‘দেশি এবং ফার্মের মুরগীর মাংসের পুষ্টিগুণ একই’

2809

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:সমৃদ্ধ জাতি গড়তে হলে যেমন দক্ষ মানুষ প্রয়োজন ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যবান, কর্মঠ এবং চৌকস মানুষ গঠনে প্রয়োজন সঠিক পরিমান আমিষ গ্রহন। আমিষের চাহিদা পূরণ করতে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে নিরলসভাবে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে আমিষের চাহিদা পূরণে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফার্মে উৎপাদিত নিরাপদ মুরগী।অষ্ট্রেলিয়া কিংবা আমেরিকার একজন মানুষ যেখানে বছরে ৯০ কেজির উপরে মাংস খায় সেখানে বাংলাদেশের মানুষ খায় গড়ে ৭ কেজি। পুষ্টি বিশেষজ্ঞগণ বলেন, দেশি এবং ফার্মের মুরগীর পুষ্টি উপাদানে গুনগত কোনো পার্থক্য নেই। গরু এবং খাসির মাংসের দাম বেশি হওয়ায় আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পুষ্টি বিশেষজ্ঞগণ ডিম এবং ফার্মের মুরগীকে খেতে উৎসাহিত করছেন।

আধুনিক বিশ্বের মতো বাংলাদেশের নামি-দামি কোম্পানিগুলোতে বিশেষ ল্যাব সুবিধা রয়েছে যার ফলে খাদ্যের গুনগত মান নিশ্চিত হচ্ছে। এছাড়া, সমপরিমাণ দেশি মুরগীর তুলনায় ফার্মের মুরগীতে ২৫-৩০% বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো বলেন, দেশি মুরগীর তুলনায় যদি ফার্মের মুরগী গ্রহন করা হয় তাহলে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয় এবং তা দেহের জন্য ও উপকারী। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনে আমিষের চাহিদা পূরনে মুরগীর পাশাপাশি ডিম এবং ডাল খেতেও উৎসাহিত করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এজি এগ্রোর জিএম কৃষিবিদ জাবেদ হাসান বলেন,দেশী মুরগীর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সুষম খাদ্য ব্যবহার করা হয় না। মুরগীগুলো অবাধ বিচরণ করে তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করে, এবং একটি দীর্ঘ সময় পর (প্রায় ৪-৫ মাস) দেহে মাংস তৈরি হয়। অন্যদিকে ফার্মের মুরগী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পালন ও সুষম খাদ্য প্রদানের মাধ্যমে রোগ জীবাণু থেকে মুক্ত রেখে অতি অল্প সময়ে দেশী মুরগীর চেয়ে ৪/৫ গুন বেশী মাংস পাওয়া যায়। যেহেতু পুষ্টিগুণ বিবেচনায় পুষ্টিগত মানের কোনো পার্থক্য নেই তাই ফার্মের মুরগীতে দেশি মুরগীর চেয়ে ৪-৫গুণ বেশী পুষ্টি পাওয়া যায়।

বিশিষ্ট পোল্ট্রি কনসালট্যান্ট কৃষিবিদ জনাব আকতারুজ্জামান বলেন, দেশী মুরগীর মাংসের স্বাদ ও গন্ধের ন্যায় ফার্মের মুরগীর স্বাদ একই রকম করা সম্ভব যদি ফার্মের মুরগীর প্রতিপালন পদ্ধতির প্রতি একটু যত্নশীল হওয়া যায় যেমনঃ ব্রয়লার মুরগীর পালন ব্যবস্থায় মাচা পদ্ধতির অনুসরণ করা, এতে বিষ্ঠা থেকে যে গন্ধ হয় তাহা দূর করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত ফার্মের মুরগী বেশী দিন (৩২-৩৫ দিন ) পালন করতে হবে। এতে মাংসের গুণাগুণ দেশী মুরগীর মত একই হবে। ফার্মের মুরগীতে মাংসের পরিমান বেশী থাকে, যার ফলে ভোক্তাগণ বেশী পুষ্টি পেয়ে থাকে। এই কারণে ফার্মের মুরগী, দিন দিন ভোক্তাদের কাছে গ্রহণ যোগ্যতা বাড়ছে।

এগজ এগ্রোর সিইও কৃষিবিদ জনাব লুৎফর রহমান বলেন, জনবহুল এই দেশে প্রায় ১৮ কোটি লোকের আমিষের চাহিদা দেশী মুরগীর মাধ্যমে কিছুতেই পুরণ করা সম্ভব নয়। তাই শিল্পপতিদের দায়িত্ব নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত চিকেন উৎপাদন করে দেশের সামগ্রিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সার্বিক ভাবে চেষ্টা করা। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অত্যাধুনিক ফার্মিং সিস্টেমের মাধ্যমে নিরাপদ চিকেন উৎপাদন করছে। তারই মধ্যে এজি ব্রয়লার্স লিমিটেড “গ্রিন চিকেন”’ নামে ব্রয়লার মুরগী ভোক্তাদের সন্তুষ্টির জন্য বাজারে নিয়ে এসেছে।

বিভিন্ন জেলায় সুপার স্টোরের মাধ্যমে এ চিকেন এবং ফারদার চিকেন আইটেম বিক্রি করছে। জরীপে দেখা যায় দেশী চিকেনের ক্রেতাগণ ফার্মের চিকেনের স্বাদ ও গুণের তুলনা করে প্রায় একই রকম পায়, বিধায় ফার্মের মুরগীর গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৫ জুলাই ২০২১