থোকায় থোকায় হলদেটে কমলা আর মালটা। সঙ্গে বস্তাবন্দি আদা চাষ, সদ্য রোপণ করা ড্রাগন আর শরীর আবৃত করা পেঁপে গাছ। একটি সমন্বিত বাগান। চোখ জুড়ানো এমন কমলান বাগান। চার বছর বয়সী ৪ একরের বাগান থেকে এ বছর খরচ বাদে লাভ হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। এ সফল উদ্যোক্তা চেষ্টা ও একাগ্রতায় ঘুড়িয়েছেন ভাগ্যের চাকা। লিজ নেয়া জমিতে দার্জিলিং ও চায়না কমলা চাষ করে এখন চড়ছেন দামি গাড়িতে। চোখে মুখে এখন শুধুই আনন্দ আর নতুন উদ্যোক্তা তৈরির স্বপ্ন। বলছিলাম লালমনিরহাট সদরের হাড়িভাঙা গ্রামে একরামুলের কমলা বাগানের কথা।
একরামুল একসময় নার্সারি ব্যবসা করতেন। তিনি ইউটিউব দেখে কমলা চাষে ঝুঁকে পড়েন। পাশের জেলা কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে কমলার বাগান করেন। আশানুরূপ ফল না হওয়ায় লালমনিরহাটে শুরু করেছিলেন কমলা চাষ। সেই সফলপ্রাপ্তির সুবাদে চাষ শুরু করেছেন রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী জেলায়। উত্তর জনপদের সব জেলায় কমলা চাষের প্রকল্প গ্রহণ করবেন।
তার বাগানে দেখা মেলে ভ্রমণপিপাসুদের, যারা প্রকৃতির কোলঘেঁষে চলে। কেউ কমলা দেখছেন। কেউ ছবি তুলছেন। কেউ বাড়ি ফিরছেন কমলার ব্যাগ হাতে।
বাগানে ঘুরতে আসা নীর আলম বলেন, একরামুলের এমন বাগান দেখে চোখে বিশ্বাস হচ্ছে না! এমন কমলা বাগান আমাদের লালমনিরহাটে হতে পারে! আমরা দেখছি। এলাকার অন্যরাও কমলা বাগান করতে চাচ্ছেন।
শুরু থেকে বাগান দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৪ বছর আগে বাগান শুরুর দিন থেকে আছি। এবার ফল পাওয়ায় খুব খুশি লাগছে। মানুষ আসছে, দেখছে, খাচ্ছে, কিনছেন। এসব দেখে আমি খুবই আনন্দিত।
বাগান মালিক একরামুল হক বলেন, ২০১৬ সালে কমলা চাষ করেছিলাম নিজ জেলা কুড়িগ্রামে। ৫০ শতাংশ বাগানে। খেয়ে বেশ ভালো লেগেছিল। তারপর লালমনিরহাটে ১৮ সালের দিকে শুরু করি। ২০২১ সালে কিছু ফল আসে। আমার বাড়ির কমলার চেয়েও এটা ভালো। এ বছর অনেক ফল এসেছে। লাভের পরিমাণও অনেক হয়েছে। এখানকার মাটি অনেক ভালো।
কৃষি দপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা বলেন, আমরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেব। যাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়।