নিচের বিষয় গুলি অনেকেই মানে না তাই তাদের বিভিন্ন রোগ হয়,ওজন কম আসে।
সেডের প্রস্থ ঠিক নাই(লেয়ারের ২পিরামিডে ২ সারি হলে ২৩-২৪ফুট আর এক সারি হলে ১২ফুট থাকা উচিত যা থাকে না।
২সারির বেশি ভাল না ভিতরের গ্যাস বেশি হয় প্রডাকশন কম থাকে,অনেকে ৩ সারি করে এতে ভিতরের লাইনে ডিম কম পাড়ে।
সেমি কন্টোল সেড হলে যে কোন জায়গায় যে কোন মাপে সেড করা যায়।তবে একটু বিবেচনা করে করা উচিত।নরমালী সেমি কন্টোলে প্রস্থ ৪০-৫০ফুট রাখা হয়।
পূর্ব পশ্চিম করা লাগে কিন্তু অনেকেরই উত্তর দক্ষিণ করে।
ফ্লোর থেকে সাইডের পিলারের উচ্চতা ৯ফুট।তবে দক্ষিণাঞ্চলে ঝড় বৃস্টির জন্য উচ্চতা অম রাখে।টিনের তুলির উচ্চতা ১৪-১৫ফুট হলে ভাল।
যদি পুকুর বা নদীর উপর মাচায় সেড বানানো হয় হয় তাহলে পিলারের উচ্চতা ৬-৭ফুট উচ্চতা হলেই হবে।
পর্দা নিচ থেকে উপরের তুলার সিস্টেম থাকতে হবে বা পর্দার ২টি পার্ট থাকা উচিত,নিচে ৪ফুট তারপর আবার উপরে ৪-৫ফুট তবে একদম উপরের দিকে ফাকা থাকতে হবে।
পলিথিন পর্দা দেয়া ভাল নাতবে শীতে ব্রুডিং এ দেয়া যায়।ব্রুডিং ও গ্রোয়ং সেড আলাদা হলে ভাল ।বিভিন্ন বয়সের মুরগি এক সাথে পালা যাবে না।
সেডের চারদিকে ৪-৫ফুট দূরে বেড়া দেয়া উচিত।
সেডের আশপাশ বা ভিতরে যাতে দেশি মুরগি,কবুতর,হাস,টার্কি,চড়ুই,শিয়াল,কুকুর,বেজি,ইদুর,মাছি,মশা না ঢুকে কিন্তু বাস্তবে প্রায় অধিকাংশ ফার্মে থাকে।
চালের বাড়তি অংশ ৩ফুট থাকা উচিত যা অধিকাংশ ফার্মে নাই।
ফ্লোর কাচা হলে সেড বানানোর শুরুতে মাটির ৪ ইঞ্চি নিচে পলিথিন দিলে ফ্লোর ভাল থাকে,ভিজে না।লিটার জড়িত রোগ হবে না।
লিটারের উচ্চতা কাঠের গুড়া হলে গরমে মিনিমাম ১ ইঞ্চি আর শীতে ১.৫ ইঞ্চি রাখা উচিত আর তুষ হলে শীতে মিনিমাম ২ইঞ্চি,গরমে ১ইঞ্চি কিন্তু তা মানা হয় না।ডিপ লিটার মানে ফ্লোরে লেয়ার পালন করলে ৪-৬ ইঞ্চি।গরমে ৪ শীতে ৬ইঞ্চি।এখন আর ডিপ লিটারে লেয়ার তেমন পালন করে না।
পুরান লিটারের সাথে নতুন লিটার মিক্স করে লিটার ছড়াতে হবে।সরাসরি নতুন লিটার নতুন জায়াগায় দেয়া যাবে না।
পুরান লিটার মিনিমাম ২৫%-৫০% থাকা উচিত।
লিটার হিসাবে চুষ দেয়া উচিত অন্তত পক্ষে ১৫-২০দিন(ব্রয়লারের ক্ষেত্রে)।লেয়ার বা সোনালী হলে সব সময় তুষ রাখা উচিত এতে মুরগি ভাল থাকবে।কক্সি হবে না ফলে আমাশয় ও গাম্বোরু হবার সম্বাবনা থাকবে না।
লিটার যাতে বাতাসে না উড়ে এমন হতে হবে অথচ অনেকের ফার্মেই লিটার ঊড়ে নাকে চোখে গিয়ে মাইকোপ্লাজম,আই বি হয়।
খুব বেশি ভিজা হলে আমাশয়/ এন্টারাইটিস হয়।আমরা কয়েক হাজার টাকা বাচাতে গিয়ে বা না বুঝে লিটার নস্ট করে ফেলে।
পর্দা উপর থেকে নিচে প্রয়োজন অনুযায়ী নামাতে হবে।অথচ প্রায় অধিকাংশ পর্দা নিচ থেকে উপরে তুলে যাতে গ্যাস হয়।এতে ভিতরের গ্যাস হবে না আর গ্যাস না হলে শ্বাসনালীর রোগ হবে না।
ব্রুডিং এ তাপমাত্রা ও আলো উভয় ক্ষেত্রেই বালব ব্যবহার করি অথচ তাপমাত্রা ও আলো দুই জিনিস।ব্রুডিং এ আলো ও তাপ ১টিই দরকার কিন্তু ব্রুডিং ছাড়া শুধু আলো দিলেই হবে।
তাপমাত্রা সপ্তাহ অনুযায়ী যা রাখার দরকার তাই রাখতে হবে,বালব দিতেই হবে এমন কোন কথা নাই।গরমে যদি তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয় তাহলে বালব/তাপ দিতে হবে না।যদি তাপ কম থাকে তাহলে দিতে হবে।রাতে শুধু আলোর জন্য দিলেইহবে।
ব্রুডারে বাচ্চা কত দিন থাকবে তা তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে তবে শীতে ৭-১০দিন আর গরমে ৩-৫দিন রাখা যেতে পারে।তবে প্রয়োজনে চিক গার্ড বাড়ানো যেতে পারে।ব্রুডারে বাল্বের জন্য ৪টি পয়েন্ট থাকে তাই ইচ্ছে করলেই বাল্ব বেশি দেয়া যায় না।
প্রতিদিন পানির পাত্র ক্লোরিন দিয়ে ধূইয়ে দিলে ভাল,সম্বব না হলে পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।
ওয়াটের সাথে লাক্সের সম্পর্ক আছে বয়স অনুযায়ী তা মেনে চলা উচিত যা মানা হয় না.২ সপ্তাহে পরে লাক্স বা আলোর তীব্রতা অনেক কমিয়ে ফেলতে হবে কিন্তু অধিকাংশ ফার্মে আলোর তীব্রতা বেশি থাকে।এতে স্টেস বেশি পড়ে ।
শীতে পর্যাপ্ত তাপ দিতে পারে না।
খামারীরা মুরগিকে জায়গা দিতে চায় না।
ব্রয়লারকে ১৪-২১দিনেদিনের মধ্যে সব জায়গা দিতে হবে।লেয়ারকে ৩০-৪৫ দিনের মধ্যে মধ্যে সব জায়গা দেয়া ভাল।
১ম ১০দিন বারবার অল্প করে খাবার দেয়া উচিত।কিন্তু অনেকেই বেশি করে খাবার দিয়ে বাজার করতে চলে যায়।
২-৩ ঘন্টার মধ্যে অবশ্যই ব্রুডিং সেডে এসে দেখে যেতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে ১-১০দিন পর্যন্ত।
ব্রুডিং এ খামারীকে বাচ্চার মায়ের ভূমিকা পালন করতে হয় তাই ১০-১৫দিন বাচ্চার কাছে থাকা উচিত।
ভাল মানের বাচ্চা ও খাবার দেয়া উচিত কিন্তু সব সময় তা সম্বব হয় না।
১ম দিনই লিটারের উপর ১০+১৩ স্তর পেপার বিছিয়ে দেয়া উচিত এতে উপরের পেপার ভিজে গেলে সরিয়ে নেয়া সহজ হয়।
দরকার না হলেও ভ্যাক্সিন ও অপ্রয়োজনীয় মেডিসিন দেয়া ঠিক না।ব্রুডিং এ অনেকেই ওভার ডোজে,হাই এন্টিবায়োটক,মালটি এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে এতে কিডনি নস্ট হবার পাশাপাশি ধকল পড়ে।
খাবার পাত্র ক্রপ বরাবর আর পানির পাত্র চোখ বরাবর দিতে হবে এতে খাবার ও পানিতে জীবাণূ পড়বে ফলে রোগও হবে না।পাত্রের নিচে দেয়ার জন্য ১ম সপ্তা কাঠ,পরে ইট দিয়ে বা স্ট্যান্ড দিয়ে উচু করে বানাতে হবে যেখানে পাত্র রাখা যায়।
হার্ভাল প্রডাক্ট ব্যবহার করতে হবে
রসুন,আদা,কালিজিরা,শাক পাতা(লাল শাক,পুইশাক,ডাটা শাক,বাধাকপি,সজিনা পাতা) হলুদ,নিম পাতা,পেপে পাতা ,পেপে,কাচা মরিচ,লেবু খাঈয়ানো যেতে পারে।
ফার্মে মুরগি ভাল রাখার ৪টি শর্ত।
১।সেড ঠিক মত করা(ফ্লোরের উচ্চতা,টিনের বাড়তি অংশ,উচ্চতা,দিক,বেড়া)
২।লিটার ভাল রাখা(তুষ দেয়া,চুষের উচ্চতা ঠিক রাখা)
৩।পর্দা নিয়ম অনুযায়ী করা(নিচ থেকে উপরে তোলা বা পর্দার ২টি অংশ রাখা)
৪.১ম ১৫দিন বাচ্চার সাথে সময় দেয়া।
৫।একজন দক্ষ ডাক্তারের পরামর্শে কাজ করা।
৬।বাড়িতে দেশি মুরগি ,হাস,কবুতর পালন না করা বা অন্য কেউ যাতে না পালে।যদি সম্বব হয় ২০০-৫০০ দূরে ফার্ম করা।
৭।এক সাথে একই বয়সের মুরগি পালন করা।
৮।খাবার ও বাচ্চা ভাল হতে হবে
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৭জুলাই ২০২২