ডিম-মুরগির বাজার অস্থিরতার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে মনে হচ্ছে, করপোরেটদের করপোরেট অফিস। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অসাধু কিছু কর্মকর্তার জন্য করপোরেট ব্যবসায়ীরা সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।’
গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ‘এক দিন বয়সী মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ করছে সরকার। এতে করপোরেট ব্যবসায়ীরা কন্টাক্ট ফার্মিংয়ে ঝুঁকছে। এরপর তারা আর প্রান্তিক খামারিদের কাছে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করবে না। কন্টাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে তারা শুধু উৎপাদন করবে। এতে করে বাজারে ডিম ও মুরগির সংকট দেখা দেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ‘সরকার শুধু করপোরেট ব্যবসায়ীদের নিয়ে মিটিং করে ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কারণ তাদের উৎপাদন খুব কম। কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের ডিম উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৭৯ পয়সা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কত টাকায় বিক্রি করব, কত পারসেন্ট লাভ করবÑএটা সরকারের বের করে দেয়া উচিত। আমাদের ডিম উৎপাদন খরচ আট টাকায় নামিয়ে আনা সম্ভব, যদি পোলট্রি ফিডের দাম কমানো যায়। কিন্তু পোলট্রি ফিডের উৎপাদন খরচ আমাদের জানানো হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যদি ১০ টাকা ৮০ পয়সা উৎপাদন খরচ হয়, সে ক্ষেত্রে ভোক্তা পর্যায়ে ১৩ টাকায় ডিম বিক্রি করলে সঠিক একটা মূল্য থাকবে। কিন্তু সরকার ১২ টাকা খুচরা মূল্য দিয়েছে। আমরা ১২ টাকাতেই বিক্রি করব কিন্তু সেই ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ কীভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে সরকারকে কাজ করতে হবে। ভোক্তা অধিদপ্তর চাইলে যেভাবে ডিমের দাম কমে যায়, সেভাবে পোলট্রি ফিডের দামও কমে যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও ডিম সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘তেজগাঁও ও কাপ্তানবাজার ডিম ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সবাইকে বলছি, তেজগাঁও ডিম সমিতি ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে না। খামারিরা যে দাম নির্ধারণ করে, আমরা সেই দামে কিনে বাজারজাত করে থাকি। তেজগাঁও বাজারের নামে সারাদেশে মাসিক টাকা দিয়ে যারা এসএমএস সার্ভিস নিচ্ছেন, তারা প্রতারিত হচ্ছেন। যারা এসএমএস করেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। করপোরেট গ্রুপ প্রায়ই বলে বেড়ায়, মধ্যস্বত্বভোগীরা বাজার অস্থিরতা তৈরি করে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। খামারে যদি দাম বাড়ে তবে বাজারেও বাড়বে। খামারে কমলে বাজারে দাম কমবে এটাই স্বাভাবিক। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেনÑবাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক, নোয়াখালীর জাকির হোসেন, গাজীপুরের অনিক সরকার, সাতক্ষীরার তসলিম আলম প্রমুখ।