বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ২৫ শে জুন। আর এ মধ্যে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে শরীয়তপুরের পোলট্রি খামারিরা। যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় এতদিন ঢাকায় পণ্য পাঠাতে হিমশিম খেলেও, এখন নিজেরাই পণ্য সরবরাহ করবেন রাজধানীসহ সারা দেশে।
জানা যায়, ভৌগোলিকভাবে শরীয়তপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৯৫ কিলোমিটার। পদ্মা নদী থাকায় সরাসরি গাড়িতে করে ঢাকা যাওয়া যায় না। ফেরিতে করে পার হয়ে ঢাকায় যেতে হয়। এতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। বর্তমানে পদ্মা সেতু ফলে ঢাকার বাজার ধরা সম্ভব। তাছাড়া ঢাকার বাজারে সব সময় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি পাওযা যায়। যার ফলে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় প্রতিবছর মুরগির মাংস উৎপাদন হয় ৩২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ও সাড়ে ১১ কোটি ডিম উৎপাদিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে জেলায় ২০ হাজার মেট্রিক টন মাংসের চাহিদা রয়েছে। ১ হাজার ৪৭৮টি মুরগির খামারে এই মাংস ও ডিম উৎপাদিত হয়। যার মধ্যে সোনালি ৩৯৯টি, ব্রয়লার ৯৭৭টি ও লেয়ার মুরগির ১০২টি খামার রয়েছে।
সদর উপজেলার নারী উদ্যোক্তা তামিম পোল্টির পরিচালক ফাতেমা বেগম বলেন, মুরগি পালন করে সংসারে সচ্ছতা ফিরেছে সংসারে। বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ৯টি শেডে ৭ হাজার ডিম পাড়া মুরগি রয়েছে। এত সন আমার খামারের মুরগি ও ডিম শুধু শরীয়াতপুরসহ এর আশেপাশে সরবরাহ করা হতো। পদ্মা সেতু হওয়ায় আমি এবার ঢাকার বাজার ধরতে পারব।
খামারি ইয়াসদান বেপারী বলেন, আগে যখন আমরা ঢকায় মুরগি পাঠাতাম তখন দেখা যেত ঢাকা পৌঁছতে পৌঁছতে ২০ থেকে ২৫ টা মুরগি মারা যেত। ডিম পাঠালে ডিম নষ্ট হয়ে যেত। ভালো টাকা নষ্ট হয়ে যেত। এখন আর আমাদের লোকসান হবে না।
মুরগির খামারে কাজ করার শ্রমিক আল আমিন বলেন, শরীয়াতপুরে মুরগি উৎপাদন ভালো হয়। কিন্তু বড় কোন বাজার না পাওয়ায় ভালো দাম পাচ্ছে না খামারিরা। পদ্মা সেতু খুলে দিলে মুরগির বাজার বড় হবে। এতে যেমন মালিকের অবস্থার পরিবর্তন হবে, তেমনি আমাদের শ্রমেরও দাম বাড়বে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুবোধ কুমার দাস বলেন, শরীয়তপুরে খামারিরা বড় বাজার না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় ভুগছিলেন। পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় বাজার তারা ধরতে পারবেন। এতে এত দিন ধরে যে ক্ষতিতে তারা পড়েছেন, তা থেকে নিরসন পাবেন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৯জুন ২০২২