ইলিশ এখন বাংলাদেশের জন্য কূটনীতির অংশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সীমিত পরিসরে ইলিশ রপ্তানি করায় দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে তা ভূমিকা রাখছে।
‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩’ বাস্তবায়ন উপলক্ষে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী জানান, ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। আর এ থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩৯ কোটি টাকা। আর সরকার চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তিন হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৬০৯ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬২ লাখ মার্কিন ডলার।
রেজাউল করিম বলেন, গত বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের ২২ দিনে প্রায় ৫২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। ফলে গত বছর প্রায় আট লাখ পাঁচ হাজার ৫১৫ কেজি ডিম উৎপাদিত হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশে যুক্ত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষ্টির উল্লেখযোগ্য একটি অংশ জুড়ে রয়েছে ইলিশ মাছ। বিশ্বে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৮০ শতাংশের বেশি বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। দেশে ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, গুণগত মানে সমৃদ্ধ করা, বড় আকারের ইলিশ উৎপাদনÑএর সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রকম নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জাটকা নিধন না করা আর মা ইলিশ সংরক্ষণ।
চলতি বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পালন করা হবে। এটা বাস্তবায়নে অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর সরকার আরও বেশি তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশের ইলিশসমৃদ্ধ ৩৭ জেলার ১৫৫ উপজেলায় এ সময়ের জন্য জেলেদের দেয়া সহায়তা পৌঁছে গেছে। এর আওতায় মোট পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৭টি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি হারে মোট ১৩ হাজার ৮৭২ দশমিক ১৮ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।