যারা মাছ চাষ করেন তারা জানেন যে মাছ চাষের প্রধান উপাদান হল মাছের খাদ্য। বাজারে মাছের খাদ্য কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু বাজারের খাবারে প্রোটিন ঠিক থাকে না। আর যদি প্রোটিন সঠিক মাত্রায় না থাকে তাহলে মাছের বৃদ্ধি আশানুরুপ পাওয়া যায় না। চাষী লাভবান না হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের মৎস্য চাষে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে তেলাপিয়া মাছ। চাষী নিজ হাতে তেলাপিয়া মাছের খাদ্য তৈরি করে খাওয়ালে ফলাফল বেশি ভালো পাবেন।
প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণের দক্ষতা, সম্পূরক খাবারের প্রতি আগ্রহ, বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকা ও অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে তেলাপিয়া মাছ চাষীদের কাছে জনপ্রিয়। একজন চাষী সহজেই তেলাপিয়ার জন্য সাশ্রয়ী দুইটি পদ্ধতিতে খাদ্য তৈরি করতে পারবেন।
ডুবন্ত খাবার তৈরি পদ্ধতি
ভাসমান খাবার তৈরি পদ্ধতি
একই দিনে দুই পদ্ধতির খাবার প্রয়োগ করতে হবে ডুবন্ত এবং ভাসমান হিসেবে। নিচে সাশ্রয়ী খাদ্য তালিকার পদ্ধতি দুইটি আলাচনা হলো।
ডুবন্ত খাবার তৈরি পদ্ধতি:
প্রতি ১০০ কেজি খাবার তৈরি করার হিসাব।
মধ্যম মানের ফিসমিল-২৫%
সয়ামিল-২৫%
রাইস ব্রান-৩০%
সরিষার খৈল-১০%
এংকরের বেসন-১০%
১ কেজি চিটাগুড়।
৫০০ গ্রাম ভিটামিন প্রিমিক্স।
১ কেজি লবন।
উপরোক্ত খাবারের সম্ভাব্য প্রোটিন মান হতে পারে -২৮%-২৯%।
ডুবন্ত খাবার তৈরিতে করণীয়-
৩ গুণ পানিতে খৈল -৩৬ ঘন্টা ভিজিয়ে নিতে হবে।
২ গুণ পানিতে সয়ামিল -১২ ঘন্টা ভিজিয়ে নিতে হবে।
২ গুণ পানিতে সেদ্ধ ধানের রাইস ব্রান-১২ ঘন্টা ভিজিয়ে নিতে হবে।
২ গুণ পানিতে এংকরের বেসন -১২ ঘন্টা ভিজিয়ে নিতে হবে।
সকালবেলা, পূর্বে উল্লেখিত ফিসমিল, চিটাগুড়, লবন, ভিটামিন প্রিমিক্স একত্রে মিশিয়ে ডুবন্ত খাবার ট্রেতে পুকুরের নির্দীষ্ট কিছু স্থানে প্রয়োগ করতে হবে।
ভাসমান খাবার তৈরি পদ্ধতি:
প্রতি ১০০ কেজি খাবার তৈরি করার হিসাব।
সয়ামিল (মিলে পালিশ করা) ৪০%
এংকরের ডাল (মিলে পালিশ করা) ৪০%
রাইস ব্রান – ২০%
উপরোক্ত খাবারের সম্ভাব্য প্রোটিন মান হতে পারে -২৮%-২৮.৫%।
ভাসমান খাবারে তৈরিতে করণীয়-
ভাসমান খাদ্য তৈরিতে উল্লেখিত উপকরণগুলো আটা তৈরি করা মেশিনে একদম পালিশ করে আনবেন এবং একসাথে মিশিয়ে মাছ অনুপাতে ওজন নিয়ন্ত্রণ করে সরাসরি পুকুরে ছিটিয়ে দিবেন। ভাসমান খাবার পুকুরে বিকেলে প্রয়োগ করতে হবে।
ভাসমান এই ফর্মূলেশন একদম পরিক্ষিত এবং রেজাল্ট তুলনামুলক বেশি ভালো। উপরোক্ত নিয়মে তেলাপিয়া মাছের খাদ্য তৈরি করে খাওয়ালে চাষী চমৎকার ফল পাবেন।
তথ্যসূত্রঃ সাকসেস ফারমস
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৩অক্টোবর২০