ধর্মপাশায় আগাম জাতের বোরো ধান কাটা শুরু

418

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে আগাম জাতের বোরো ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। ধানের আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষক-কিষানির চোখে-মুখে দেখা দিয়েছে আনন্দের ঝিলিক। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।

গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের সুখাড় গ্রামে ও মধ্যনগর বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ে রংচী গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কৃষকরা মাঠে পেকে যাওয়া আগাম জাতের সোনালি ধান কাটছেন।

জানা যায়, এবার ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় আগাম জাতের বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশিরভাগ জমির ধানই পাকতে শুরু করেছে। ধান ঘরে তুলতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন কৃষক। এদিকে ব্রি-২৮ ধানে ব্লাস্ট রোগের সংক্রমণ নিয়ে অনেক কৃষকের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে।

টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের রংচী গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া ও রাজাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, চলতি বছরে তিনি প্রায় ১ একর জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান লাগিয়েছেন। ৯০ ও ৪৯ জাতের ধানগুলো আগাম জাতের হওয়ায় বর্তমানে কৃষকরা সেগুলো কাটা শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাজারে স্বর্ণা-৫সহ অন্যান্য সাধারণ জাতের ধান মণপ্রতি ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি না হলে কৃষকের কোনো লাভ থাকবে না। ধানের স্বাভাবিক ফলন ধরে রাখার জন্য প্রতি সপ্তাহে ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৭০০ টাকার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। বাজারে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য না পেলে তাদের পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কৃষকরা যাতে ধানের উপযুক্ত মূল্য পান সে বিষয়ে কৃষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার ৩১ হাজার ১৫২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। চাষকৃত এসব ধানের মধ্যে রয়েছেÑব্রি ধান ২৮, ব্রি ধান ২৯, ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২ এবং হাইব্রিডের মধ্যে জনক রাজ, ছক্কা, তেজগোল্ড, মাইক্রো ১, ইস্পাহানি ৮, রুপালি ৭ ও স্বর্ণা ৩ জাতের ধান। চলতি বছরে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হোসেন আল বান্না বলেন, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার ৩১ হাজার ১৫২ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ আবাদ হয়েছে এবং আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে।