গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজ। এই গরমে তৃষ্ণা মেটাতে তরমুজের কোনো জুড়ি নেই। আছে অনেক স্বাস্থ্যগুণও। রসালো এই ফল খুলনার ডুমুরিয়ায় কৃষি খামারের মাচায় চাষ হচ্ছে।
বিদেশি জাতের হলুদ তরমুজটি বারোমাসই চাষ করা যায়। রং বদলালেও এই তরমুজের স্বাদ কিন্তু বদলায়নি বরং এ তরমুজ আরো মিষ্টি ও সুস্বাদু।
তবে অসময়ে হলুদ তরমুজ চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ইলিয়াস মোল্লা। সারাক্ষণ তাকে তরমুজের গাছগুলো পাহারা দিতে হচ্ছে। মুহূর্তের জন্য সেখান থেকে সরে গেলে চুরি হয়ে যাচ্ছে তরমুজ।
জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামের কৃষক ইলিয়াস মোল্লা দুই বিঘা ঘেরের চার পাড়ে তিনি এবার তরজুজের চাষ করেছিলেন। যেখানে তিন প্রজাতির তরমুজের গাছ লাগিয়েছিলেন। হলুদ তরমুজ, কালো তরমুজ ও সাদা তরমুজ। সবগুলো প্রজাতির তরমুজের ফলও ভালো হয়েছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত তার গাছগুলো থেকে তরমুজ চুরি হয়ে যাচ্ছে। সারাক্ষণ পাহারায় থাকতে হয় তাকে। তিনি ঘের ছেড়ে অন্য কোথাও গেলে তরমুজ চুরি হয়ে যায়।
কৃষক ইলিয়াস মোল্লা বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে তরমুজ চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছে। সব মিলে এবার প্রায় ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পেরেছি। আর চোরারা প্রায় ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার তরমুজ নিয়ে গেছে। নামাজ পড়তে গেলে অনেকগুলো তরমুজ চুরি হয়ে যায়। অনুমানিক প্রায় ২০ থেকে ৩০টি। পরে রাগ করে সব তরমুজ একসাথে বিক্রি করে দিয়েছি। এভাবে চুরি হতে থাকলে বিক্রি করবো কিভাবে।
ইলিয়াস মোল্লার ঘেরের পার্শ্ববর্তী কৃষকরা জানান, পাঁচপোতা গ্রামে ইলিয়াসও একমাত্র হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন। আর ডুমুরিয়া উপজেলায় আগে কখনো কেউ এই তরমুজ চাষ করেনি। তাই অনেকের নজর পড়েছে ইলিয়াছের তরমুজের উপর। তাছাড়া আশাপাশে সব ঘেরের পাড়ে এখন শিম গাছে ভরে গেছে। তাই কেউ ইলিয়াসের তরমুজ চুরি করতে আসলে সহজে বোঝা যায় না, দেখাও যায় না।
ইলিয়াস মোল্লার স্ত্রী রোহানা বেগম বলেন, বাজারে তরমুজের বীজ কেনার সময় জানতে পারি হলুদ জাতের এক ধরনের তরমুজ বীজ এসেছে। তারপর সেই বীজ এনে ঘেরের পাড়ে রোপণ করি। অনেক যত্ন নেয়ার পর গাছে ব্যাপক ফলন হয়। বাজারে দামও ভালো। কিন্তু তরমুজ পরিপক্ক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। প্রতিনিয়ত চোর একটি থেকে দুটি তরমুজ চুরি করতে শুরু করে। আমরাও পাহারা দিচ্ছিলাম। গত শুক্রবারে আমার স্বামী ও ছেলে নামাজ পড়তে গিয়েছিল। আমি ঘের থেকে বাড়িতে এসে রান্না করছিলাম। তখন অনেকগুলো তরমুজ চুরি হয়েছে। পরে রাগ করে সব তরমুজ বিক্রি করে দিয়েছি।
ডুমুরিয়া উপজেলার পাচপোতা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম মোল্লা বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে এই তরমুজ চাষ করা হয়। বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করতে মাচা তৈরি করতে হয়। আর শীতকাল বা অন্য সময়ে মাটিতেই তরমুজ চাষ করা যায়। প্রথমবার মাচা তৈরি করলে সেই মাচা এক বছর ব্যবহার করা যাবে। দ্বিতীয়বারের উৎপাদন খরচ কম হবে।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ
ফার্মসএন্ডফার্মার/২১সেপ্টেম্বর২০