খামারজাত জৈব সার।
গরু, মহিষ, ভেড়া,হাঁস-মুরগি প্রভৃতি গৃহপালিত জীবজন্তুর মলমূত্র খড়কুটোর সঙ্গে মিশিয়ে খামারের একপাশে জমা করে এক ধরনের খামারজাত সার তৈরি করা হয়। খামারজাত সারের প্রধান উপকরণ হচ্ছে পশুর মল, মূত্র, গোয়ালঘরে ব্যবহƒত খড় ও খাবারের অংশবিশেষ। এ ধরনের সারে মলের চেয়ে মূত্রভাগে অধিক নাইট্রোজেন ও পটাশিয়াম থাকে। তাই মূত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। গোয়ালঘরের মেঝে থেকে মূত্র সহজে গড়িয়ে অন্য জায়গা বা নিচের দিকে গিয়ে নষ্ট হয়। তাই মেঝেতে খড় বা তুষ অথবা কাঠের গুঁড়োর বিছানা পেতে দিলে তাতে মূত্র শোষিত হয়ে থেকে যায়। তাই সেখানে আগের দিন বিছানা ভালো করে বিছিয়ে দিতে হবে যেন মূত্র সবটুকুই শুষে নিতে পারে। পরদিন সকালে এগুলো স্তূপ করা হয়। এখান থেকে উন্নতমানের খামারজাত সার তৈরি হয়। গরু-মহিষের ক্ষেত্রে যে দিকে দাঁড়িয়ে খড়কুটো খায়, তার পেছনের দিকে নালা করে দিতে হবে। জমা গোবর ও মূত্র একসঙ্গে গোবরের গাদা বা সরাসরি জমিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। খামারজাত সারের পরিমাণ ও গুণাগুণ নির্ভর করে গৃহপালিত জীবজন্তুর শ্রেণি, বয়স, খাদ্যের বিভিন্নতা, গোয়াল রের বিছানায় ব্যবহƒত দ্রব্যাদি, গাদায় সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রভৃতির ওপর। এ সার ভালোভাবে পচলে জমিতে ব্যবহার উপযোগী হয়।
কৃষিজমিতে বেশ কার্যকর খামারজাত সার। এ সার ব্যবহারে গাছ বেশ তরতাজা হয়। তবে এ সার সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। কারণ, গোবরে সূর্যের আলো সরাসরি পড়লে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নাইট্রোজেনের ঘাটতি দেখা দেয় ও গোবর শুকিয়ে যায়। আর বৃষ্টি পড়লে নাইট্রোজেনসহ অন্যান্য খাদ্য উপাদান ও জৈব পদার্থের অপচয় হয়। এভাবে অপচয় হতে থাকলে সার হিসেবে কাজ করবে না। তাই মাটিতে গর্ত করে গর্তের তলদেশ ও চারপাশ ইট দিয়ে পাকা করে ওপরে চালা দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৪অক্টোবর২০