শীতকালে যেসব কারণে মুরগির বাচ্চা মারা যেতে পারে, সর্তক হতে জেনে বিষয়গুলো

316

অত্যাধিক ঠান্ডা অনুভুত হবার কারণে বাচ্চাতে যে ধকল পরে তাকেই কোল্ড স্ট্রেস বলে। কোল্ড শকে বাচ্চা সরাসরি মারা যায় এবং সংখ্যাটা তেমন বেশি না। কিন্তু কোল্ড স্ট্রেসে বাচ্চা মারা না গেলেও এটা যে ক্ষতি করে যায় তার ব্যপকতা কোল্ড শকের চেয়ে বেশী।

সঠিক পর্দা ব্যবস্থাপনা ও শেড অ্যামোনিয়া গ্যাস মুক্ত থাকার পরেও শুধুমাত্র কোল্ড স্ট্রেস বা ঠান্ডা অনুভুতির কারনেও ব্রয়লারে এসাইটিস্ হতে পারে।

কোল্ড স্ট্রেসের কারণ

১. অপর্যাপ্ত তাপের ব্যবস্থাঃ ব্রুডিং পিরিয়ডে পর্যাপ্ত তাপের ব্যবস্থা না করলে বাচ্চাগুলো শীত অনুভব করে। কারন এই সময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্গানগুলো বাচ্চাগুলোতে পরিপূর্নভাবে বিকশিত হয় না।

২. অনেক বড় ব্রুডিং এরিয়াঃ
বেশী বাচ্চা একসাথে ব্রুডিং করলে ব্রডিং এরিয়া বড় করতে হয়। ফলে পরিধির দিকে তাপ কম যায় এবং সেখানকার বাচ্চাগুলোতে তাপ লাগে না।

৩. ব্রুডিং পর্দাঃ শীতকালে ব্রুডিং এরিয়ার চারপাশে আলাদা পর্দা দিয়ে ছোট ঘর বানাতে হবে। এতে তাপের অপচয় রোধ হবে। এমনটি না করলে তাপ পরিচলন প্রক্রিয়ায় ব্রুডিং এরিয়া থেকে শেডের অন্য ঠান্ডা স্থানে সঞ্চালিত হবে। ফলে ব্রুডিং এরিয়ায় প্রত্যাশিত তাপ পাবেন না। এবং বাচ্চাগুলো কোল্ড স্ট্রেসের শিকার হবে।

৪. কম পুরুত্বের লিটারঃ শীতকালে ব্রুডিং এ লিটারের পুরুত্ব কম হলে নীচ (ফ্লোর) থেকে ঠান্ডা বাচ্চাতে সঞ্চালিত হয় এবং কোল্ড স্ট্রেসের সম্মুখীন হয়। ব্রয়লারের বাচ্চার শরীরে তাপের সঞ্চার ঘটে মুলত পায়ের পাতা দিয়ে। তাই পায়ের নীচের লিটার পুরু করে দিতে হবে যেন নীচ থেকে কোন ঠান্ডা না পায়।

৫. শৈতপ্রবাহঃ শেডের পর্দা যদি ছেঁড়া, ফাঁটা হয় তবে সেখান দিয়ে ঠান্ডা বাতাস ভিতরে প্রবেশ করে তাপের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। যার ফলে বাচ্চাতে কোল্ড স্ট্রেস পরে।

কোল্ড স্ট্রেস কিভাবে বুঝবেন
১. বাচ্চা গুলোর পায়ের তালু আপনার গালের সাথে স্পর্শ করলে যদি আপনি ঠান্ডা অনুভব করেন তবে বুঝবেন বাচ্চাগুলো কোল্ড স্ট্রেসে আছে।

২. এটি খুবই প্রচলিত পদ্ধতি এবং সবার জানা। যদি দেখেন বাচ্চাগুলো ব্রুডারের যেকোন এক কোনায় বা হোবারের নিচে গাদাগাদি করে অবস্থান করছে তাহলে ধরে নেন ব্রুডিং এরিয়ায় তাপ কম আছে। এবং বাচ্চাগুলো স্ট্রেসের শিকার।

কোল্ড স্ট্রেস হলে কি হবে
১. কোল্ড স্ট্রেস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বাচ্চাগুলো খাদ্য থেকে প্রাপ্ত শক্তির বেশীরভাগ দৈহিক তাপ উৎপাদনে ব্যয় করবে। ফলে এক্ষেত্রে স্বাভাবিক গ্রোথ ব্যহত হবে।

২. কোল্ড স্ট্রেসে পড়লে বাচ্চাগুলোর পেরিফেরাল ভেসোকন্সট্রিকশন হয়। ফলে পেরিফেরাল টিস্যুতে ব্লাড সাপ্লাই দিতে ও তাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে হার্টকে বেশী (সংখ্যা+স্ট্রেন্থ) পাম্প করতে হয়। যার ফলে এসাইটিস্ হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

৩. কুসুম থলি এ্যবজর্ভড হবে না। ফলে সেখানে ব্যকটেরিয়াল ইনফেকশনের চান্স বৃদ্ধি পায়।

প্রতিকার: যে যে কারণে বাচ্চা কোল্ড স্ট্রেসের শিকার হতে পারে সেদিকগুলোতে নজর দিলেই এটি রোধ করা সম্ভব।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০১ নভেম্বর ২০২১