দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অর্থাৎ যশোর কৃষি জোনের আওতায় চলতি ২০২২-২০২৩ রবি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে সরষে আবাদ। যশোরাঞ্চলে এই সময়ে ১৮ হাজার ৮৩৫ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ কৃষি জোনের আওতায় রয়েছে যশোর,ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা। এসব এলাকায় এসময়ের মধ্যে ৫৪ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, যশোরে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরষে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সেটি প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে চাষ হয়েছে ২৪ হাজার ৮৪৮ হেক্টর জমিতে। এর বাইরে ঝিনাইদহে ৯ হাজার ৭৭৭ হেক্টরের বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ১১২ হেক্টর, মাগুরায় ১৫ হাজার হেক্টরের বিপরীতে ১৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ৯ হাজার ১৫০ হেক্টরের বিপরীতে ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় দুই হাজার ৮০০ হেক্টরের বিপরীতে তিন হাজার ১৩৫ হেক্টর ও মেহেরপুর জেলায় চার হাজার ৩৭০ হেক্টরের বিপরীতে পাঁচ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে সরষে আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, নিকট অতীতের যে কোনো সময় অপেক্ষা চলতি মৌসুমে যশোরাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ রবি ফসলের আবাদ হয়েছে। এসব ফসলের সিংহভাগই জুড়ে আছে সরষে। সরকার ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে রবি ফসলের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয় অন্য ফসলের সঙ্গে সরষে আবাদকারী চাষির সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরষের ভালো ফলন হবে।
অলিয়ার রহমান নামে এক কৃষক বলেন, সরষে আবাদের পাশাপাশি একই মৌসুমে কৃষক আমন ও বোরো আবাদ করে বাড়তি মুনাফা পাচ্ছেন। সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বিভিন্ন সবজির আবাদ করেও তারা লাভবান হচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক চাষিই এখন ধান আবাদের পাশাপাশি সরষে আবাদ করে দ্বিগুণ লাভ করছেন।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ কৃষির জন্য খুবই ইতিবাচক। জমির উর্বরতা ধরে রাখার জন্য শস্য নিবিড়তায় কৃষককে সরিষা আবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
রেকর্ড পরিমাণে সরষে আবাদের ফলে গ্রামীণ মাঠঘাট এখন সরিষার হলুদ ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে যশোরের দিগন্তজোড়া মাঠ। অপরুপ এ সৌন্দর্য্যে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রকৃতি। সরিষার ফুল থেকে মৌমাছি গুণগুণ শব্দে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। হলুদ ফুলের সমারোহ যেন নজর কাড়ছে সাধারন পথচারীদেরও।