যদিও লেয়ার মুরগি অনেক উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে এবং ভালো উৎপাদন অব্যাহত থাকে তথাপি তাপমাত্রার তারতম্য অনেক বেশি উঠানামা করলে তখন উৎপাদন এবং উৎপাদনশীলতায় অনেক প্রভাব ফেলে। লেয়ার মুরগির জন্য আদর্শ তাপমাত্রার রেঞ্জ হলো ডিম উৎপাদনের শুরুতে ২১-২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা একটু বাড়লেও উৎপাদনে তেমন প্রভব পড়ে না। কিন্তু ১২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড নিচে নামলে এবং ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে উঠলে লেয়ারের উৎপাদন এবং বেঁচে থাকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অল্প তাপমাত্রায় লেয়ার মুরগিকে অধিক খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করে এবং ডিমের আকার অনেক বড় হয়। ফলে ডিম উৎপাদন হ্রাস পায় এবং বড় ডিমের কারণে পুলেটে প্রোলাপ্সের পরিমাণ বেড়ে যায় ও দুই কুসুমওয়ালা ডিমের সংখ্যা বেড়ে যায়। অন্যদিকে ডিম পাড়ার শুরুর দিকে উচ্চ তাপমাত্রা ডিমের ওজন বৃদ্ধিকে ধীর করে দেয় এবং খাদ্য গ্রহণ হ্রাস করে। লক্ষণীয় যে, উচ্চ তাপমাত্রা লেয়ার মুরগির ডিম পাড়ার শেষ দিকে খাদ্য গ্রহণ হ্রাস করার কারণে অতিরিক্ত বড় আকারের ডিম উৎপাদনের সংখ্যা কমিয়ে রাখে। উচ্চ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ঘরে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা বাঞ্ছনীয়।
গরমের সময় সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থাপনা হতে পারে দুপুরের সময় যখন অতি উচ্চ তাপমাত্রা থাকে সে সময় খাদ্যপাত্র খালি রাখা, এ সময় খাদ্য খাওয়া থেকে মুরগিকে বিরত রাখলে দেহে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদনের সম্ভাবনা কমে যায়। উল্লেখ্য যে পুলেটের দৈহিক তাপমাত্রা থাকে প্রায় ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং গরমের সময় এটা ১১২ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। দুপুর বেলা খাদ্য পাত্র খালি রাখার অভ্যাসটি পুলেটের ৫-৬ সপ্তাহ বয়স থেকে শুরু করতে হয়। উচ্চ তাপমাত্রার সময় পানিতে ইলেক্ট্রোলাইট এবং ভিটামিন-ই, সি ও ক্যালসিয়াম ব্যবহার করলে গরমের ধকল কমে এবং খোসা পাতলা হওয়া ও ডিম উৎপাদনভ কমে যাওয়া হ্রাস পায়। উচ্চ তাপমাত্রার সময় মিড নাইট ফিডিং বা মধ্যরাত্রিতে মুরগিকে খাওয়ালে তাপমাত্রার ধকল থেকে বাঁচানো যায়। গরমের ধকলে পুলেটের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায় ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, তাই এ সময় নিয়মিত বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগের টাইটার লেভেল চেক করে বুস্টার ভ্যাকসিন দেয়া জরুরি। ‘অঞ্জন মজুমদার’