জয়পুরহাটে পোল্ট্রি ও ডেইরী খামারিদের ৯ কোটি টাকা প্রদান করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। জেলায় করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ডেইরী ও পোল্ট্রি সেক্টরের ৮ হাজার ৮৭০ জন খামারির মাঝে সরকারের নগদ আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৪ হাজার ১২৫ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়ে জয়পুরহাটের পোল্ট্রি সেক্টর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের পক্ষ থেকে খামারিদের সহায়তায় করা হয়। প্রাণি সম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের আর্থিক সহায়তা নগদ, বিকাশ ও ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এতে ৮ হাজার ৮৭০ জন খামারি সরকারের আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৪ হাজার ১২৫ টাকা পেয়েছেন।
এরমধ্যে গাভী পালনকারী খামারি ৩ হাজার ৬৬৮ জনের মাঝে বিতরণ করা হয় ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা, মুরগি পালনকারি ৫ হাজার ৯০ জন খামারির মাঝে বিতরণ করা হয় ৫ কোটি ২৭ লাখ ৪৪ হাজার ৫শ টাকা ও হাঁস পালনকারি ১১২ জনের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৫ টাকা।
জেলার পাঁচ উপজেলায় আড়াই হাজার রেজিষ্টার খামারসহ জেলায় প্রায় নয় হাজার ছোট-বড় পোল্ট্রি খামার রয়েছে। একেকটি খামারে ২ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার পর্যন্ত মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। সোনালী জাতের মুরগি জেলায় সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায়। একটি খামারে বছরে চার ব্যাচ করে এ মুরগি পালন করা হয়ে থাকে।
এ ছাড়াও বয়লার ৬/৭ ব্যাচ এবং হাইব্রিড লেয়ার (ডিমের জন্য) সারা বছর পালন করা হয়। একটি হাইব্রিড লেয়ার মুরগি বছরে ৩০০ টির বেশি ডিম দেয়। ডিম দেওয়া শেষ হলে মাংস হিসেবে বিক্রি করা যায় বাজারে। জেলার প্রায় ১১ লক্ষ লোকের ৪৪ হাজার মে. টন মাংসের চাহিদার বেশির ভাগ পাওয়া যায় পোল্ট্রি থেকে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ গাড়ি মুরগি দেশের বিভিন্ন জেলায় বিশেষ করে সিলেট ও চট্রগ্রামে সরবরাহ করা হতো।
পোল্ট্রি শিল্পে প্রতিষ্ঠিত জয়পুরহাট জেলায় ছোট-বড় প্রায় নয় হাজার খামার, ৩৯টি হ্যাচারি শিল্প এবং ১১টি ফিড মিল (মুরগির খাদ্য তৈরির কারখানা) গড়ে ওঠে। পোল্ট্রি শিল্পকে ঘিরে জেলার গ্রামে-গঞ্জে গড়ে ওঠেছে খাদ্য ও ওষুধের দোকান। এতে বিনিয়োগের পরিমান প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জেলার দুই লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। করোনার প্রাদুর্ভাবে চরম ভাবে আঘাত হানে জেলার এ পোল্ট্রি শিল্পে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২২মার্চ২০২১