ফিডের দাম বৃদ্ধিতে বন্ধ হচ্ছে খামার, লোকসানে খামারিরা!

810

আন্তর্জাতিক বাজারে পোল্ট্রি খাদ্যের কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশে্র পোল্ট্রি সেক্টরে। এতে করে পোল্ট্রি খাদ্যের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে খামারিদের পোল্ট্রি পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু যে হারে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে সে হারে বাড়েনি ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। এছাড়াও ফিডের কাঁচামালের দাম বাড়ায় অনেক ফিড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফিড উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। এতে করে বাজারে ফিড সংকটের পাশাপাশি দাম বেশি হওয়ায় খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা। পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদনের ব্যয়ের সাথে আয়ের ভারসাম্য না হওয়ায় লোকসানে পড়ছেন প্রান্তিক খামারিরা।

গত নয় মাসে প্রতি কেজি পোলট্রি ফিডের দাম ১২ টাকা বাড়লেও সেভাবে বাড়েনি মুরগির দাম। লাভ না হওয়ায় খামার বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে মামুন নামে একজন খামারি বলেন, আমাদের সাত হাজার শেড ছিল। প্রায় সবই বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৮০ টাকা কেজি। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা।

বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৯৮ হাজারের বেশি পোলট্রি খামারি ছিলেন। ইতোমধ্যে ফিডের দাম বাড়ায় মুরগির সরবরাহ-সংকটের মুখে খুচরা বাজার। এ অবস্থায় পশুখাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারাও নিরুপায়। কারণ পোল্ট্রি ফিডের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সিংহভাগই আমদানি নির্ভর। চড়া আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবে দেশেও বাড়ছে দাম। সয়াবিন মিলের দাম বেড়েছে ৮৮ শতাংশ আর অন্যান্য কাঁচামালের বেড়েছে ১২৩ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া গত দুই বছরে কাঁচামালের দাম বেড়েছে গড়ে ৬৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে প্রকট হয়েছে সরবরাহ সংকট। এরই মধ্যে বন্ধ হয়েছে ৮০টির মতো কারখানা।

পাবনা জেলা প্রান্তিক পোলট্রি শিল্প সংগঠনের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বলেন, খাবার, ওষুধসহ পরিচর্যা ব্যয় ধরে একটি লেয়ার মুরগি ডিম দেয়ার উপযোগী করতে উৎপাদন খরচ কমপক্ষে ৭০০ টাকা, ডিম দেয়া শুরু করলে মুরগিটি প্রতিদিন আট টাকার খাবার খায়। খামারের সব মুরগি খাবার খেলেও প্রতিদিন ডিম দেয় না। বর্তমান বাজারে প্রতিটি ডিমের পাইকারি দাম আট টাকা। এতে খামারিদের টানা লোকসান গুনতে হচ্ছে। পাশাপাশি কোনো কারণে মুরগি মারা গেলে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে খামারিদের।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৩জুন ২০২২