অর্গানিক পদ্ধতিতে পালন করা মানে কি? “এ পদ্ধতিতে কোন ধরণের মেডিসিন ব্যবহার না করে, স্টেরয়েড জাতীয় খাবার না খাইয়ে যে গরুটা পালছেন, এটাই অর্গানিক গরু। খড়, ঘাস, ভুষি, তারপর ভুট্টার সাইলেজ খাইয়ে পালন করা গরুগুলোকে অর্গানিক গরু বলে ।”এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত গরুর মাংস টেস্টি হয়।
মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে।
“মানুষের মধ্যে একটা সাধারণ সচেতনতা আছে তারা কৃত্রিম পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা গরু কিনতে চায় না। এখন অনেক ব্যবসায়ী মেডিসিন দিয়ে মোটাতাজা করে, সেটা চায় না মানুষ। বরং এখন অর্গানিক পদ্ধতিতে পালন করা গরুর চাহিদা বাড়ছে। কত শতাংশ সেটা বলা মুশকিল, কিন্তু আমরা দেখছি প্রতি বছর এটি বেড়েই চলেছে।”
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ঠিক কতগুলো খামারে অর্গানিক পদ্ধতিতে গরু পালন করা হচ্ছে তার সঠিক হিসেব নেই, কারণ বেশির ভাগ খামার কেবল ঈদের সময়ের জন্য এ ধরণের গরু পালন করে থাকে।
ইদানীং লোকজন মোটাতাজা করা গরু কিনতে চায় না।সাধারণত অর্গানিক পদ্ধতিতে পালন করা গরুর দাম, কোরবানির হাটে ওঠা একই ওজনের অন্য গরুর চেয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি হয়। খামারিরা বলছেন, তার কারণ স্টেরয়েড বা গরু মোটা তাজাকরণের জন্য অস্বাভাবিক কিছু ব্যবহার না করে, বিশেষ খাবার ও রুটিন মেনে গরু পালনের জন্যই এর দাম বেশি হয়।
“প্রথমত আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে, কারণ বাজারে গরু কিনতে এসে আমরাই তো মোটা বেশি ওজন এমন গরু কিনতে চাই। কিন্তু দেশী গরুর ওজন তো ওভাবে হুট করে বাড়ে না, ফলে দেখা যায় সেটার চাহিদা কমই থাকে।”
“আবার অর্গানিক পদ্ধতিতে পালন করা গরুকে যেসব জিনিস খাওয়ানো হয়, সেসবও তো আমাদের দেশেই তৈরি হয়, ফলে সেসবের জন্য দাম না বাড়িয়ে দামটা আরেকটু কম রাখা যায়। একই সঙ্গে সরকারকেও এ খাতে ভর্তুকি দিয়ে খামারিদের উৎসাহিত করতে হবে।”
বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে গরু পালনের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। কিন্তু একই সঙ্গে ক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য তারা চেষ্টা করছে, যাতে ঈদের সময় মানুষ বুঝেশুনে পশু কেনে। তাতে অর্গানিক গরুর খামারিরাও হয়তো আরো উৎসাহিত হবেন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৫ডিসেম্বর২০২০