প্রতিকেজি ব্রয়লারে খামারিদের লোকসান প্রায় ৩৫ টাকা!

235

কোনভাবেই কুল খুঁজে পাচ্ছেন না দেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা। দেশের প্রোটিনের একটি সহজলভ্য উৎস পোল্ট্রি পণ্য। যা দেশের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই পোল্ট্রি পণ্যের উৎপাদনে যারা কাজ করে সেই পোল্ট্রি খামিরারাই পাচ্ছেন না তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগিতে খামারিরা লোকসান গুনছেন প্রায় ৩৫ টাকা।

বাচ্চার অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, ফিডের দাম বৃদ্ধি, পোল্ট্রি পণ্যের বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগির বাজার মূল্যের অবনতি, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, ভ্যাকসিনসহ অন্যান্য ঔষদের দাম বৃদ্ধিসহ বহুমুখী সঙ্কটে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা।

খামারিরা বলছেন, এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ১৪০-১৪৫ টাকা। কিন্তু বর্তমানে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা দরে। এতে করে প্রায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৩০-৩৫ টাকা।

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজারের পোল্ট্রি খামারি মোর্শেদ বলেন, প্রতি কেজি ফিডের দাম ৬৩ টাকা, ব্রয়লার বাচ্চা কিনতে হচ্ছে প্রায় ১০-১৫ টাকা দরে। প্রতিটি বাচ্চা লালন পালনে ভ্যাকসিন, বিদ্যুৎ, ঔষধ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচসহ প্রায় ১৪০-১৪৫ টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু বাজারে সেই মুরগি বিক্রি করত এহচ্ছে ১১০ টাকায় । এছাড়াও কিছু বাচ্চা বিভিন্ন কারণে মারা যায় এতে করে গড়ে উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যায়। যার ফলে বর্তমান বাজার দরে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

মিল্লাত নামে আর এক খামারি বলেন, গত শেডে লস করেছি। ভাবলাম সামনে হয়তো দাম বাড়বে তাই শেডে আবার বাচ্চা উঠাইছি। কিন্তু বর্তমান বাজারমূল্যে নিশ্চিত আবারও লস হবে। তাই ভাবছি এই অনিশ্চিত ব্যবসা গুটিয়ে অন্যকিছু করব।

নরসিংদির খামারি সোহেল বলেন, বর্তমানে ফার্মে মুরগি তুলতে ভয় পাচ্ছি। বর্তমান দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রিতে খরচের টাকা উঠছে না। করোনাকালীন সময়ে অনেক লোকসান গুনেছি। এখনো যদি লোকসান করি তাহলে এই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। এছাড়াও প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে গুনতে অনেক খামারি পোল্ট্রি ব্যবসা বাদ দিয়ে বিকল্প পথে রুজির ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

ফার্মসএন্ডফার্মার/৩১মে ২০২২