সঠিক সময়ে যদি কৃমিনাশক ঔষধ না দেওয়া হয় তাহলে কি কি সমস্যা গুলি হতে পারে। প্রথম সমস্যা একটা ছাগল যখন গাভীন হয় আমরা সে সময় মা ছাগলটিকে পুষ্টিকর জাতীয় খাবার দিয়ে থাকি তার বাচ্চার বৃদ্ধি এবং তার দুধ বৃদ্ধি করার জন্য কিন্তু শরীরের ভিতরে যদি কৃমি থাকে সে পুষ্টিকর খাবার গুলো কৃমি শোষণ করে যার ফলে এই খাদ্য মায়ের শরীরে কোন কাজে অসে না।
» দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে গাভীন অবস্থায় তার শরীরে অতিরিক্ত কৃমি থাকলে ভিতরে সঠিক ভাবে বাচ্চার বিকাশ ঘটে না এবং বাচ্চা হওয়ার পর মায়ের পর্যাপ্ত দুধ পায়না এত করে বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার পর মায়ের শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যায়।
» তৃতীয় সমস্যা গাভীন অবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে কৃমি থাকলে তাকে কৃমিনাশক নাদিলে কৃমির কারণে বাচ্চা এবরশন হয়ে যেতে পারে। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে নিউট্রিশন লেভেল যখন ডাউন হয়ে যায় বাচ্চা খাদ্যের অভাবে মিসক্যারেজ হয়ে যায়। একটি কারনে বাচ্চা এবরশন হয়না বহু কারণ রয়েছে যার কারণে ছাগলের বাচ্চা এবরশন হয়ে।
» চতুর্থ সমস্যা একটু জটিল, একটা ছাগল যখন গাভীন থাকে সে সময় তার গর্ভে একটা হোক বা দুটো ভ্রূণের সৃষ্টি হয় আর সেই ভ্রূণের বিকাশ এর জন্য আমার ছাগলটিকে আলাদাভাবে পুষ্টিকর জাতীয় আহার এবং আলাদাভাবে সাপ্লিমেন্ট দিই। কিন্তু ছাগলের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে প্যারাসাইটিক থাকার কারণে সেই পুষ্টিকর খাবারগুলিকে প্যারাসাইটিকগুলো খেয়ে নেয়। যার ফলে বাচ্চাদের ভাগে পুষ্টি কম পড়ে, মায়ের গর্ভে ধীরে ধীরে যেমন তার ভ্রূণের বৃদ্ধি হয় তেমনি কিন্তু শরীরে প্যারাসাইটিক বৃদ্ধি হয়। আর তখনই খাদ্যের প্রয়োজন বেশি করে পড়ে যায়। তখন মায়ের শরীর থেকে সে নিউট্রিশন গুলো ভাঙতে থাকে অর্থাৎ মায়ের শরীর থেকে সে খাদ্যের যোগান দিতে হয়। এজন্যই কিন্তু একটা মা ছাগলের শরীর দুর্বল হতে থাকে আর যখন শরীর দুর্বল হয়ে যায় তখন রোপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ঠিক সেই সময় ছাগল যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আর গর্ভের ভ্রূণ বড় হচ্ছে অর্থাৎ গর্ভের বাচ্চা বড় হচ্ছে বাচ্চারাও ঠিকঠাক ভাবে বেড়ে উঠতে পারবে না যার কারণে বাচ্চা হওয়ার পর দেখবেন বাচ্চা খুব দুর্বল থাকে এবং সেই সব বাচ্চাদের ইমিওনিটি একদম কম থাকে ও জন্ম হওয়ার পর যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং সেইসব বাচ্চা কে বাঁচানো খুব মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
বর্তমান অধিকাংশ ফার্মে কিন্তু এই সমস্যাটি দেখা যাচ্ছে গত তিন মাসের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা আমার কাছে প্রায় 10 থেকে 15 টা এসেছে প্রত্যেকে বলছে ভাই আমার ছাগলের বাচ্চা হচ্ছে কিন্তু একমাসের বেশি বাচ্চা টিকছে না তার কারণ হচ্ছে গর্ভে থাকা অবস্থায় ঠিকঠাক ভাবে এই বাচ্চা নিউট্রেশন পাইনি যার কারণে বাচ্চাদের ইমিওনিটি পাওয়ার একদম। যার ফলে যে কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে বাচ্চাগুলি মারা যাচ্ছে। এজন্য প্রেগনেন্ট থাকা অবস্থায় ছাগলকে কৃমিনাশক দিয়ে তাকে কৃমি মুক্ত করা অবশ্যই জরুরি।
গাভীন ছাগলের কৃমির ওষুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম
মনে রাখতে হবে একটা ছাগল যখন প্রেগন্যান্ট কনফার্ম হয় তখন ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে তাকে কৃমিনাশক দেওয়া অতি আবশ্যক। বর্তমান প্রেগনেন্সির সময়ে ব্যবহারে জন্য অনেক কৃমিনাশক মেডিসিন রয়েছে যেগুলো দিয়ে আপনারা তাদেরকে কৃমি মুক্ত করতে পারেন। যেমন ফেনবেন্ডাজল গ্রপের যেকোন লিকুইড বা ট্যাবলেট দিয়ে কৃমি মুক্ত করাযায় এছাড়া আইভারমেকটিন ছাড়াও প্রেগনেন্সি সেইফ কৃমিনাশক মেডিসিন আছে।
» মনে রাখবেন যে কোন পশু যখন গাভীন থাকবে গাভীন থাকাকালীন কৃমিনাশক দেওয়ার সময় সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে প্রেগনেন্ট হয়ে যাওয়ার পর এক থেকে দু মাসের মধ্যে এবং লাস্ট মাসে যে মাসে বাচ্চা হতে যাচ্ছে তার প্রথম দিকে । কৃমিনাশক দেওয়ার পর তাকে মিনারেল এবং ভিটামিন অবশ্যই দেবেন।
» সব সময় মনে রাখবেন পশুদের করানোটা কিন্তু একটা খুব জরুরি জিনিস। যদি সঠিক নিয়মে ডি ওয়ারমিং করাতে না পারেন তাহলে আপনার মা ছাগল অসুস্থ হবে এবং বাচ্চাও কিন্তু দুর্বল হবে।
গাভিন ছাগলকে গর্ভ নিরাপদ নয় এমন ওষধ খাওয়ানো যাবেনা।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১