে রোগ জীবাণু ট্রান্সমিশন কিছু কিছু রোগ জীবাণু আছে যা হ্যচারীতে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং হ্যচিং এর সময় তা নতুন বাচ্চায় সংক্রামিত হয়ে হ্যাচারী থেকে বিভিন্ন খামারে খামারে ছড়িয়ে পরে। এজাতীয় রোগ জীবাণু সমূহের মধ্যে —
ক) ব্রুডার নিউমোনিয়া বা এ্যাসপারজিলোসিস (Brooder
pneumonia or Aspergillosis),
খ) অমফ্যালাইটিস (Omphalitis) ,
গ) স্ট্যাফাইলোকক্কোসিস (Staphylococcosis) ।
স্বাস্থ সম্মত হ্যাচারী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ জাতীয় রোগ জীবাণুর প্রাদূর্ভাব রোধ করা সম্ভব।
৪। খামার স্থায়ীভাবে রোগ জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত বিশেষ করে পুরানো খামার কিংবা খামখেয়ালীপূর্ণ দূর্বল ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন খামার ও তদসংলগ্ন এলাকা ,খামার পরিচালনা সংক্রান্ত উপকরণাদি কিছু কিছু রোগ জীবাণু দ্বারা স্থায়ীভাবে সংক্রমিত থাকে। এ সমস্ত খামারের মুরগি সর্বদাই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে ও অতি অল্প বয়সের বাচ্চাকে খুব সহজে আক্রান্ত করে। এ জাতীয় রোগ জীবাণু সমূহের
মধ্যে –
ক) গামবোরো রোগ (Gumboro disease) ,
খ) সালমোনেলোসিস (Salmonellosis) ,
গ) মারেক’স ডিজিজ (Marek’s disease) ,
ঘ) স্ট্যাফাইলোকক্কোসিস (Staphylococcosis) ,
ঙ) ই. কোলি ইনফেকশন (E.Coli infection) ,
চ) রক্ত আমাশয় (Coccidiosis)
বিজ্ঞানভিত্তিক ও উপযুক্ত স্বাস্থসম্মত বিধিব্যবস্থার মাধ্যমে গুণগত মানের জীবাণু নাশক প্রয়োগ করে ফলপ্রসূভাবে এ জাতীয় রোগের প্রাদূর্ভাব ঠেকানো সম্ভব।
৫। বায়ু বাহিত সংক্রমণ
মুরগির শ্বাসতন্ত্রের প্রতি সংবেদনশীল এমন কতিপয় রোগ জীবাণু আছে যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে পরিবেশের বায়ুকে দূষিত করে ও পরবর্তীতে তা বায়ু দ্বারা বাহিত হয়ে সুস্থ মুরগিকে আক্রান্ত করে। এ জাতীয় রোগ জীবাণু সমূহের মধ্যে –
ক) মাইকোপ্লাজমোসিস (Mycoplasmosis) ,
খ) রাণীক্ষেত রোগ (Newcastle disease) ,
গ) ইনফেকশাস ল্যারিনগোট্রাকিআইটিস (Infectious
Laryngotracheitis) ,
ঘ) ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস (Infectious Bronchitis) ,
ঙ) এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (Avain Influenza) ।
এ জাতীয় রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থসম্মত বিধিব্যবস্থা ও কঠোর জীব-নিরাপত্তা বিধি মেনে মুরগি পালন করতে হবে ও সঠিক সময়ে মানসম্মত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
৬। জীবাণু বাহক বয়স্ক মোরগ-মুরগী
খামারে পালিত মুরগি কতিপয় রোগ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর পূণরায় সুস্থ হলেও ঔ সমস্ত জীবাণু মুরগির দেহে কোন কোন সময় সুপ্তাবস্থায় থেকে যায় এবং সুযোগ বুঝে রোগের বাহক হিসাবে কাজ করে। বিশেষ করে সুস্থ মুরগি যে কোন ধরণের ধকল বা পীড়নজনিত কারণে বয়স্ক বাহক মুরগির মাধ্যমে অতি সহজে আক্রান্ত হতে পারে। নিম্ন লিখিত রোগ জীবাণু সমূহ বয়স্ক বাহক মুরগির মাধ্যমে সুস্থ মুরগি কিংবা সুস্থ খামারে ছড়িয়ে যেতে পারে—
ক) মাইকোপ্লাজমোসিস (Mycoplasmosis) ,
খ) ফাউল টাইফয়েড (Fowl typhoid) ,
গ) ইনফেকশাস কোরাইজা (Infectious Coryza) ,
ঘ) সালমোনেলোসিস (Salmonellosis) ,
ঙ) ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস (Infectious Bronchitis) ,
চ) ইনফেকশাস ল্যারিনগোট্রাকিআইটিস (Infectious
Laryngotracheitis) ,
ছ) রাণীক্ষেত রোগ (Newcastle disease) ,
জ) উকুন, আটালি, মাইট এর প্রাদূর্ভাব (Lice
, Tick, Mite infestation) ।
এ জাতীয় রোগ জীবাণুর সংক্রমণ থেকে খামারের মুরগিকে রক্ষা করতে হলে বাহক মুরগিকে কোন ভাবেই নতুন বাচ্চা মুরগির (Day old সংস্পর্শে আসতে দেওয়া যাবে না। এমনকি খামারের সুস্থ মুরগি যাতে বাহক মুরগির নাগালে না আসতে পারে সে বিষয়ে সদা
সতর্কদৃষ্টি রাখতে হবে।
৭। মিকানিক্যাল
বাহক (Mechanical
carrieror or vector) :–
কোন রকম পূর্ব লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াই অজ্ঞতা বশতঃ কোন মাধ্যমে এক এলাকার রোগ জীবাণু অন্য এলাকায় বাহিত হওয়াকে মিকানিক্যাল বাহক বা ভেক্টোর বলে। শ্বাসতন্ত্রীয় অধিকাংশ রোগ এবং বহিঃ পরজীবীসহ কিছু সংখ্যক ছোঁয়াচে রোগ বিশেষ করে রাণীক্ষেত রোগ,গামবোরো রোগ , মাইকোপ্লাজমোসিস ইত্যাদি ভেক্টোরের (Vector) মাধ্যমে বাহিত হয়। যেমন –
ক) খামারের যন্ত্রপাতি খামারে কখন আকশ্মিকভাবে রোগের প্রাদূর্ভাব ঘটলে খামারে ব্যবহৃত সকল প্রকার যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ডিমের ট্রে, মুরগি পরিবহণের খাঁচা, পিক-আপ ভ্যান, মুরগি ক্রেতা-বিক্রেতা ইত্যাদির মাধ্যমে এক খামারের জীবাণু অন্য খামারে এমনকি এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে যেতে পারে।
খ) মানব বিভিন্ন ধরণের ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন বিশেষ করে পোলট্রি খামার পরিদর্শক,সরবরাহকারী,সরকারী প্রতিনিধি,পোলট্রি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন খামার পরিদর্শন করে থাকেন। এছাড়াও খামারে নিয়োজিত ব্যবস্থাপক,খামার পরিদর্শক এবং খামারে কর্তব্যরত কর্মচারীসহ খামারের অন্যান্য কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্রক্তিবর্গের মাধ্যমে এক খামারের জীবাণু অন্য খামারে বাহিত হতে পারে।
মানবতা প্রদর্শনকারী ব্যাক্তিবর্গ খামারের ভেতরে কিংবা বাহিরে ঘোরা-ফেরার মাধ্যমে রোগ জীবাণু বহণ করতে পারে ও তাদের মাধ্যমে মুরগি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যেমন—
১। মুরগির শ্বাষতন্ত্রের প্রতি সংবেদনশীল এমন জীবাণু সমূহ পরিবেশে বিদ্যমান থাকায় তা সহজেই পরিধেয় বস্ত্র ,হাত , পা ইত্যাদির মাধ্যমে খামারে ছড়িয়ে পরতে পারে।
২। আক্রান্ত মুরগির বিষ্ঠা ও লিটারের জীবাণু সমূহ পায়ের জুতোর মাধ্যমে এক শেড থেকে অন্য শেডে, এক খামার থেকে অন্য খামারে, এক এলাকা থেকে অন্য এরাকায় অতি সহজে ছড়িয়ে যেতে পারে।
গ) বিবিধ
গলিত পচা মাংস ভোজী প্রাণি বিশেষ করে কুকুর, শেঁয়াল, বন্য বিড়াল, বন্য পাখি ইত্যাদি যারা মৃত মুরগির মাংস ভক্ষণ করে তাদের মাধ্যমে নিকটবর্তী খামারে অতি দ্রুত রোগ জীবাণু ছড়িয়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও কতিপয় মশক এর মাধ্যমে ফাউল পক্স, গামবোরো রোগ স্থানান্তরীত হয়। পরজীবী আটালির মাধ্যমে স্পাইরোকিটোসিস রোগের বিস্তার ঘটে। ইঁদুর ও বন্য পাখির মাধ্যমেসালমোনেলা , ফাউল কলেরা রোগের জীবাণুসহ উকুন, মাইট, ও ফ্লি এর বিস্তার ঘটে।
ঘ) দৈনন্দিন দূষন ঘটার মাধ্যমে দৈনন্দিন সরবরাহকৃত খাদ্য ও পানি দূষন হওয়ার মাধ্যমে খামারে দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পরে। খাদ্য সংরক্ষণে সমস্যা হলে বিশেষ করে ভূট্টা ও গম জাতীয় খাদ্যে অতি সহজে ছত্রাক ও মোল্ড জন্মায়। ছত্রাক ও মোল্ড (Fungus and mould) মুরগির স্বাস্থের জন্য খুবই ক্ষতিকর। পোলট্রি খাদ্যে ছত্রাক বা মোল্ড জন্মিলে তা খেয়ে মুরগির দেহে আফলাটক্সিকোসিস নামক রোগ দেখা দেয়। মুরগি আফলাটক্সিকোসিস রোগে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। খাদ্যে সরবরাহকৃত ফিসমিল দূষিত হলে সে খাদ্যে সালমোনেলার জীবাণু সহজে বংশ বিস্তারলাভ করে। পানি দূষিত হলে ই.কোলি ইনফেকশন, হিমোফিলাস প্যারাগ্যালিনেরাম, পাসচ্যুরেলা জীবাণুর বিস্তার অতি সহজে ঘটতে পারে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৪আগস্ট২০