হাঁসের প্লেগ রোগের প্রতিকারের উপায়

212

আমাদের দেশে বেশ আগে থেকেই বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালন করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাঁস মারা যাচ্ছে। হাঁসের এসব রোগের অন্যতম হচ্ছে প্লেগ। এটি হাঁসের একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এ রোগকে ডাক ভাইরাস এন্টারাইটিসও বলা হয়।
১৯২৩ সালে বাউডেট নামে এক বিজ্ঞানী নেদারল্যান্ডে হাঁসের মড়ক হিসেবে চিহ্নিত রোগটি প্রথম আবিষ্কার করেন। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই হাঁসের প্লেগ রোগ দেখা যায়। প্রাকৃতিক নিয়মেই সব বয়সী গৃহপালিত ও বন্যহাঁস, রাজহংসী এই ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল।

আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে, দূষিত খাদ্যদ্রব্য ও পানির সাহায্যে সুস্থ পাখিতে এ রোগের ভাইরাস সংক্রমিত হয়। আমাদের দেশে হাট-বাজারে রুগ্ন হাঁস কেনা-বেচার মাধ্যমে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় এ রোগটি ছড়ায়। আবার কীট-পতঙ্গের মাধ্যমেও এ রোগের জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। তবে ডিমের মাধ্যমে রোগের সংক্রমই হয় না।

প্লেগ রোগের লক্ষণ বোঝার অনেক উপায় আছে। আক্রান্ত হাঁসের ক্ষুধা কমে যায়। কিন্তু বারবার পানি পান করে। চোখ ও নাক দিয়ে তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়। আলো দেখলে ভয় পায়। চোখের ঝিল্লির প্রদাহের কারণে চোখ বন্ধ করে রাখে। ডিম পাড়া হাঁসের ডিম দেয়া কমে যায়। মাথা নিচু করে রাখে।

অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয় চলাফেরায়। ডায়রিয়া হয় আক্রান্ত পাখির। লেজের আশেপাশে লেগে থাকে পাতলা পায়খানা। হঠাৎ করে মৃত্যু হয় এ রোগে আক্রান্ত হাঁসের। ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী বয়স্ক হাঁসেরও মৃত্যু ঘটে এ রোগে। মৃত্যুহার হয়ে থাকে ৫ থেকে ১০০%।

চিকিৎসা হিসেবে রোগাক্রান্ত হাঁসের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটিরিয়ার সংক্রামণ থেকে রক্ষা করার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিক যেমনঃ নরফ্লক্সাসিন, এনরোফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদির যেকোনো একটি দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে।

কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই ভাইরাসজনিত রোগের। তাই হাঁসকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, রোগ যাতে না হয় সেজন্য। তাহলে প্লেগ রোগ থেকে রক্ষা পাবে ফার্মের হাঁস।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২