গবাদি পশুর ক্ষুরা রোগ ও তার চিকিৎসা পদ্ধতি

948

প্রচলিত নামঃ

ক্ষুর পাকা, তাপরোগ, খুরুয়া, এঁসো, বাতা, জ্বরা প্রভৃতি। ক্ষুরা রোগ দ্বি-বিভক্ত ক্ষুরা বিশিষ্ট গবাদি পশুর একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুর মুখে এবং পায়ে ঘা হয় এবং দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

রোগের কারণঃ

এফথোভাইরাস গোত্রের ভাইরাস ক্ষুরা রোগের জন্য দায়ী। জীবাণুটির ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট হলো এর ৭ টি ভিন্ন ধরণের টাইপ রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত বৈশিষ্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নতুন ষ্ট্রেইন তৈরী করে। তাই টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য।

লক্ষণঃ

ক্ষুরা রোগের আক্রান্ত গবাদিপশুর দেহে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় (১০৪ F-১০৬ F), খাদ্য গ্রহণের অনীহা দেখা দেয় এবং শরীর অবশ হয়ে পড়ে। এ সময় মুখ মন্ডলরে অভ্যন্তরে প্রদাহ হয়। যার ফলে মুখের ভিতরে জিহ্বা, ঠোট, মাড়ি, তালু, স্তনের বাট এবং পায়ের ক্ষুরায় ঘা, ফোস্কা প্রভৃতি দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্ত বাছুরের মৃত্যু হার খুবই বেশী।

1. মুখ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে দীর্ঘ, দড়ির মত ঝুলানো লালা পড়ে।

2. মুখ ও পায়ের ফোস্কা গলে গিয়ে দগদগে ঘা এর মত দেখায়।

3. মুখের ও জিহ্বার ক্ষত ফেটে মুখ থেকে সাবানের ফেনার মত লালা বের হয়।

4. পায়ের ক্ষত ফেটে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে।

প্রতিরোধঃ

রোগ প্রতিরোধ অত্যন্ত জটিল। আক্রান্ত পশুকে আলাদা করে শুকনো স্থানে রাখতে হবে। রুগ্ন পশুর ব্যবহৃত জিনিসপত্র জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। ক্ষুরা রোগে মৃত পশুকে ৬ ফুট মাটির নীচে পূঁতে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধের জন্য নিকটস্থ ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রদান করতে হবে।

চিকিৎসাঃ

ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শে নিন্মলিখিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা যেতে পারেঃ-

পশুর মুখে ও পায়ে ঘা হলে হালকা গরম পানিতে ফিটকিরি গুড়ো করে ১ গ্রাম ১ লিটার পানিতে বা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ১ গ্রাম/১০ লিটার পানিতে এর যেকোন একটি দ্বারা ক্ষতস্থান পরিস্কার করতে হবে। অতঃপর

1. Sulphanilamide Powder এবং Doxacycline Powder আক্রান্ত স্থান ভালভাবে জীবাণুনাশক দ্বারা ধুয়ে দিনে ২ বার নারিকলে তৈল এর সাথে মিশিয়ে পেষ্ট তৈরী করে লাগাতে হবে।

2. Gentamycin Injection অথবা Ampicillin Injection

3. Analgesic Injection

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৬সেপ্টেম্বর২০