ব্রয়লার বাচ্চার ১ম ২৪ ঘন্টার যত্ন এবং বাচ্চার রুচি কিভাবে বাড়ানো যায়

403

বাচ্চার ফোটার পর থেকে ধকলে থাকে এবং যত ধকল তত মরটালিটি।অসুস্থ,ডিহাইড্রেট ও ধকল বাচ্চা থেকে ভাল কিছু আসা করা যায়না।এদের এফ সি আর বেশি হয়।

শুধু বাচ্চা ভাল হলে হবেনা,ফার্ম ও পরিস্কার,জীবাণূমুক্ত হতে হবে যাতে বাচ্চা অসুস্থ না হয়।

ডাউন টাইম মেনে বাচ্চা তোলা উচিত মানে ফার্ম পরিস্কার করাম্মিনিমাম ১৪দিন পর ব্রয়লার বাচ্চা তোলা উচিত।

জেনেটিক উন্নতির ফলে বাচ্চার গ্রোথ দ্রুত বৃদ্ধি পায় তাই তাদের ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

এয়ার কোয়ালিটিঃ

বাচ্চা পরিবহণে বক্স ও ট্রেতে থাকার কারণে ধকলে থাকে।বায়ুতে যদি বেশি এমোনিয়া ও কার্বন ডাইক্সাইড

থাকে তাহলে অতিরিক্ত ইরিন্টেটের কারণে বাচ্চা ডিপ্রেশ,ডিহাইড্রেট,ইমাশিয়েশন এবং পরে মারা যায়।

ভেন্টিলেশন ভাল না হলে কার্বন মনোক্সাইড বেড়ে যায় এবং টক্সিসিটি শো করে।

বাতাস হতে হবে ফ্রেশ, হালকা গরম।

অক্সিজেন হবে ১৯.৬%

কার্বন মনো অক্সাইড ও এমোনিয়া ১০ পিপি এম।

মনো অক্সাইড বেশি হলে খাবার ও পানি কম খায় ,বাচ্চা ডিহাইডড়েশন হয়,ওজন কমে যায়,রাইট ভেন্ট্রিকল ফেইলার হয় তাতে পেঠে পানি জমে।

কার্বন ডাই অক্সাইড ৩০০০পিপিএম।

ডাস্ট .৪এম জি/ঘন মিটা।

তাপমাত্রাঃ

বাচ্চা হলো poikilothermic মানে ব্রয়লার তার জীবণের ১/৩ভাগ মানে প্রায়১০ দিন নিজের তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।ক্লাইমেটিক কন্ডিশন ও লোকাল জিওলজি অনুযায়ী ১ম ২৪ ঘন্টায় ৩৩ডিগ্রী সেন্টিগ্রেট(লিটার থেকে ১ইঞ্চি উপরের তাপ) রাখা উচিত।

বাচ্চার ইন্টারনাল বডি তাপমাত্রা ৪০.৪-৪০.৬ ডিগ্রি সেন্টগ্রেট।

ড্রাই বাল্ব তাপমাত্রা ৩২-৩৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট,ব্রূডার এরিয়ার তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট।

বাচ্চার লেবেলে আলোর তীব্রতা ২০ লাক্স।

তাপমাত্রা কম হলে ওজন কম হবে,এফ সি আর বেড়ে যাবে ৮% বাচ্চা মারা যেতে পারে তার মধ্যে ৫% হবে এসাইটিসের জন্য।

পানিঃবাচ্চার জন্য বুশুদ্ধ,গরম পানি দেয়া উচিত।হ্যাচ হবার ৮ ঘন্টার মধ্যে বাচ্চাকে পানি দেয়া উচিত।দেরিতে দিলে ডিহাইড্রেট হবে, বাচ্চার ওজন কম হবে।নোংড়া পানি দিলে বাচ্চার ডায়রিয়া হবে ,ডিহাইড্রেট হবে ,মারা যাবে।

১মে বাচ্চাকে গুড় বা চিনির পানি সাথে ভিটামিন দেয়া উচিত,চিনির পানি খাবার থেকে বাচ্চা কে প্ররোচিত করে , ইন্টেস্টাইন এর লাইনিং ক্লিয়ার করে।

বাচ্চা যদি দূর থেকে আসে তবে ২-৩ ঘ ন্টা পানি পান করার পর খাবার দিতে হবে।

বাচ্চার ওজনের ৮৫% পানি,যদি ১০% পানি কমে যায় তাহলে কালিং বাচ্চা হয়ে যায়।আর যদি ২০ % পানি কমে যায় তাহলে বাচ্চা মারা যায়।

নিপল লাইনে পানির প্রেশারঃ

পানির প্রেসার বেশি হলে লটার ভিজে যায়,এমোনিয়া গ্যাস হয়,ফুট প্যাড লেশন হয়।

প্রেসার কম হলে ২০% পানি কম খায় ,খাবার কম খাবে ফলে ওজন কমে যাবে।

প্রেসার কম না বেশি কিভাবে বুঝা যায়ঃ

বেশি হলে লিটার ভিজে যাবে ,কম হলে লিটার শুকনা হবে।

নিপল লাইন ৪৫ডিগ্রি এংগলে সেট করতে হবে,চোখের কিছুটা উপরে হবে।

ব্রুডিং পিরিয়ডে নিপল ড্রিংকারে পানির প্রবাহ হবে ২০মিলি/মিনিট

পানির তাপমাত্রা হবে ১০-১৪ডিগ্রি সেন্টগ্রেট যা নিয়মিত ফ্লাসিঙ্গের মাধ্যমে ঠিক রাখা হয়।

পানির ব্যব্যস্থাপনা যদি খারাপ হয় মরটালিটি হয়,ইউনিফরমটি খারাপ হয় ,ওজন কম হয়।

বছরে ২বার গরম ও শীতে পানি টেস্ট করতে হয়।(কেমিকেল ও ব্যাক্টেরিলজিকেল)

লিটারঃ

লিটার যদি ভাল না হয় তাহল পেপারের উপর ১-২দিন বাচ্চা ছাড়া হয় কারণ লিটার থেকে বাচ্চা জীবাণূ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।এই সময় বাচ্চার ইমোনিটি খারাপ থাকে।লিটার শুকনা হতে হবে কারণ লিটার যদি ভেজা বা আর্দ্র বেশি হয় তাহলে বাচ্চা পা দিয়ে তাপ হারায়।

আরলি চিকস মরটালিটির থেকে কিভাবে বাচচাকে রক্ষা করা যায়ঃ

১।বাচচা প্রধানত ই কলাই ও স্টেফাইলোকক্কসাসের কারণে মারা যায় তাই জেন্টামাইসিন ইঞ্জেকশন দিলে মরটালিটি দূওর করা যায়।

২।তাপমাত্রা কন্টোল

বাচচার শরীরের ৭০% পানি তাপ বেশি হলে পানি শুণ্যতা হয় ,১০% পানি কমে গেলে বাচচা মারা যায়।

তাপমাত্রা বেশি হলে বেস্টা ভেন্টের চারদিকে লেগে থাকে এবং পায়খানা হয়ে বাচচা মারা যায়।

তাপমাত্রা কম হলে ব্রুডার নিউমোনিয়া হয়,চিলিং এর কারণে ফুসফুস নীল হয়ে বাচচা মারা যায় তাছাড়া ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ফেইলর হয়ে যায়।

স্মোদারিং মানে বাচচা দলা পাকিয়ে থাকে যদি তাপমাত্রা কম হয় ফলে বাচচা মারা যায়।

বাচচার আপেক্ষিক আরদ্রতা ৬০-৭০%।

লিটা্রের তাপ কম হলে বডির তাপ শোষণ করে নেয় ফলে বাচচা মারা যায়।

৩।খাবার ও পানি কোয়ালিটিঃ

ফাংগাল ও কন্টামিনেটেড খাবারের কারণে বাচাচ মারা যায়,অতিরিক্ত লবনের টক্সিসিটির জন্য বাচচা মারা যেতে পারে।লোজ ফিড বানালে ভাল মানের খাদ্য উপাদান দেয়া উচিত,টক্সিন বাইন্ডার ভাল মানের দিতে হবে।ভাল কোম্পানীর রেডি ফিড দিতে হবে।

পানির টেস্টগুলো (বায়োলজিকেল ও কেমিকেল) করা উচিত।

পাত্রে সব সময় খাবার থাকা উচিত ,বাচচা ফ্যাট স্টোর করেনা তাই খাবার যদি পাত্রে না থাকে তাহলে ক্ষুধা সহ্য করতে পারেনা ফলে বাচচা মারা যায়।পানির অভাবে ও বাচচা মারা যায়।

খাবার ও পানির পাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে,১ম সপ্তাহে ১ইঞ্চি/বাচচা,২য় সপ্তাহে ২ ইঞ্চি/বাচচা

বাচ্চা তুলনামূলক ভাবে পানি বেশি খায়।পানি ছাড়া বাচ্চা যদি খাবার খায় তাহলে শুকনা খাবার ক্রপে (Clumps) ক্লাম্পস তৈরি করে যা বাচ্চার ক্যারুটিড (Artery) আরটারিতে চাপ দেয় ফলে বাচ্চা মারায যায়।

৪।এয়ার(বাতাস) কোয়ালিটি

এমোনিয়া, কারবন মনো অক্সাইড,কারবন ডাই অক্সাইডের কারণে বাচচা মারা যায়।

বাচচার ড্রপিং কারণে লিটার ভেজা হয় ,পুর ভেন্টিলেশনের কারণে এমোনিয়া গ্যাস তৈরি হয়,শাসনালী আক্রান্ত হয়।

এমোনিয়া, কারবন মনো অক্সাইড এর কারণে বাচচা সাফোকেশনে মারা যায়।

চারকল থেকে কারবন মনো অক্সাইড তৈরি হয়।

সেডের উপরের দিকে চিদ্র থাকা উচিত যাতে বাহিরের অক্সিজেন ভেতরে যেতে পারে আর ভিতরের গ্যাস হাবিরে বের হতে পারে।

লিটার উল্টাতে হবে এবং শুকনা রাখতে হবে যাতে এমোনিয়া কম তৈরি হয়।

৫।রুটিন মাল্টিভিটামিন।

ধক্লের সময় টান্সপোট,টিকা,ব্রিডিং,গরমের সময় বাচচাকে মাল্টিভিটামিন দিতে হবে যাতে ইমোনিটি তৈরি হয়।অতিরিক্ত

দিলে টক্সিসিটি হতে পারে।

৬।রুটিন প্রবায়োটিক

৭।প্রপার টিকা

৮।লাইটিং

১ম দিন থেকেই বাচচাকে ৫-৬মিনিট করে অন্ধকাররের সাথে পরিচিত করে তুলতে হবে এতে পরে পাইলিং করে মারা যাবার সম্বাবনা কমে যাবে।

তাছাড়া একটানা লাইট দিলে মেটাবলিক প্রব্লেম হয় হারট এবংপায়ে সমস্যা হয়।

৯।অভারক্রাউডিং(বেশি ঘন)

এতে রোগ জীবাণূ দ্রুত ছড়ায় এবং ভয় পেলে পাইলিং করে বাচচা মারা যায়।

১০।স্মোদারিং(জমা হওয়া)

বাচচা ঠান্ডায় বা চিকগার্ড না থাকলে এক সাথে জমা হয় এবং মারা যায়।

৩ সপ্তাহ পর্যন্ত ২% চিকেনের বাচচার মরটালিটি নরমাল

টার্কির বাচচা ৩% নরমাল

৩ সপ্তাহের পর প্রতি মাসে ১% বাচচার মরটালিটি নরমাল।

ব্রয়লার বাচ্চার(Appetite) রুচি কিভাবে বাড়ানো যায়ঃ

বাচ্চার রুচি বাড়ানোর জন্য ৩-৪দিন গুরুত্বপূর্ণ ।

এই সময়ে বাচ্চার ফিজিওলজিকেল সিস্টেমের বৃদ্ধির জন্য পুস্টির খুব দরকার(Cardiovascular,pulmonary,alimentary tract,immune,skeletal and feather.)

১দিনের বাচ্চা খুব দুর্বল থাকে(immature) কিন্তু ইয়ক স্যাক যাতে কার্বো হাইড্রেড,লিপিড,প্রোটিন,ম্যাটারনাল ডেরিবেটিড এন্টিবডি,ভিটামিন ও মিনারেলস।পানি থাকে।

ইয়ক স্যাক বাচ্চার মিডগাটের সাথে ইয়ক স্টামের(Yolk Stem) মাধ্যমে সংযোগ থাকে।

ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা বা ইনফেকশনের জন্য নাভি কাঁচা থাকে।

বাচ্চার কুসুমের যে চর্বি থাকে তা হলো একমাত্র (Endogenous ) এন্ডোজেনাস এনার্জির উৎস যা (exogenous) এক্সোজেনাস এনার্জির উৎস হিসেবে কার্বোহাইড্রেড থেকে আসে যা ৩-৪দিনের খাবার থেকে আসে।

১ম ৩-৪দিনে বাচ্চার রুচি যদি না বাড়ে তাহলে আর কোন দিন ভাল রুচি হবে না এবং ভাল ওজন আসেনা(১ম ৩-৪দিন ই ভাল রুচি বারার উপযুক্ত সময়)

এই সময় তাপমাত্রা ও ভেন্টিলেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

Chicks only possess instictive pecking behavior for interesting particles.

খাবারের জন্য ৫০% জায়গা যা সাদা পেপার দেয়া হয় এবং ৭৫গ্রাম খাবার/বাচ্চা দেয়া উচিত।খাবারের সাইজ ১-২ মিমি।

বাচ্চার রুচি তখন ই বাড়ে যখন তারা ইন্টারেস্টিং কিছু খায় ,যখন তাদের ক্রপে যথেস্ট খাবার ও পানি থাকে তখন ডাইজেশন ও শোষণ

ঘটে এবং প্রচুর পরিমাণ রক্তে পৌঁছে ফলে ব্রেইনে রুচির সেন্টার(Appetite center) উত্তেজিত হয়।

খাবার খাওয়ার ৩০ ঘন্টার পর এই ঘটনা ঘটে এই সময় বাচ্চা ফিড ম্যাটারিয়াল্ কে নিজেদের খাবার হিসেবে চিহ্নিত করে।

বাচ্চা যখন দেখে অন্যান্য বাচ্চা খাবার খায় তখন তারাও খাবার খায় মানে মুরগি গ্রোপ করে চলতে পছন্দ করে।

সব যদি ইউনিফর্মিটি ভাবে হয়(লাইট,খাবার,পুস্টি,পানি,আর্দ্রতা ,এয়ার কোয়ালিটি,স্টকিং ডেনসিটি,) তাহলে বাচ্চার রুচি বাড়বে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৯নভেম্বর২০২০