কবুতরকে শান্তির প্রতিক ও সংবাদবাহক হিসেবে হাজার বছর ধরে সবার মন জয় করে আসছে। কবুতরের কালার,উড়াউড়ি ও খেলা সবার ই ভাল লাগে।অনেকেই শখ করে এবং বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে।সংগী হিসেবে কবুতরের তুলনা হয় না।
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় কবুতর ভাল হয়.পৃথিবীতে প্রায় ২০০-৩0০ জাতের কবুতরের মধ্যে দেশে প্রায় ৩০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়. তাছাড়া দিন দিন লোকজন নতুন নতুন দামি কবুতর বিদেশ থেকে নিয়ে আসছে. একজোড়া ডিম পাড়া কবুতরের দাম ৫০০ টাকা- ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়.
কবুতরের জাত ও দাম
রেসিং এর জন্য: দাম
হোমার(হলুদ) ডিম পাড়া ২৫০০-৩৫০০ টাকা,বিউটি হোমার ৬০০০টাকা
হরসম্যান
ফ্লায়িং ( উড়াল)এর জন্য:
বামিংহাম
রোলার
ফ্লায়িং হোমার
থাম্বলার
হরসম্যান
কিউমোলেট
মাংসের জন্য:
কিং:সাদা,হলুদ,সিলবার এবং নীল রানিংকবুতর ৮০০০,কালো,লাল ৬০০০-২০০০০,অস্টেলিয়ান কিং ৬০০০টাকা
কারনিউ,
মনডেইন :সুইচ এবং ফেন্স
আমেরিকান জায়ান্ট হোমার
রান্ট
গোলা
লক্ষা
টেক্সোনা
কাউরা
ডাউকা
হামকাচচা
শোভা বর্ধনকারি:
ক্যারিয়ার
হোয়াইট ফাউন্টেইন
নান্স
টিম্বালারস
মাল্টেজ
পোটাডা
ট্রোবিট(Trubit)
((মুক্ষি)Mukhi
টেম্লার(Templar)
লোটাল(Lotal)
সিরাজী(Siraji)
(গিরিবাজ)Giribaj
লাহোরী
মডেনা
ফিলব্রিক(Fillbrick)
জেকোবিন(jecobin)
ট্রাম্পার(Trumpeter)
(ফেন্টেইল)Fantail
ময়ূর পংখী
দেশিঃ
গোলা মাংসের জন্য
জালালী
অন্যান্য
সিরাজি(সিলবার), বাচ্চা ১৫০০টাকা
পাকিস্তানি ব্লু সিরাজি ৬০০০-২০০০০টাকা
পাকিস্তানী টেডি ৪০০০০-৭০০০০ টাকা জোড়া
সারটিং,সিরাজি,বোবমাই,ময়না ঝাক,লক্ষা,মাক্সি রেসার,চিলা ২০০০-২৫০০ টাকা জোড়া।
আউল ডিম পাড়া ৩৫০০
সিল্বার মুক্ষি ৩০০০
বুখারা সাদা বাচ্চা ৩৫০০ কালো ৩০০০,ইয়েলো জোড়া ৪০০০০
সরটফেস সাদা (short face) ৩৫০০ নর ২০০০্টাকা
ইয়েলো সরটফেস রেড গিয়ার রানিং ৮০০০
গোলা চুইটাল বাচ্চা ২০০০টাকা
সেডেল ও গোলা
লাহোরী ও লোটাল
ছোয়া চন্দন ও রেসার ১০০০ টাকা জোড়া
ট্রুবিট
মডেনা ব্লু কিং ১০০০০টাকা
ম্যাগপাই ৬০০০টাকা
হাইপিলার
শ্যালো ও ট্রাম্পেটার
পটারও কালদম
জেকোভিন
ফ্রিল ব্যাক (৫০০০০-৬০০০০ জোড়া)
লাক্ষা ( ১৮০০-২০০০ টাকা জোড়া
ট্রোক্সানা
স্কেচার
মুখি (৩৫০০-৪০০০টাকা)
ভারতীয় বোম্বাই ও লোটন ২০০০
গিয়া চুল্লি রানিং ১০০০-১২০০ টাকা জোড়া
ফেলিহেজার
ময়না ঝাক ও নরমাল ঝাক
পাথর চোখ ,সাফ চোখ,মাখরা চোখ ও জলসা চোখ
ক্যাপসিলো (বেবি ১২০০-১৩০০ টাকা রানিং পেয়ার ২৫০০-৩০০০টাকা
শো কিং
করমনা
কাগজী
চুইনা
ফ্যান্টেইন(Fountain)
সব্জী
হেভি জাতের কবুতরের ওজন
জাত এডাল্ট স্কোয়াব(বাচ্চা)
ব্রাউন সুইস ৮০০ গ্রাম ৬০০ গ্রাম
ফ্রেন্স ফন্টেইন ৭৫০গ্রাম ৫৫০ গ্রাম
হোয়াইট কিং ৭৫৫ ৫০০গ্রাম
কারনিও(Carneau) ৭০০ ৪৫০ গ্রাম
হোমার ৭৩০ ৪০০ গ্রাম
দামি কবুতর বছরে ৪ জোড়া বাচ্চা দেয়,প্রতি জোড়ার দাম ১০০০০টাকা
দামি ১জোড়া কবুতর বছরে ১৫০০-২০০০ টাকার খাবার খায়,অন্য খরচ ৪০০০ টাকা
বছরে লাভ প্রায় ৩০০০০ টাকা
জীবনচক্রঃ
ওজন জাতভেদে ২৫০-১০০০ গ্রাম,ছোট ২৫০-৩০০গ্রাম,মাঝারি ৪৫০-৫০০ গ্রাম,বড় ৫০০গ্রাম -১ কেজি।
হারট রেট ১৪০-৪০০ বিট পার মিনিট, ক্লোয়াকাল তাপমাত্রা ৪১’৮ সে্ল সিয়াস
ডিম পাড়তে ৫-৬ মাস লাগে।
ডিমে তা দেয়ার ১৫-১৬ দিন পর কবুতরের খাদ্য থলিতে দুধ জাতীয় বস্তু তৈরি হয় যা খেয়ে বাচ্চা ৪-৭ দিন বেচে থাকে।
১০ দিন পর্যন্ত মা বাবা খাওয়ায় তারপর দানাদার খাবার খায়।
এই দুধে প্রোটিন ১৭.৫%,পানি ৭০%,খনিজ ২.৫% এবং চর্বি ১০%।
২৮দিন পর পর ২ টি ডিম দেয় ১ টি ডিম দেয়ার ২৪ ঘন্টা পর আরেকটি ডিম দেয়.
কবুতর ১২-১৫ বছর বাঁচে কিন্তু ৫-৬ বছর পর্যন্ত ডিম দেয়.
৪-৫ দিনে বাচ্চার চোখ ফোটে।
১০-১২ দিনে পালক উঠে।
২৮-৩০ দিনে বাচ্চা বিক্রি করা হয়.
১৭-১৯ দিন ডিমে তা দেয়.
পালনের সুবিধা:
অল্প পুজি,অল্প জায়গা,অল্প খাবার,অল্প পরিশ্রম,অল্প সময় লাগে.
দেখতে সুন্দর,মন ভাল থাকে,বাড়ির শোভা,আনন্দে সময় কাটে।
সহজে পোষ মানে।
মাংস রোগীর পথ্য ও পুস্টিকর।
মাংসে প্রোটিনের পরিমান বেশি অন্যান্য ডিমের তুলনায়।
গরুর বা অন্য মাংসের তুলনায় সস্তা তাই সবাই কিনতে পারে।
ব্যবস্থাপনা:
বাড়িতে কেউ অল্প করে পালতে পারে আবার খামার করেও পালতে পারে.খামার করতে হলে ৩০-৫০ জোড়া করা যায়.অনেকে আবার বেশিও করে.
বাসস্থান:
উচু,আলো বাতাসযুক্ত এবং দক্ষিনমুখী হতে হবে।
অনেকেই বাড়ির দেয়ালের উপর বরাবর মানে মাটি হতে ২০-২৩ ফূট উপরে করে থাকে.
খামার করতে হলে ৩০-৫০ জোড়া করা ভাল.১৫-২০ পেন।
ঘরের মাপ হবে ৯ ফুট বাই ৮.৫ ফুট লম্বা ।
খোপ হবে ২-৩ তলা
খোপের আয়তন ছোট কবুতরের জন্য ৩০ সেমি বাই ২০ সেমি এবং বড় কবুতরের জন্য ৫০ বাই ৫৫ সেমি.
১জোড়া কবুতরের জন্য ১ঘনফুট জায়গা লাগে,বারান্দা ৫ইঞ্চি আর দরজা ৪ বর্গ ইঞ্চি।
একটা ঘরের সাথে আরেকটা ঘর লাগানো থাকবে মানে পলিহেড্রাল
ঘরের চারদিকে নেট দিয়ে দিলে কবুতর উড়ে যেতে পারেনা.
অনেকে ছাড়া অবস্তায় কবুতর পালে এতে অনেক কবুতর হারিয়ে যায়.
কাঠ,টিন, খড়,লোহা এবং রশি দিয়ে ঘর তৈরি করা হয়.খামারের ভিতর খড় কুটু দিয়ে রাখলে এরা নিজেরাই ঘর তৈরি করে.
ঘরের ভিতর মাটির সরা রাখলে এতে ডিম পাড়ে এবং তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়.
ঘর সব সময় পরিস্কার ও শুকনা রাখতে হবে।
ঘর মাসে ১-২ বার পরিস্কার করতে হবে।
ঘরের পাশে খাবার ও পানির পাত্রা রেখে দিতে হবে।
ঘরের পাশে খড় কুটু রেখে দিতে হবে যাতে কবুতর বিছানা বানাতে পারে।
ঘরের পাশে পানি ও বালু রেখে দিতে হবে যাতে কবুতর নিজেকে পরিস্কার করতে পারে।
খাবার:
খাবার শরীরের ওজনের ১০ ভাগের ১ ভাগ প্রায় ২০-১০০গ্রাম (নরমালি ৩৫-৬০গ্রাম) ,পানি খায় ৩০-৬০ এম এল আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে।
৪-৫ দিন আগে চোখ ফোটেনা তাই মা কবুতর তার পাকস্তলী হতে ক্রিমের মত এক ধরনের দুধ খাওয়ায় সাথে দানাদার খাবার খাওয়ায়.
আমিষ,শর্করা, ফ্যাট,ভিটামিন মিনারেল,পানি এবং লবন দরকার হয়.
ছোট কবুতর ২০-৩০ গ্রাম,মাঝারি কবুতর ৩৫-৫০ গ্রাম,বড় কবুতর ৫০-৫০ গ্রাম খায়.
দানাদার: ধান,কাউন,গম,ভুট্রা,সরগ্ম,বারলি ৬০%।শুধু গম দিলে আঠালো পায়খানা করে।
ডাল জাতীয়: সরিষা,খেসারি,মাটিকলাই,মটর শুটি।,ছোলা ৩০-৩৫%.
৩-৪% ফ্যাট দরকার যা পিনাট বা সয়াবিন থেকে আসে।
প্রোটিন লাগে ১৫% -১৬% যা বিভিন্ন বীজ বা সিরিয়াল থেকে আসে, যেমন,সরিষা দানা।
ভিটামিন বা শাক সবজি দেয়া যায়
দুই বার খাবার দিতে হয় ,খাবার গুলো ঘরের সামনে রেখে দিতে হয় কবুতর প্রয়োজনে খায়।
ইটের কনা,পাথর,ঝিনুকের গুড়া যা ডিমের খোসা শক্ত হয়,তাছাড়া পাথরের গুড়া দেয়া উচিত।
গ্রিট মিক্সার,মিনারেল মিক্সার ও লবণ দেয়া উচিত।
প্রতিদিন কিছু কিছু সবুজ শাক সব্জি দেয়া ।
হলুদ যা এন্টিবায়োটিকের মত কাজ করে.
পানি ৩ বার দিতে হয়.
খাবার মিশ্রনঃ
গম ৪ কেজি
ভুট্রা ১.৫ কেজি
রেজা ছোট ৫০০ গ্রাম
রেজা বড় ৫০০গ্রাম
কাউন ৫০০ গ্রাম
সরিষা ৫০০ গ্রাম
ডাবলি ৫০০গ্রাম
ডাল ১কেজি
বাজরা ৫০০গ্রাম
মুগ ৫০০গ্রাম
মোট ১০ কেজি
আরেকটি খামারের ফরমোলা নিচে দেয়া হলোঃ
গমের ভূষি ১০কেজি
ভুট্রা ভাংগা ৫
গম ভাংগা ৩৫
ধান ৫
চালের কুড়া ১০
চীনা ৮
ডালের মিক্সার ৭
শুটকি ৩
সয়াবিন ৫
ঝিনূক চূরন ২
ভিটামিন প্রিমিক্স ৩
বালি ২
হাড়ের গুড়া ৩
ডিমের খোসা ২
মোট ১০০কেজি
ফরমোলা ৩
গম ভাংগা 2.8kg
ভুট্রা ভাঙ্গা 2.2kg
সরিষা 1kg
ছোলা ভাঙ্গা 1kg
সয়াবিন কেক ,8kg
রাইস ব্রান 1,8kg
লবণ .4kg
টোটাল 10kg
রোগ:
বিভিন্ন রোগ হয় যার মধ্যে গুরুত্বপুন্ন হল:
১।রানিক্ষেত:
শাস কষ্ট,নেজাল ডিজচাজ,মুখ দিয়ে শাস নেয়।
এটি সবচেয়ে খারাপ এবং মৃত্যহার ১০০% হতে পারে.
৫ -১০ সপ্তাহে ০.২৫এম এল চামড়ার নিচে ইঞ্জেকশন ৪ সপ্তাহ পর আবার ১ টি ইঞ্জেকশন ১ বছর ভাল থাকবে।
তাছাড়া কিল্ড টিকা দেয়া যায় যা ৩-৪ মাস পর্যন্ত ভাল থাকে.
২।পক্স:
এটি ঠোট,চোখের পাশে, মুখের ভিতর হয়,ছোট বাচ্চায় বেশি হয়।
৩।।সালমোনেলোসিস:ডায়রিয়া,নারভাস ডিজ অডার,প্যারালাইসীস হয়।
মৃত্যহার ৫-৫০% হয়।
অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ০.৫ এম এল পার কবুতর ১দিন পর পর ৩-৫ দিন ইঞ্জেকশন মাংসে।
৪।।আই বি এইচ( ইনক্লোশন বডি হেপাটাইটিস):
মৃত্যহার ৫-১০০% হয়. গন্ধযুক্ত পায়খানা হয়.
৫।আমাশয়:আইমেরিয়া লেব্বেয়রনা(labbeana,)কলিম্বারাম (colimbarum )স্পিসিস দিয়ে হয়।
মৃত্যহার ১-৫০% হয়
৬।কেংকার বা ট্রাইকোমোনিয়াসিস
থোরাক্স এবং ফ্যারিক্স আক্রান্ত হয়।
মেট্রোনিডাজল ৩০ এম জি পার কেজি মুখে ৫ দিন।
মুখের চারদিকে সবুজাব বা হলুদ লালা.
মৃত্যুহার ৫০% হয়.
তুতে ৩লিটারে ১গ্রাম পানিতে ৫দিন ।
৭।এস্পারজিলোসিস:
মৃত্যুহার ৫০% হয়, পানি বেশি খায় এবং শাস কষ্ট হয়.
তুতে ১ গ্রাম ৩ লিটার পানিতে ১৪ দিন।
নিস্টাটিন ৬২৫ আই ইউ পার কবুতর দৈনিক ৫-৬ দিন।
৮।ক্লেমাইডিওসিস বা অরনিটথোসিস; এটি মূলত বাচ্চাতে হয়।
৯।মাইকোপ্লাজমোসিস;নেজাল ডিজচাজ,মুখ থেকে খারাপ গন্ধ বের হয়।হা করে নিশাস নেয়।
১০।স্টেপ্টু,স্টেফাইলো এবং কলিবেসিলোসিস যা সেপ্টিসেমিক আকারে হয়।
১১।ক্রপ মাইওসিস বা থাস বা সাউর ক্রপ বা মনিয়ালিয়াসিস
বাচ্চায় বেশি হয় , বরষাকালে বেশি হয়, শর্করা খাবার বেশি খেলে হয়,ছত্রাকযুক্ত খাবার খেলে হয়।
১২। কৃমি ,মাইট এবং উকুন
টিংসার অফ আয়োডিন ১ অংশ এবং গ্লিসারিন ৩ অংশ দিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগাতে হবে ইন্ডিভিজুয়াল কবুতরের ক্ষেত্রে ।
তুতে ১ গ্রাম ৩ লিটার পানিতে, নিস্টাটিন ১১-১১০ এম জি পার কেজি খাবারে।
বাচ্চা উঠার আগে সবকিছু পরিস্কার করতে হবে যেমন খোপ,বাসা এবং স্পে করতে হবে.
কবুতর আসার পর ০.৫% ম্যালাথিওনে গোসল করালে পরজীবী দূর হয়.
২-৩ মাস পর কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে.
১ম সপ্তাহে ১ টা
২৫-৩০ দিনে ২য় টা।
৭-১৫ দিন পরপর গোসলের ব্যবস্থা করতে হবে।
খাবার ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে।
টিকার সিডিউল
৭দিনে বি সি আর ডি ভি চোখে ১ফোটা করে
১৫দিনে রানিক্ষেত কিল্ড ০.৩ মিলি করে বুকের মাংসে বা ঘাড়ের চামড়ার নিচে
২৫ দিন পিজিয়ন পক্স ডানায় ছিদ্র করে
৬৫দিনে রানক্ষেত কিল্ড ০.৩মিলি করে ঘাড়ের চামড়ার নিচে
৫-৬ মাস পর পর রানিক্ষেত কিল্ড টিকা
দামি কবুতর হলে ৫৫ দিনে ও ১০৫ দিনে করাইজা করতে পারেন।
৩৫ দিনে টাইফয়েড ও ৭৫ দিনে কলেরা করতে পারেন
ডিম এর যত্নঃ
ডিম পাড়ার ১-২ দিন আগে মাদি কবুতর ডিম পাড়ার জন্য হাড়িতে বসে থাকে, আর যদি ছাড়া কবুতর হয় তাহলে নর মাদি উভয়ই মিলে খড় কুটা, পাতা, গাছের ছোট ডাল দিয়ে বাসা তৈরী করে এবং মাদি সেই বাসায় বসে থাকে।
কবুতর সাধারনত বিকালে বা সন্ধার পর ডিম পাড়ে।
প্রথম ডিম পাড়ার ১ দিন পর ২য় ডিমটি পাড়ে। ডিম পাড়ার পর ১৭-১৯ দিন নর মাদি উভয় কবুতর মিলে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়।
করণীয়ঃ
১। ডিমের জন্য কবুতরকে একটি পরিস্কার হাড়ি দিতে হয়। হাড়িতে কাপড় বা ঝুট বা খড় বা ভুসি মধ্যখানটা একটু নিচু রেখে সমান ভাবে বিছিয়ে দিতে হয়, তবে কাপড় বা ঝুট হলে ভাল হয় কারন খড় বা ভুসিতে পোকা হওয়ার সম্বাবনা থাকে।
২। অবশ্যই ডিম পাড়ার তারিখ লিখে রাখতে হবে।
৩। প্রথম ডিমটি পাড়ার পর একটি প্লাস্টিকের ডিম দিয়ে কবুতর যে ডিমটি পেড়েছে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।
৪। ২য় ডিমটি পাড়ার পর প্রথম ডিমটি হাড়িতে দিয়ে প্লাস্টিকের ডিমটি সরিয়ে ফেলা উচিত।
দুটি ডিম একসাথে তা দেয়া শুরু করলে দুটি বাচ্চা বাচার সম্ভবনা ৮০% বেড়ে য়ায়। কারন প্রথম ডিমটি বেশির ভাগ সময়ই নরবাচ্চা থাকে আর আগে ফুটার কারনে বাচ্চার সাইজটা বড় হয়ে যায়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই পরের বাচ্চাটি আকারে একটু ছোট থাকে। এই ছোট বড়র কারনে বড় বাচ্চাটি বেশি খাবার পায় এবং ছোট বাচ্চাটি কম খাবার পাওয়ার কারনে দুর্বল হয়ে এক সময় মারা যেতেপারে। তাই সবসময় দুটি ডিম একসাথে তা দিতে দিন।
৫।অনেক সময় কবুতর পাতলা খোসাযুক্ত ডিম পাড়ে। এই ডিমে সাধারনত বাচ্চা হয় না। আর এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। প্রথমবার ডিম পাড়ার সময় এমন হতে পারে। আর ডিম পাড়ার আগে যদি কবুতর ভয় পায় তাহলেও অনেক সময় এরকম ডিম পাড়ে। ভিটামিনের অভাবজনিত কারনেও এটা হতে পারে। পাতলা খোসা যুক্ত একটা আর একটা যদি স্বাভাবিক ডিম হয় তাহলে পাতলা খোসার ডিমটি ফেলে দিন না হলে এটা ফেটে গিয়ে ভাল ডিমটিও নস্ট হয়ে যেতে পারে। মোট কথা পাতলা খোসার ডিম চোখে পড়া মাত্র সরিয়ে ফেলুন আর ফেলে দিন।
৬। ডিম পাড়ার ৪-৫ দিন পর ডিম দুটি টর্চ বা আলোতে নিয়ে পরিক্ষা করুন ডিম জমছে বা ফার্টেইল হয়েছে কিনা। যদি দেখেন ডিমের মধ্যে শিরা বা রগের মত দেখা যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন ডিমগুলি ফার্টেইল বা এতে বাচ্চা হবে। আর যদি দেখেন ডিমের কুসুম দেখা যাচ্ছে বা ডিমের ভিতরে কোন পরিবর্তন হয় নাই তাহলে এই ডিমে বাচ্চা হবে না। তখন এই ডিম ফেলে দিন এতে কবুতর আবার ডিম পাড়ার জন্য দ্রুত তৈরী হবে।
৭। ডিম চেক করার সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন। ডিমে বসা কবুতর কোন কারনে বিরক্ত হলে খুব রাগত থাকে এবং যে কোন মুল্যে ডিম রক্ষার চেস্টা করে।
৮। যখন ডিম চেক করবেন তখন হাড়িতে বসা কবুতরের বুকের নিচে হাত দিয়ে কবুতরটা সরিয়ে হাড়িটা বের করে নিয়ে আসুন। খুব সাবধানে ডিম নাড়াচাড়া করবেন। ভুলেও ডিমে ঝাকি দিবেন না। চেক করা হয়ে গেলে সাবধানে হাড়িটা যথাস্হানে রেখে দিন।
৯।ষোলো দিনে ডিমগুলি আরেকবার চেক করতে হবে। যদি ডিমের ভিতরের বাচ্চা সুস্হ থাকে তাহলে ডিমটা কানে দিলে কট কট শব্দ সুনতে পাবেন (ব্যাতিক্রম হতে পারে)। ডিম গুলি রাখার আগে ভেজা নেকড়া বা ঝুট দিয়ে মুছে দিতে পারেন এতে ডিমের খোসা নরম হবে এবং খুব সহজে বাচ্চা ডিম থেকে বের হতে পারবে।
১০। যদি ২য় ডিম দেয়ার তারিখটি ধরেন তা হলে সতেরতম দিনে ডিমে বাচ্চা ফুটার কথা। আর বাচ্চা ফুটার সময় একটু বিশেষ নজর দেয়া দরকার। অনেক সময় কবুতর ডিমের খোসা সরায় না, এ ক্ষেত্রে এ কাজটা আপনাকে করতে হবে, খোসা গুলিকে হাড়ি থেকে সরিয়ে দিতে হবে, খালি খোসার কারনে বাচ্চার মৃত্যু ঘটতে পারে।
১১।অনেক সময় বাচ্চা ডিম থেকে বের হতে পারে না এ ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ ভুমিকা নিতে হবে এবং খুব আলতো করে ধরে ধিরে ধিরে ডিমের চারিদিক গোলাকার ভাবে ভেংগে বাচ্চাটিকে বের করতে হবে আর বাচ্চা বের হবার পর এর নাভি এন্টিসেপটিক জাতিয় ঔষধ দিয়ে মুছে দিন, এতে নাভিতে ইনফ্যাকশনের সম্ভবনা অনেক কমে যাবে।
১২। হাত দিয়ে ডিম থেকে বাচ্চা বের করার সময় যদি দেখেন কুসুম এখনো বাহিরে বা রক্ত বের হচ্ছে তাহলে ঐ অবস্হায় ডিমটা রেখে দিন ৬-৮ ঘন্টা পর বাচ্চাটি আবার ডিম থেকে বের করে নিন।
১৩। অসাবধানতার কারনে যদি কখনো ডিমের উপরি ভাগ ফেটে যায় কিন্তু ডিমের পর্দা ঠিক থাকে তাহলে চিন্তার কিছু নাই সাদা টেপ ফাটা যায়গায় লাগিয়ে দিন আর মনে রাখবেন যত কম টেপ ব্যবহার করবেন ডিমে বাচ্চা জমার সম্ভবনা তত বেশি। যদি ডিমের পর্দা ফেটে
যায় তাহলে ঐ ডিম ফেলে দিন।
কবুতর ডিমে তা না দেয়ার কারণ
জায়গা ও খাচা পরবরতন হলে।
জায়গা কম হলে।
বিরতীহীনভাবে ডিম ও বাচ্চা দিলে।
প্রথম বাচ্চা দিলে।
শরীরে উকুন বা পোকা হলে।
অনেকদিন গোসল না করালে।
ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে।
কবুতরের পর কি চেনার উপায় কি
পর হলো পালকের পরিববরতন।
পর দেখে বয়স বুঝা যায়।
খেতে শিখলে তাকে নীল পর বলে।
উড়াল দিতে শিখলে ০ পর বলা হয়।
১-৭/৮ পর উঠার আগে বেবি বলা হয়।
৭/৮ পর থেকে ১০ পর উঠার পর থাকে সেমি এডাল্ট বলে।
১ পর থেকে আরেক পর উঠতে ২ সপ্তাহ লাগে।
পাখা মেলে নিচের দিক থেকে গুনতে হবে ১ থেকে ১০ পর এবং নতুন পালক টি খুজে বের করতে হবে।
নর ও মাদি চেনার উপায়
নর ভয় পায় কম,রাগি হয়,গলা ঘাড় মোটা হয়।
মাদি খুব ছটফটে হয়,ঘাড় চিকন হয়,পায়খানার রাস্তার দিকে পিউবিক বোন আছে যেখানে হাত দিলে মাদি হলে প্রশস্ত হয় ডিম পাড়ার জন্য কিন্তু নর হলে সরু হয়।
জোড়া মেলানোর উপায়ঃ
২ টি কবুতর আলাদা খাচায় রেখে ২টি খাচা পাশাপাশি রেখে দিলে ১-৩ দিনে মিলে যাবে তবে অন্য কোন কবুতর যেন কাছে না থাকে।
১ বা ২টি যদি খাচার কাছে এসে মাখা নিচু করে ডাকতে থাকে তাহলে বুঝা যায় তারা মিলে গেছে।
কেউ যদি ৩০ জোড়া ৫০০টাকা করে কিনে
তাহলে ৩০৫০০:১৫০০০ টাকা. খাবার খাবে প্রতি টি ৩৫ গ্রাম করে ৩০ জোড়ায় ১ কেজি যার দাম ৫০ টাকা করে ৩০ দিনে ৩০৪০: ১২০০ টাকা
আর ৩০ জোড়ার বাচ্চা যদি মাসে ২৫ জোড়া হয় তাহলে ২৫*২০০:৫০০০টাকা
তাহলে মাসে লাভ ৫০০০-১২০০:৩৮০০ টাকা.
কবুতর পালনের সমস্যা ও সমাধান;
রোগ ও চিকিৎসাঃসঠিক রোগ নির্ণয়ের অভাব এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসার অভাব।
সুষম খাবারঃবাচ্চা বয়স থেকে সুষম খাবার দেয়ার অভাবে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে ডিম পাড়েনা বা ডিম পাড়লেও বাচ্চা ফোটেনা।
ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতিঃডিম পাড়ার জন্য নির্দিষ্ট বয়সে নিরদিষ্ট ভিটামিন মিনারেলের দরকার হয়।
মাসে ২ বার ভাল মানের মিটামিন ও মিনারেল দিতে হবে।
খাবার ও পানির পাত্রের পরিচ্ছন্নতার অভাব,সপ্তাহে ২ দিন পরিস্কার করা উচিত।
ঘর মাসে ১-২ বার পরিস্কার করা উচিত।তাছাড়া জীবাণূনাশক দিয়ে স্প্রে করা উচিত।
পানির পাত্র প্রতিদিন করলে ভাল।
খাবার শুকিয়ে পরিস্কার করে দেয়া উচিত।
কৃমির ওষধ খাওয়ানো ৪৫-৬০ দিন পর পর ও কবুতরকে ৭ দিনে পর পর গোসল করানো উচিত সাথে জীবানূনাশক যেমন ভাইরোসিড বা বা টিমসেন দিতে পারেন।
গোসলের জন্য পানি ও বালি এবং বাসা বানানোর জন্য খড় আশেপাশে রাখা উচিত যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে।
রানিক্ষেতের টিকা দেয়া।
মাসে ১টা সালমোনেলার ডোজ দেয়া যায়।
নিজের থানা থেকে কবুতর কিনা ঠিক না কারণ কবুতর সহজেই আগের মালিকের বাড়িতে চলে যেতে পারে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৩অক্টোবর ২০২১