ভাইরাস ঘটিত রোগ খামারের ধ্বংস ডেকে আনে। সম্পূর্ণ খামারের মুরগি উজাড় করে দেয়। তাই খামারিদের এ বিষয়ে অনেক প্রশ্ন। আসুন জেনে নেই মুরগির বাচ্চার মাথা ঝিমানোর কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত পরামর্শ।
মুরগির ১০-১৫ দিন বয়সে গামবোরো রোগ হয়। সাধারণত ৩-৬ সপ্তাহের মুরগির বাচ্চায় তীব্র আকারে দেখা দেয় । তবে ০-৩ সপ্তাহের বাচ্চায় এ রোগ হতে পারে । মুরগি ছাড়া হাঁস ,টার্কি এবং গিনি ফাউলে এ রোগ হয় । আক্রান্ত বাচ্চা মুরগির পায়খানার মাধ্যমে এই ভাইরাস পরিবেশে আসে পরে দূষিত খাদ্য ,পানি এবং লিটারের (মুরগির বিছানা )মাধ্যমে এ ভাইরাস এক মুরগি থেকে অন্য মুরগিতে ছড়ায়।
গামবোরো ভাইরাসজনিত একটি ছোয়াচে রোগ। ভিরনা ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে ।সর্বপ্রথম যুক্তরাষ্ট্রের ডেলোয়ারি স্টেটের গামবোরো নামক স্থানে এই রোগটি সংক্রমিত হয় ।এ রোগে মুরগির লসিকা গ্রন্থি বারসাকে আক্রান্ত করে বলে তাকে ইনফেকসাস বারসাল ডিজিজ বলা হয় ।এ রোগে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আক্রান্ত হয় তাই গামবেরো রোগকে আভাইন এইডস বলে আখ্যায়িত করা হয় ।এ রোগে মৃত্যুর হার ২০- ৯০%।
চিকিৎসা: সাধারণত ভাইরাসজনিত রোগের কোনো চিকিৎসা নাই। দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এন্টিবায়োটিক (অক্সিটেট্রা সাইক্লিন ,সিপ্রোফ্লক্সাসিন ) ব্যবহার করা হয় এবং তার সঙ্গে ভিটামিনস (ভিটামিন -সি ) ,ইলেকট্রোলাইট দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় ।রোগ হলে স্থানীয় প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।
গামবোরো রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা ব্যবহার করতে হবে ।যে কোন বাচ্চার টিকা দেয়ার আগে মা থেকে প্রাপ্ত এন্টিবডির মাত্রা জেনে নিতে হবে ।সুস্থ বাচ্চাকে টিকা দিতে হবে এবং অসুস্থ বাচ্চাকে টিকা দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।টিকা দেয়ার সময় বাচ্চার ওপর যেন কোনো ধকল না পরে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ব্রয়লার বাচ্চার ক্ষেত্রে সাধারণত ১৪ দিন বয়সে জীবন্ত টিকা দেয়া হয় ।টিকা ড্রপারের মাধ্যমে বা খাওয়ার পানির মাধ্যমে দেয়া যেতে পারে ।ব্রয়লারের বুস্টার ডোজ ২১ -২৮ দিনের মধ্যে দেয়া যেতে পারে।লেয়ারের ক্ষেত্রে সাধারণত ১ দিন বয়সে মৃত টিকা দেয়া হয় ।তারপর ১৪ দিন ও ২১ – ২৮ (বুস্টার ডোজ ) দিনের মধ্যে জীবন্ত টিকা দেয়া হয় ।ব্রয়লারের ক্ষেত্রে মৃত টিকা দেয়ার প্রয়োজন হয় না কারণ তার জন্য দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করার দরকার হয় না এর আগে এর বাজারজাত করা হয়।
তবে, মুরগির বাচ্চার বয়স ১০-১৫ দিন হলে আর মাথা ঝিমোচ্ছে! এমন পরিস্থিতিতে অ্যামোক্সিসিলিন অথবা মোক্সাসিলিন অথবা কলিস্টিন গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াতে হবে। ফুসিড ট্যাবলেট ১টা ২ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১ দিন খাওয়াতে হবে। স্যালাইন খাওয়াতে হবে। হ্যাচারির ইনকিউবেটরের মাধ্যমে আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে রোগের প্রতিরোধ ও বিস্তার রোধ করা সম্ভব।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৮জুন ২০২২