অনেক সময় গরুর খামারে অব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধসহ নানা কারণে খামারি বিপাকে পড়ে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হতে পারেন। চোখের সামনে চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় অনেক গরুর খামার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চলুন জেনে নেই গরুর খামার যেসব কারণে বন্ধ হতে পারে সে সম্পর্কে-
গরুর খামার যেসব কারণে বন্ধ হতে পারে
১। শখের বসে খামার করার ক্ষেত্রে কোন মানা নেই, তবে যদি পারিবারিকভাবে দুধের চাহিদা মিটাতে চান তাহলে ৪ থেকে ৫ লিটারের দুধ উৎপাদনকারী একটি গাভী যথেষ্ট। যদি মোটাতাজা করতে চান তাহলে ১-২টি ষাঁড় যথেষ্ট। তবে শখের বসে লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করে খামার করার দরকার নেই। এতে খামার বন্ধ হয়ে লোকসান হতে পারে।
২। লক্ষ ঠিক থাকে না এমন খামারীর সংখ্যা অনেক পাওয়া যায়, যে কোন কাজ করার আগে লক্ষ টা ঠিক করতে হবে। এই গাভী, এই বকনা, এই ষাঁড়, এই ছাগল, এই হাঁস পালন করে কোন প্রজেক্টে স্থীর থাকে না। একটি তে লাভ না হলে, আরেকটি লাভের আশায় অল্প দিনেই উতল বদল শুরু করে। কিন্তু কি কারণে বা কোন ভুলে লাভ হচ্ছে না তা খুঁজে বের করে না। পরে লসে পড়ে খামার হয় বন্ধ।
৩। প্রবাসীদের খামার ও বন্ধ হতে দেখা যায়। প্রবাসীরা স্বপ্ন দেখতে খুবই ভালোবাসে ও অধিকাংশ প্রবাসী কোমল মনে হয়। তারা প্রবাসে দেখে ইউটিউব, ফেসবুক নানা প্রকার খামারের ভিডিও দেখে পাগল হয়ে যায় আবেগে। পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ঘর করে, বড় ওলানের গাভী কিনে ১ম, ২য় বিয়ান দেখে, রাখাল রাখে। পরে দেখা যায় গাভী কিনে ধরা খায়, রাখাল থাকে না, গাভী হিটে আসে না বেশি দামে কিনে পরে লোকসান করে।
৪। গরু নির্বাচনে ভুল করলে খামারে লোকসানে পড়তে হয় ফলে খামার বন্ধ হয়ে যায়।
৫। শুধুমাত্র ডেইরী খামারের উপর নির্ভর করে থাকা, বিকল্প আয়ের কোন উপায় না থাকার কারণে খামারে লোকসান হলে আর খামার পরিচালনা করতে পারে না। ফলে খামার বন্ধ হয়ে যায়।
৬। ব্যাংক থেকে চড়া সুদে মোটা অঙ্কের লোন নিয়ে খামার শুরু করা। নিজের আয়ের দিকে খেয়াল না করা। খামারে বিভিন্ন সমস্যায় টাকা ঋণ করে খামারের সমস্যা মিটানো।ব্যাংকের চড়া হারে কিস্তি দেওয়া ইত্যাদি কারণে খামার বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৭। শেয়ারে খামার করলে কোন এক সময় দেখা যায় কোন ভুলের কারণে বা মনের অমীল হলে ও হিসাব পত্রে এদিক সেদিক হলে খামার বন্ধ হয়ে যায়। তাই শেয়ারে খামার করলে চিন্তা ভাবনা করে করা উওম।তবে শেয়ারে খামার না করাই ভালো।
৮। প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো না জানা, ৩/৬ মাসের ট্রেনিং না করে খামার শুরু করা। খামার করলে টুকটাক চিকিৎসা, গরুর অসুখের লক্ষণ না বুঝতে পারা। সবসময় ডাক্তারদের উপর নির্ভর করা। গরু রুচির কম, কৃমিনাশক ঔষুধের নাম ও জানে না অনেক খামারী আছে। কিছু খামারী আছে লিভার টনিক, জিংক, ক্যালসিয়াম কি এগুলো খাওয়ালে কি হয় তা ও জানে না ফলে খরচ বেশি হয় এতে লোকসান হয়।
এভাবে খামার করলে খামার বন্ধ হতে সময় বেশি লাগে না। তাই খামার করার আগেই এই বিষয় গুলো চিন্তা করে খামার করতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৮ডিসেম্বর২০২০