ব্রয়লার মুরগির দৈহিক বৃদ্ধিতে সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। ব্রয়লার মুরগি পালনে লাভবান হওয়ার জন্য এই মুরগির শারীরিক বৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শরীরে মাংসের উপর ভিত্তি করেই ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে অনেক সময় ব্রয়লার মুরগির দৈহিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
ব্রয়লার মুরগির দৈহিক বৃদ্ধি না হওয়ার সঠিক কারণ ও সমাধান করতে না পারলে ব্রয়লার মুরগি পালনে অনেক সময় লোকসান হয়ে থাকে। আসুন আজকে জেনে নেই ব্রয়লার মুরগির দৈহিক বৃদ্ধির সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে-
ব্রয়লার মুরগির দৈহিক বৃদ্ধিতে সমস্যা ও সমাধানঃ
অনেক গবেষকরা ধারণা করে থাকেন ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধি না হওয়ার অন্যতম কারণ হল ব্রয়লার মুরগির বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি। আর এসব সংক্রামক ব্যাধির জন্য বিভিন্ন প্রকার ভাইরাসকে তারা দায়ী করছেন। এই ভাইরাসগুলি হল-
(১) রিও ভাইরাস
(২) ক্যালসি ভাইরাস
(৩) করোনা ভাইরাস
(৪) টোগা ভাইরাস
(৫) পারডোভাইরাস
(৬) এন্টারো ভাইরাস।
(৭) এরিনা ভাইরাস
এছাড়াও বিভিন্ন কারণে ব্রয়লার মুরগির শরীরের ওজন বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হতে পারে। সেগুলোকে নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল-
১। মুরগির সুষম খাদ্যের অভাব হলে মুরগির শারীরিক বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হবে।
২। ব্রয়লার মুরগি যেসব খাদ্য পছন্দ করে না সেই খাদ্য মুরগিকে খাওয়াতে দিলে মুরগির সেই খাদ্য অনেক সময় নষ্ট করে ফেলে দেয়। এই সমস্যার ফলেও মুরগির শারীরিক বৃদ্ধি কম হতে পারে কিংবা বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে।
ব্রয়লারের দৈহিক বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হওয়ার লক্ষণঃ
১। ব্রয়লার মুরগির বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হলে মুরগির শারীরিক বৃদ্ধি তেমন লক্ষ্য করা যায় না।
২। আক্রান্ত হওয়া মুরগিগুলো অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে।
৩। খামারে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন অনেকগুনে কমে যায়।
৪। মুরগি সঠিকভাবে খাদ্য গ্রহণ করে না, যার ফলে মুরগিগুলো দিন দিন শুকিয়ে যেতে থাকে।
ব্রয়লার মুরগির বৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হওয়ার প্রতিকারঃ
১। ব্রয়লার মুরগির খাদ্য প্রদানের সময় খাদ্যের সাথে নিম্নমান সম্পন্ন কেমিক্যাল কিংবা কোন রাসায়নিক উপাদান দেওয়া যাবে না।
২। ব্রয়লার মুরগির খামারের জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করা হবে সেই ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষা করাতে হবে। তার পরেই সেই ওষুধকে ব্রয়লার মুরগির খামারে ব্যবহার করতে হবে।
৩। ব্রয়লার মুরগির জন্য যে খাদ্য উপকরণগুলো ব্যবহার করা হবে সেগুলো যেন মুরগির পরিপাকে কোন বাঁধার সৃষ্টি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৪। ব্রয়লার মুরগির খামার স্থাপনের সময় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে খামার স্থাপন করতে হবে।
৫। নিয়মিত ব্রয়লার মুরগির খামারকে জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হবে। এতে করে খামারের মুরগিগুলো সহজেই কোন রোগের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারবে না।
৬। ব্রয়লার মুরগির খামারে বাইরে থেকে যে কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি কাউকে প্রবেশ করাতে হয় তাহলে যথাযথ উপায়ে জীবাণু রোধকারী পোশাক পরিয়ে তারপর খামারে প্রবেশ করাতে হবে। এক্ষেত্রে সঠিক জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭। ব্রয়লার খাদ্য প্রদানের সময় খাদ্যে যেন কোন প্রকার ময়লা কিংবা রোগের জীবাণু না থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬মার্চ২০২১