ঝিনাইদহ জেলার খামারিরা কোরবানির বাজার ধরতে এখন পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। চাহিদার চেয়ে প্রায় ৬০ হাজার বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত করছেন ঝিনাইদহের খামারিদের। কোরবানির বাজার ধরতে তাইতো মোটাতাজাকরণে এখন ব্যস্ত তারা। গো-খাদ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে এবার খরচও বেশি। সীমান্তবর্তী এই জেলায় ভারতীয় গরুর আমদানি ঠেকানো না গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন খামারিরা ।
ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া এলাকার খামারি জিনারুল ইসলাম তরুণ জানান, গত ৩ বছর ধরে লালন পালন করছেন ব্রাহামা জাতের দুটি গরু। একেকটি গরুর ওজন ২৫ থেকে ২৭ মণ হবে। যার দাম হাঁকা হচ্ছে ২০ লাখ টাকা করে। এরই মধ্যে একেকটি গরুর মূল্য উঠেছে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আর ১৮ দিন পরেই ঈদুল আজহা, তাই একটু বেশিই যতœ-আত্তি চলছে তাদের পালনকৃত রাজা ও বাদশা নামের গরু ২টির। জেলা শহরের খামারি জিনারুল ইসলাম তরুণের মতো জেলার ৬ উপজেলায় কোরবানির পশু পালনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে খামারিরা। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনাবেচা। তাইতো বাজার ধরতে গরুর বিভিন্ন ধরনের যতেœ ব্যস্ত তারা। প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক খাবার ব্যবহার করে পশু মোটাতাজা করছেন তারা।
খামারিরা জানায়, এ বছর পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। প্রতিদিন গরু প্রতি খরচ হয় ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এছাড়া এ বছর ভাবাচ্ছে প্রচণ্ড তাপদাহ। কারণ এভাবে তাপদাহ চলতে থাকলে বড় বড় গরু স্ট্রোক করতে পারে। তবে ঈদের আগে যদি তাপদাহ স্বাভাবিক হয় তাহলে কিছুটা হলেও আমাদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে। বেশি দামে আমাদের পালনকৃত গরু বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। তাই ঈদের আগে দেশের বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশে কঠোর নজরদারির দাবি জানান তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পশু লালন-পালন ও বাজারজাতকরণের বিষয়ে জেলার সব খামারিকে নানা ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দেয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় ২ লাখ ৪ হাজার ৯২৮টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৬০ হাজার পশু পাঠানো হবে ঢাকার গাবতলী, মাদারীপুর, টেকেরহাট, বরিশাল, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার পশুর হাটে।