ডিম ও মুরগির যৌক্তিক মূল্য এবং পোলট্রি ফিডের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন প্রান্তিক খামারি ও ডিলাররা। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রান্তিক খামারি ও ডিলারদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ছোট খামারি ও ডিলাররা পোলট্রি শিল্পের বিকাশ ঘটালেও তারা আজ অসহায়। এই খাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ৫০ লাখ প্রান্তিক উদ্যোক্তা গুটিকয়েক ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রান্তিক খামারিদের মুরগি বাজারে এলে এই পোলট্রি পণ্যটির দাম কমে যায়। যার কারণে তাদের উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পোলট্রি ফিড উৎপাদনে ৬০ শতাংশ ভুট্টার প্রয়োজন হয় জানিয়ে তারা আরও বলেন, ২০২১ সালে যেই ভুট্টার দাম ছিল ২৮ টাকা কেজি এবং ৫০ কেজির এক বস্তা পোলট্রি ফিডের দাম ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা, সেই ভুট্টা ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের দোহাই দিয়ে ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে হয় ৪১ টাকা কেজি এবং পোলট্রি ফিডের দাম হয় ৩ হাজার ৭৪০ টাকা। মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম কেজিতে ১৬ টাকা এবং ফিড উৎপাদনের অন্যান্য উৎপাদনের দাম ৪০ শতাংশ কমলেও বাংলাদেশে ফিডের দাম কমেছে বস্তাপ্রতি মাত্র ৭৫ টাকা। বর্তমানে দেশে ৫৯ কেজির পোলট্রি ফিড বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬৫০ টাকা।
তারা আরও অভিযোগ করেন, মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বাচ্চা উৎপাদন করতে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা খরচ হলেও তারা খামারিদের কাছে বিক্রি করেন ৭০ থেকে ৯০ টাকা। আবার পোলট্রি ফিডের উৎপাদন খরচ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা হলেও খামারিদের কাছে বিক্রি করেন ৩ হাজার ৬৫০ টাকা। করপোরেট গ্রুপের এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।
তারা দাবি করেন, করপোরেট গ্রুপগুলো দ্বিগুণ লাভে বাজারে মুরগি বিক্রি করে। বাজার তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তারা তাদের ইচ্ছামতো মুরগির দাম বাড়ায়, কমায়। তাই প্রান্তিক খামারিরা যখন বাজারে মুরগি বিক্রি করতে যায়, তখন তারা ইচ্ছা করে দাম কমিয়ে খামারিদের লোকসানে ফেলে। এভাবে তারা প্রান্তিক খামারিদের স্বাধীনভাবে ব্যবসা থেকে সরিয়ে তাদের সঙ্গে চুক্তিতে যেতে বাধ্য করে। এই বৈষম্য দূর করে বাজারে প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
এ সময় সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, সহসভাপতি বাপ্পি দে এবং বিভিন্ন জেলার প্রান্তিক খামারি ও ডিলাররা উপস্থিত ছিলেন।
